শিক্ষা

ভাষণ কাকে বলে? ভাষণ দেওয়ার নিয়ম

ভাষণ কাকে বলে: বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে ভাষণ দেয়া হয়ে থাকে। তবে ভাষণ দেয়ার ক্ষেত্রে ভাষণ দেয়ার নিয়ম এবং ভাষণ কাকে বলে এই বিষয়টিকে লক্ষ্য রাখার জরুরী। এজন্য উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা ভাষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে নিয়মসমূহ জানা জানাচ্ছি। 

বিভিন্ন অনুষ্ঠান অথবা আলোচনার বিষয়ে বিভিন্নভাবে প্রধান অতিথি অথবা অতিথি হিসেবে যাদেরকে আহবান বা দাওয়াত করা হয়ে থাকে তাদের কিছু বক্তব্য প্রদান করতে হয়। 

ফলে এই দিক থেকে লক্ষ রেখে ভাষণ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য অথবা ভাসন কাকে বলে ভাষণ দেয়ার নিয়ম এ বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন। নিয়মসমূহে যথাযথভাবে বিশ্লেষণ অথবা জানার মাধ্যমে একটি ভাষণকে আকর্ষণীয় ও মনমুগ্ধকর করে গড়ে তোলা যায়। 

বক্তব্য কী

বক্তব্য হলো বলবার যোগ্য বা কথনীয় কথা সমূহ। এছাড়াও অন্যভাবে বলা যায় যে বক্তব্য হলো আলোচনার বিষয় অথবা প্রস্তাব। যা কোন একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে কোন একটি আনুষ্ঠানিক সবাই পেশ করা হয়। অর্থাৎ বক্তব্য  হলো আলোচনা বিষয়ক বা ও কোন বিশেষ বাণী বা উক্তিসমূহ। 

ভাষণ কাকে বলে

কোন বক্তা যদি কোন অনুষ্ঠানে অথবা সমাবেশে যা বলেন অর্থাৎ বেশ করে থাকে সাধারণভাবে ওই বক্তব্যকে ভাষণ বলা হয়। এছাড়াও বাঘ শিল্প বা বাচনের একটি অন্যতম বিষয় হলো ভাষণ। 

কোন একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে অথবা জনসমাবেশে আয়োজিত জনগণকে সম্বোধন করে অনুষ্ঠানের যে বক্তব্য প্রকাশ করেন তাকে ভাষণ বলে।

ভাষণ যার সাধারণত পূর্ব নির্ধারিত হয়। কোন একটি অনুষ্ঠান বা সহ সমাবেশকে নির্দিষ্ট করে বা উল্লেখ করে ওই অনুষ্ঠানের জন্য পূর্ব নির্ধারিত কোন একটি ভাষণ তৈরি করে, তা পেশ করাকে ভাষণ বলে। 

ভাষণ লেখার নিয়ম

ভাষণ লেখার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিশেষ অংশ লক্ষ্য করা যায়। এবং এই অংশগুলোর উপর ভিত্তি করে ভাষণ লিখা হয়। 

নিচে ভাষন লিখার নিয়ম আলোচনা করা হলো :-

১. সম্ভাষণ বা সম্বোধন: 

ভাষণ লেখার শুরুতে অথবা সূচনাতে প্রধান অতিথি সভাপতি শ্রদ্ধাভাজন অতিথি উপস্থিত ভদ্রমহোদয় উপস্থিত ভদ্রমণ্ডলী ইত্যাদি উল্লেখ করতে হয়। 

এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধান শিক্ষক মাননীয় অধ্যক্ষ মাননীয় শিক্ষক বৃন্দ এবং অতিথি ভাইবোন ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রথমেই উল্লেখ করতে হয়। ফলে এতে উপস্থিত সবাইকে আকৃষ্ট করার জন্য বক্তা আন্তরিকভাবে সম্ভাষণ করে থাকে। 

২. প্রস্তাবনা বা বিষয় পরিচিতি :

কোন একটি আলোচনা সবার ক্ষেত্রে আলোচনায় কি কি বক্তব্য অথবা সম্ভাষণ নিয়ে কথা বলা হবে মূলত মূল কথা হিসেবে প্রস্তুতিমূলক প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবনা করে থাকেন। 

৩. মূলবক্তব্য : 

বিষয়টিকে প্রস্তাবনা করার পরে মূল বিষয় নিয়ে কথা করা হয়। এক্ষেত্রে মূল বিষয় নিয়ে খুব অল্প এর মধ্যে বিষয়টিকে সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে। কেননা দীর্ঘ সময় ধরে কোন একটি ভাষণ দেয়া হলে সেটি শ্রোতাদের কাছে পছন্দের বিষয় হয় না। 

৪. সারাংশ:

মূল বক্তব্য শেষ হয়ে গেলে বক্তা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে বা কথা বলেছে তা স্রোতা বর্গের কাছে মূল বক্তব্যে অল্প কথায় সহজভাবে তুলে ধরবে। 

৫. উপসংহার : 

ভাষণের শেষ পর্যায়ে বক্তা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন তার বিষয়ে কোনো কাজের কথা থাকলে বলতে পারেন।ছাড়াও যদি কোন আবেদন থাকে তা উল্লেখ করতে পারেন। 

একটি ভাষণের বিষয় এবং কথার মাধ্যমে যেমন ভাষণটিকে উল্লেখযোগ্য করা যায় ঠিক তেমনি ভালোভাবে উপস্থাপন করার কৌশল অঙ্গভঙ্গি অথবা চমৎকার উচ্চারণের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব প্রদান প্রয়োগ করে ভাষণকে শিল্পে পরিণত করা যেতে পারে।তাই চমৎকার ভাবে ভাষণ দেয়া বা প্রদান করা অনুসরণযোগ্য বিষয়। 

ভাষণ কাকে বলে ভাষণ দেওয়ার নিয়ম
ভাষণ কাকে বলে ভাষণ দেওয়ার নিয়ম

কোন ধরনের মানুষ প্রায়ই বক্তৃতা দেয়

সাধারণভাবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ বেশি হারে বক্তৃতা দেয়। এরমধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য ব্যক্তিগণ, রাষ্ট্রপতি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ইত্যাদি ব্যক্তিগণ। 

কেননা বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে অথবা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উচ্চপদ কর্মকর্তাদের অথবা ব্যক্তিবর্গকে আলোচনার বিষয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদেরকে বিভিন্ন বক্তব্য পেশ করতে হয়। 

এছাড়াও জাতীয় সংসদ আসনে অধিষ্ঠিত বিভিন্ন ব্যক্তিগণকে প্রয়োজন অনুসারে বক্তব্য পেশ করতে হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন ক্ষেত্র বিশেষ বা অনুষ্ঠান ভিত্তিক বিভিন্ন আলোচনা করার বিষয়ভিত্তিকভাবে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, রাষ্ট্রপতি, মন্তি পরিষদের বিভিন্ন ব্যক্তিগণ, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ আসনের বিভিন্ন ব্যক্তিগণ প্রায়ই বক্তৃতা দেন। 

সংক্ষিপ্ত বক্তব্য কি

যে বক্তব্যে অল্প আলোচনার মাধ্যমে মূল বিষয়টিকে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করা যায় তাকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য বলে। 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরকম হয় যে কোন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ক্ষেত্রে অথবা বক্তব্য প্রদান করার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে বক্তব্যটি কে ফুটিয়ে তোলা যায়। 

তবে ওই একই বক্তব্যর মূল বিষয়ের উপর লক্ষ্য রেখে মূল বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে অল্প কথায় কোন একটি বক্তব্যকে সকলের বোধগম্য  করে গড়ে তোলার অথবা বক্তব্য প্রদান করার প্রক্রিয়াকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য বলে। 

আরো পড়ুন: ভাষা কাকে বলে

বলতো সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হল এমন এক প্রকার বক্তব্য যা অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়।পাশাপাশি মূল বিষয়টি কেউ উল্লেখ রাখতে হয়। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে ভাষণ কাকে বলে ভাষণ দেওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি। 

আশা করি ভাষণ সম্পর্কে আপনার যে সকল তথ্য বা মতামত জানার ছিল তা আমাদের পোস্টের মাধ্যমে যথাযথভাবে জানতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button