বিশ্বআন্তর্জাতিকরাজনীতি

ইরানের পক্ষে বিক্ষোভে উত্তাল ইরাক-তুরস্ক-লেবানন, ইসরায়েলবিরোধী স্লোগানে মুখর রাজপথ

ইরানে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে মুসলিমবিশ্বের নানা প্রান্তে। ইরাক, তুরস্ক, লেবানন, ইয়েমেন, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। এসব বিক্ষোভে মূলত শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নিয়ে ইরানের প্রতি সংহতি জানান এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

বাগদাদে উত্তাল ‘সদর সিটি’

ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সদর সিটি যা স্থানীয়ভাবে ‘বিপ্লব নগরী’ হিসেবেও পরিচিত সেখানে বিক্ষোভ হয় বৃহৎ আকারে। এলাকাটির বেশিরভাগ মানুষ শিয়া মুসলিম এবং এটি প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মুক্তাদা আল-সদরের ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত। তার অনুসারীরা রাস্তায় নেমে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। একই সঙ্গে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বসরাতেও সমমনা মানুষেরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

জুমার নামাজের পর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে ইরানের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ
জুমার নামাজের পর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপশহরে ইরানের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ

তুরস্ক ও লেবাননে প্রতিবাদতুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলেও ইরানপন্থী শিয়া মুসলিমরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লোকজন হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। অন্যদিকে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতের শিয়া অধ্যুষিত দক্ষিণ অংশে জুমার নামাজের পর বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হিজবুল্লাহ-সমর্থিত এলাকাগুলোতে এসব সমাবেশে ইরানের প্রতি সংহতি জানানো হয়।

ইয়েমেন ও পাকিস্তানেও সাড়া

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হুতি বিদ্রোহীরা বড় ধরনের মিছিল করে। তারা গাজার জনগণ ও ইরানের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলবিরোধী নানা স্লোগান দেয়। একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে পাকিস্তানের করাচি ও লাহোর শহরে। এসব শহরে ছোট-বড় কয়েকটি বিক্ষোভে শিয়া ধর্মাবলম্বী মানুষজন অংশ নেন। শিশুদেরও এসব মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে।

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ

জাতিসংঘের সামনেও প্রতিবাদযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনেও যুদ্ধবিরোধী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ হয়। ‘ভেটেরানস ফর পিস’ নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা সেখানে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। ঠিক সেই সময়ে জাতিসংঘে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলছিল। বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে বার্তা পরিষ্কার বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভগুলো শুধু ইরানের প্রতি সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং ইসরায়েলের চলমান নীতির বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের একটি সংহত বার্তাও। অনেকের মতে, ধর্মীয় পরিচয় ছাড়াও এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা, যেখানে পশ্চিমা শক্তিগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button