আন্তর্জাতিক

ইরানে বোমাবর্ষণ চললে আলোচনা বন্ধ’ ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টানাপোড়েন। বিশ্ববাসী এখন লক্ষ্য করছে, দুই পরাশক্তির এই সংঘর্ষে কীভাবে পরিস্থিতি গড়াবে এবং এর প্রভাব কীভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বশান্তিতে প্রভাব ফেলবে। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই উত্তেজনার পেছনের মুল কথা তুলে ধরেছেন।

 জাতীয় ঐক্য ও প্রতিরোধের কথা

খাতিবজাদেহ উল্লেখ করেছেন, ইরান একটি ঐতিহ্যবাহী জাতীয় ঐক্যের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে, যা বিদেশী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তার মতে, এখানে কার সামরিক শক্তি বেশি তা মূল বিষয় নয়, বরং ‘প্রতিরোধের মানসিকতা’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের জনগণ এবং নেতৃত্ব একত্রে এই সংকট মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

কূটনীতি বনাম যুদ্ধের বিকল্প

উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, ইরান মূলত শান্তিপূর্ণ সমাধান ও কূটনীতি চাই, তবে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ্রাসন চালিয়ে যায়, তাহলে আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে না। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বোমাবর্ষণ বন্ধ হবে না, ততক্ষণ সরাসরি সংলাপে বসা কঠিন।

তবে আগ্রাসন বন্ধ হলে, কূটনীতি প্রথম পছন্দ হিসেবে সামনে আসবে। এটি ইরানের মুলমন্ত্র যে, শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পথ খোঁজা গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের অবস্থান

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে খাতিবজাদেহ বলেন, যদিও বর্তমান উত্তেজনা ‘আমেরিকার যুদ্ধ’ নয়, তবুও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্মরণ করা হবে এমন একজন নেতা হিসেবে, যিনি একটি যুদ্ধে যুক্ত হয়েছিলেন, যদিও সেটা তার নিজস্ব যুদ্ধ ছিল না।

বাংলাদেশি পাঠকের জন্য ভাবনার খোরাক

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যখন এই সংবাদ পড়বেন, তখন বুঝতে হবে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সরাসরি শক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি কূটনীতির ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের মতো দেশগুলো, যাদের অস্ত্রশক্তি সীমিত, তারা জাতীয় ঐক্য ও প্রতিরোধের মনোভাব দ্বারা নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষা করে থাকে।

এমন পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক আলোচনার বিকল্প খুঁজে পাওয়া গেলে বিশ্ব শান্তির পথ সুগম হবে। অন্যদিকে, কোনো আগ্রাসন বা যুদ্ধ শুরু হলে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।

বর্তমান ইরান-আমেরিকা টানাপোড়েন শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি পুরো বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ইরানের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তারা যুদ্ধ চাইছে না, তবে আত্মরক্ষায় প্রস্তুত। বিশ্ব নেতাদের উচিত দ্রুত কূটনীতির পথ অনুসরণ করে উত্তেজনা কমানো এবং সংঘাত এড়ানো।

এই বিষয়টি বাংলাদেশের মতো শান্তিপ্রিয় দেশগুলোর জন্যও শিক্ষণীয়, যেখানে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা জাতীয় অগ্রাধিকার। আমরা সবাই আশা করি, ভবিষ্যতে এই ধরনের সংঘাতের বদলে কূটনীতি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button