ইরানের পাশে মুসলিম বিশ্বকে চায় তুরস্ক

টানা ৯ দিন ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে ভয়ংকর সংঘাত চলছে ইরানের। এরই মধ্যে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৭০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে দেশটিতে। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর বহু শীর্ষ কমান্ডারও হারিয়েছে তারা। এক কথায় ইরানের কোমর ভেঙে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতকিছুর মধ্যেও এখন পর্যন্ত শক্তভাবেই দাঁড়িয়ে আছে ইরান; জবাব দিয়ে যাচ্ছে শত্রুপক্ষের চোখে চোখ রেখে। এরই মধ্যে ইসরায়েলকে নিরঙ্কুশ সমর্থন জানিয়ে ইরানে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে তাদের সামরিক ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এতে দেশটির বহু শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তবে এত বড় ক্ষয়ক্ষতির মাঝেও ইরান এখনও আত্মসমর্পণ করেনি। বরং ইসরায়েলের প্রতিটি হামলার জবাব কঠোরভাবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইরানকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রও সামরিকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের কাছে আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক। সম্প্রতি ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ৫১তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ইসরায়েলের এই আগ্রাসন শুধু ইরান নয়, গোটা অঞ্চলকেই অনিরাপদ করে তুলছে। মুসলিম দেশগুলোর এখন ইরানের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
তিনি আরও বলেন, গাজা, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো এবার ইরানও ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ না হলে আমরা কেউ নিরাপদ থাকব না।
সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আরও কঠোর ভাষায় ইসরায়েলকে দায়ী করে বলেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে পারমাণবিক আলোচনা চলছিল, সেটিকে বানচাল করতেই ইসরায়েল পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারই এখন এই অঞ্চলে শান্তির সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি শুধু ইরান-ইসরায়েলের দ্বন্দ্ব নয়, বরং এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা কাঠামোকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
কী হতে পারে সামনে?
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সংঘাত আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ও সমন্বিত অবস্থান এই সংকট মোকাবেলায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।