ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করল পাকিস্তান

পাকিস্তান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘটে যাওয়া সঙ্কটপূর্ণ পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব প্রদানের কারণে এই মনোনয়ন দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সরকার তাদের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে শুক্রবার জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের এই বৈঠকের পর থেকেই পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে ট্রাম্পের মনোনয়ন ঘোষণা আসে। ইসলামাবাদ এই বৈঠককে নিজেদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখছে।
স্মরণীয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগাম এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে ২৬ জন নিহত হন। এর উত্তরে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছিল।
সেই সময় ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার মধ্যস্থতায় গত ১১ মে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। এই শান্তি প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে পাকিস্তান সরকার তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছে।
এই মনোনয়নের মাধ্যমে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। তারা মনে করছে, ট্রাম্পের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় ধরনের সংঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে এবং দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খোলা হয়েছে।
তবে, এই মনোনয়ন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। কেউ এটাকে কূটনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, কেউ আবার এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেবার মতো বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে এই ঘটনা বেশ আকর্ষণীয়, কারণ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও শান্তি পরিস্থিতি আমাদের দেশকেও সরাসরি প্রভাবিত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি, যা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
পাকিস্তানের এই মনোনয়ন ভবিষ্যতে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও আন্তর্জাতিক খ্যাতির ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা সময়ই বলবে। তবে একথা স্পষ্ট যে, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির জন্য বিদেশি নেতৃত্বের ভূমিকা এখন থেকে আরও গুরুত্ব পাবে।