কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রশ্নে বাজেট বিতর্কে উত্তাপ

সংস্কারের কথা শুধু কথাতেই, বাস্তবে নেই। ঢাকা, ১৬ জুন সরকারের বাজেট ও তথাকথিত সংস্কার পরিকল্পনাকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, “সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে কোথাও তার ছাপ নেই না প্রশাসনে, না পুলিশের মধ্যে, না শিক্ষা ব্যবস্থায়। তাহলে এই সংস্কারটা আসলে কার জন্য?
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
মান্না বলেন, নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট একটি বৈষম্যমূলক কাঠামো বহন করছে। এই বাজেটে গরিব মানুষের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বরং পুরো বাজেটটাই যেন বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন হয়ে উঠেছে, বলেন তিনি।
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন যেখানে কোনো সংস্কার কমিটি নেই, কার্যকর পদক্ষেপ নেই, সেখানে বারবার ‘সংস্কার’ শব্দটি ব্যবহার করার অর্থ কী? টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু কোনো বাস্তব কার্যক্রম নেই। তাহলে এটা কি লোক দেখানো সংস্কার? বলেন মান্না।
সম্প্রতি লন্ডনে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, ওই আলোচনায় এমন কোনো কথা হয়েছে কি না, যা বলা যাবে না, সেটাই এখন প্রশ্ন। তবে নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একমত হওয়া ইতিবাচক।
তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক অচলাবস্থার একমাত্র সমাধান হলো নির্বাচন। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যাই হোক, নির্বাচনের বিকল্প নেই। আগে বরফ জমে ছিল, এখন সেটা গলতে শুরু করেছে, বলেন তিনি।
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রসঙ্গেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মান্না। তিনি বলেন, পৃথিবীর যেখানেই যাই, কেউ অর্থ ফেরত দিচ্ছে না। অথচ আমাদের বলা হয় সংস্কার করো, দেশের ভিতর পরিবর্তন আনো। কিন্তু যখন টাকা ফেরত আনার প্রসঙ্গ আসে, তখন কারও সদিচ্ছা দেখা যায় না। ইংল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রীর আচরণও হতাশাজনক।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু ও বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের আবুল বাসার হাওলাদার।