হরমুজ প্রণালী নিয়ে উত্তেজনা, ইরানকে থামাতে চীনের দারস্থ যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জলপথ হরমুজ প্রণালী। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল এই পথ দিয়ে পার হয়। এই মুহূর্তে সেই নৌপথ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান।‘
ইতোমধ্যে দেশটির পার্লামেন্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এখন শুধু অপেক্ষা ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে জানা গেছে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে খুব শিগগিরই সম্ভবত রবিবার রাতেই।
বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল সরবরাহ হয় এই হরমুজ প্রণালী দিয়ে। ফলে ইরান যদি সত্যিই এই পথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় সারা বিশ্বের জ্বালানি নিরাপত্তার ওপর বড় ধাক্কা হবে।
এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনা। সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রেক্ষিতে ইরান এমন একটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে, সেটি হবে তাদের নিজের অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। আমরা এর মোকাবিলার প্রস্তুতি রেখেছি, তবে এটির প্রভাব অন্যান্য দেশগুলোর ওপর আরও বেশি পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, চীনকে এই বিষয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ, চীন নিজেও জ্বালানি আমদানির জন্য এই নৌপথের ওপর নির্ভরশীল।
এই মুহূর্তে যদিও সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত হয়নি, তবে ইরানের একাধিক সামরিক ও রাজনৈতিক নেতার ভাষ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে এই প্রণালী বন্ধ করা হবে এমন প্রস্তুতি রয়েছে।
বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে তেলের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবহন খরচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এখন আন্তর্জাতিক মহল নজর রেখেছে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের দিকে। প্রণালীটি খোলা থাকবে, নাকি বন্ধ হবে এই সিদ্ধান্তে নির্ভর করছে কোটি কোটি মানুষের জীবনের স্বাভাবিকতা।