চেলসির ম্যাচে ৫০ হাজার আসন ফাঁকা, কেন এই দুরবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন ফিফা

খেলা ডেস্ক
ফুটবল মাঠে জয় আনন্দের, কিন্তু সেই আনন্দ যদি ফাঁকা গ্যালারিতে হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে দর্শকের আগ্রহ কই? ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে ম্যাচ নয়, বরং মাঠের গ্যালারিতে ফাঁকা চেয়ার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় অবস্থিত মার্সিডিস-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। স্টেডিয়ামটির আসনসংখ্যা প্রায় ৭১ হাজার হলেও এদিন উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২২ হাজার ১৩৭ জন দর্শক। মানে প্রায় ৫০ হাজার আসন খালি পড়ে ছিল পুরো ম্যাচ জুড়ে।
চেলসির কোচ এনজো মারেসকা এই অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, পরিবেশটা বেশ অদ্ভুত ছিল। স্টেডিয়াম প্রায় খালি ছিল, তবে আমরা পেশাদার, আমাদের খেলার মনোভাব একই থাকে দর্শক থাকুক বা না থাকুক।
কেন দর্শক এলেন না
বিশ্লেষকদের মতে, কম দর্শক উপস্থিতির অন্যতম কারণ সময় ও টিকিটের মূল্য। ম্যাচটি ছিল স্থানীয় সময় সোমবার দুপুর ৩টায়। এই সময় কর্মব্যস্ত মানুষের মাঠে আসা কঠিন। তাছাড়া, ম্যাচ শুরুর আগে টিকিটের দাম ছিল ৩৭ পাউন্ড (প্রায় ৫ হাজার টাকা)। পরে কমে দাঁড়ায় ২৬ পাউন্ড হলেও দর্শক আগ্রহ দেখাননি।

আরেকটি বড় কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাব বিশ্বকাপ এখনও খুব একটা জনপ্রিয় নয়। অনেকেই মনে করেন, ফুটবল এখানে এখনো বেসবল বা বাস্কেটবলের মতো পেশাদার পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
সাংবাদিক ডোগ রবার্সন বলেন, মানুষ ফুটবল ভালোবাসে, তবে সময়টাই ভুল ছিল। আমি বরং আশ্চর্য হচ্ছি, এত মানুষ এসেছেও কিভাবে।
ফিফার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন
ফিফা এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে নিজ উদ্যোগে, কোনো স্থানীয় আয়োজক কমিটি ছাড়াই। মার্কেটিং প্রচারণাও ছিল খুবই সীমিত। ক্রীড়া সাংবাদিক জনাথন টানেনওয়াল্ড জানান, যুক্তরাষ্ট্রে মানুষকে মাঠে আনতে হলে আগে থেকেই ব্যাপক প্রচার চালাতে হয়। শুধু টিকিট ছেড়ে দিলেই চলবে না।

দুই বছর আগে এই একই মাঠে চেলসি বনাম নিউক্যাসল ম্যাচে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৭০ হাজার দর্শক। তখন সেটি ছিল একটি প্রীতি ম্যাচ। অথচ এখন বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টেও গ্যালারি খালি, সেটি নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।
২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়েও চিন্তা
বিশ্লেষকদের মতে, যদি ক্লাব বিশ্বকাপেই মার্কিন দর্শকদের এমন অনাগ্রহ দেখা যায়, তবে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ নিয়েও ফিফাকে নতুন করে ভাবতে হতে পারে। যদিও অনেকেই মনে করেন, ফাইনাল বা নকআউট পর্বে দর্শক সংখ্যা বাড়বে। তবে তখনও প্রচারণা ও সময় ব্যবস্থাপনাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে।