
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের পাঠানো দুটি ড্রোন ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। শনিবার সকালে ঘটেছে এই ঘটনা, যা ইসরায়েলি নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একপ্রকার অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রথম ড্রোনটি আঘাত হানে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বেইত শেইন শহরে, যেটি জর্ডান সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। ড্রোনের বিস্ফোরণে একটি দুইতলা আবাসিক ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় জরুরি উদ্ধারকারী দল। তারা জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকা পড়েনি, তবে বাড়িটির জানালা-দরজা ছিটকে পড়ে এবং আশপাশের মাটিতে একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় ড্রোনটি দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি খোলা জায়গায় পতিত হয়। যদিও এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, তবুও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা একে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, ইরান এই হামলায় ‘ওয়ানওয়ে কমব্যাট ড্রোন’ ব্যবহার করেছে, যা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর নিজে থেকেই ধ্বংস হয়। এমন আক্রমণ খুব কম দেখা যায় বলেই জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) আরও জানায়, ইরান এই হামলায় অন্তত ছয়টি ড্রোন ব্যবহার করে। বেশিরভাগই প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে মাঝপথে ধ্বংস করা গেলেও, দুটি ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। গত সপ্তাহে ইসরায়েলের একটি সামরিক অভিযানের জবাবে ইরান এই ড্রোন হামলা চালায় বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানান, ইরানের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই হাজারেরও বেশি ড্রোন ছোড়া হয়েছে, যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা বেশিরভাগ সময় প্রতিহত করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ড্রোন হামলা ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে নতুন মোড় আনছে। এ ধরনের সফল আক্রমণ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার দুর্বলতা এবং ইরানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দুই-ই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।