ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি; খামেনির ‘অস্তিত্ব’ রাখা চলবে না

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনিকে। তার বক্তব্যে স্পষ্টতই এক ধরনের চূড়ান্ত বার্তা উঠে এসেছে খামেনির অস্তিত্ব এখন মেনে নেওয়া যায় না।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবেই এই মন্তব্য
সম্প্রতি ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই হাসপাতালটি রাজধানী তেল আভিভের কাছাকাছি অবস্থিত। হামলার পরদিনই সোকোরা নামের সেই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত ও আহতদের দেখে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এক কঠিন অবস্থানের কথা জানান।
তিনি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি শুধু আমাদের ধ্বংসের কথা বলেন না, বরং সরাসরি বেসামরিক স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দিচ্ছেন। এমন ব্যক্তি মানবতা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
খামেনিকে ‘রাষ্ট্রশত্রু’ হিসেবে আখ্যা
ইসরায়েল কাৎজের মতে, খামেনি আর শুধু ধর্মীয় নেতা নন, তিনি একটি দেশের অস্তিত্ব ধ্বংসে উৎসাহী একজন কৌশলী শত্রু। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এই ধরনের নেতৃত্বের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ। এটি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি।
দীর্ঘদিনের বৈরিতা আরও প্রকট
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে রাজনৈতিক ও কৌশলগত বৈরিতা নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই বৈরিতা সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টাপাল্টিতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য শুধু প্রতিক্রিয়ামূলক নয়, বরং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য অভিযানের একটি রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে
বিশ্লেষকরা বলছেন, একজন দেশের সর্বোচ্চ নেতাকে প্রকাশ্যে ‘অস্তিত্বহীন’ করার ইঙ্গিত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। পশ্চিমা মিত্ররা বিষয়টি কীভাবে নেবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা অথবা সমর্থন, উভয়ই পরবর্তী কূটনৈতিক সমীকরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
মুসলিম বিশ্বের দৃষ্টিকোণ
বাংলাদেশসহ মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর কাছে এই ধরনের বক্তব্য অনেক বেশি সংবেদনশীল। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মুসলিম বিশ্বের একটি অংশের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। ফলে ইসরায়েলের এমন প্রকাশ্য হুমকি অনেক দেশের জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
পরিস্থিতির উত্তপ্ত ভবিষ্যৎ
আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে, এই বাকযুদ্ধ আস্তে আস্তে আরেকটি সরাসরি যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। বিশেষ করে যদি ইসরায়েল খামেনিকে লক্ষ্য করে কোনও প্রতীকী বা বাস্তব অভিযানে যায়, তাহলে পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বিরুদ্ধে চরম ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন, যা শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও বড় ধরনের আলোড়ন তুলতে পারে। এই বক্তব্য একটি নতুন সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।