ইসলামিকশিক্ষা

মদিনা সনদের ধারা কয়টি

মদিনা সনদের ধারা কয়টি: ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য মক্কা ও মদিনা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মদিনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাদিস অথবা পাঠকের দ্বারা বিভিন্ন তথ্য জানার ক্ষেত্রে মদিনা সনদ কে জানা খুবই জরুরী। 

অনেকে মদিনা সনদ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাই। তাই আজকের আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে মদিনা সনদের ধারা কয়টি এ সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরছি। 

৬৬২ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম লিখিতভাবে যে আইন প্রণয়ন অথবা সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে মদিনাতে শান্তি প্রণয়ন করার উদ্দেশ্যে সনদ প্রদান করেছিলেন তা হল মদিনা সনদ। 

ছাড়ো মদিনা সনদের আরও বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। সনদের অনেকগুলো ধারা রয়েছে যে ধারাগুলো মদিনাকে একটি শান্তিপূর্ণ মদীনা হিসেবে রূপ দিয়েছে। তাই মদিনার সনদ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন এবং মদিনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে তার সম্পর্কে অবগত হওয়ার জরুরী। 

মদিনা সনদের মূল ধারণা কি

মদিনায় মানুষজন  বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের কলহে লিপ্ত থাকতো। এমনকি তাদের দুইটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি এবং ভাতৃত্ব স্থাপন করার উদ্দেশ্যে মদিনায় বসবাসকারী সকল বুদ্ধের মানুষের মধ্যে সুশাসন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তৈরি কৃত  ধারাটি হল মদিনা সনদ। 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪৭ টি ধারার মাধ্যমে মদিনা সনদের মূল ধারণা সকলের সামনে তুলে ধরেন। 

সংবিধানের মাধ্যমে প্রণয়নকৃত মোট 47 টি ধারা নিয়ে তৈরি সকলের কাছে মূলত ইতিহাসে মদিনার সনদ নামে পরিচিত। এবং এটি ইতিহাসের পৃথিবীর প্রথম লিখিত একটি সংবিধান।

মদিনার সংবিধানের তাৎপর্য কি

মদিনার সংবিধানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব ও অপরিসীম। বিভিন্ন  ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অথবা যে কাজগুলো মহান আল্লাহতালা কর্তৃক নিষিদ্ধ ওই সকল কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে পারবে। 

মদিনা সনদের মোট ৪৭ টি ধারার মধ্যে প্রতিটি ধারাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং যার মাধ্যমে প্রতিটি নিয়ম কি আলাদা আলাদা ভাবে উল্লেখ করে তুলে ধরা হয়েছে। 

মদিনা সনদের বিভিন্ন প্রজাতির ভার সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করত তবে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় আচরণ অনুষ্ঠানের মত দেখা দেওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বা বিবাদের তৈরি হতো। 

ঝগড়া বিবাদ বা এই ধরনের অশান্তিমূলক কর্মকাণ্ডকে মানাবে সাল্লাম মদিনা মদিনা সনদ বাম মদিনা ৪৭ প্রদান করার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে মদিনার লোকজনদেরকে বসবাস করার সুযোগ করে দিয়েছেন। 

ঈসা আঃ এর মাধ্যমে অর্থাৎ ৪৭ টি ধারা প্রদানের মাধ্যমে যে কোন ক্ষেত্রে মানুষের যে কোন সিদ্ধান্ত অথবা সমস্যা অথবা যা হতে পারে ওই সকল সমস্যার সম্মুখে বিশ্লেষণার মাধ্যমে তুলে ধরে শান্তিপূর্ণ একটি মদিনা তৈরীর আহ্বান দিয়েছেন। 

আরো কোন কোন কাজগুলো ভালো অথবা খারাপ এবং প্রত্যেকের সম্প্রদায়ের মতাদর্শ অনুযায়ী সুন্দরভাবে জীবন গঠনের এবং সকল প্রকারের অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। 

বিভিন্ন ধরনের ধর্মে যারা রয়েছে অর্থাৎ ভিন্ন ধর্ম তাদের প্রতিটি ধর্মকে মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ধর্মে নিজস্বভাবে আলাদা আলাদা ভাবে উদযাপন করার জন্য বলেছেন। 

পরিশেষে প্রধান প্রধানের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ একটি মদিনা তৈরি করা এবং তার নতুনভাবে বিশেষায়িত করেছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম। 

মদিনা সনদের ধারা কয়টি

শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মদিনা সনদে যে ধারাগুলো প্রদান করা হয়েছে সেখানে মোট ধারার সংখ্যা হল ৪৭ টি। ইবনে হিশামের মতে,, 

  • মদিনা সনদীর ধারা রয়েছে  ৫৩টি ।

মদিনা সনদ কি

৬৬২ খ্রিস্টাব্দে হিজরী সালে পহেলা হিজরীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম শান্তি স্থাপনের জন্য মদিনায় যে একটি সংবিধান প্রণয়ন করেছেন তা হল মদিনা সনদ। 

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কোলে লিপ্ত থাকায় কলহ থেকে বিরত রাখার জন্য এবং সকলের মধ্যে শান্তি স্থাপন করার উদ্দেশ্যে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম প্রথম প্রাথমিকভাবে লিখিতভাবে একটি সংবিধান প্রদান করেন যা হলো মদিনা সনদ। 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম মক্কা থেকে যখন মদিনায় হিজরত গমন করেন তখন হিজরতে গমনের পর ইসলামে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এটি তৈরি করেছেন। 

মদিনা সনদের ধারা কয়টি

মদিনা সনদের ধারা কয়টি

মদিনা সনদের ধারা

প্রধান বা শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে যে সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে তা হলো মদিনা সনদ। সকল মদিনা সনদের সকল দিক বিবেচনায় সর্বোৎকৃষ্ট ভাবে মোট 47 টি সনদ প্রদান করা হয়েছে। 

সনদ গুলো প্রমাণ করার মাধ্যমে মদিনা বাসিকে একটি শান্তিপূর্ণ এবং অরাজনৈতিক কাজ থেকে মুক্ত এনে অপরাধমূলক কাজে শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ধারাগুলো প্রণয়ন করেছেন। 

মূলত মদিনা সনদের ৪৭ টি ধারা প্রদান করে সনদের প্রতিটি  সমস্যার সমাধানের আলাদা আলাদা কর্তৃক সুনির্দিষ্ট ও ইসলামিক মোতাবেক ধারা গুলো তুলে ধরেছেন। 

মদিনা সনদের ধারা কয়টি ও কী কী

মদিনায় শান্তির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম কর্তৃ যে মদিনা সনদের ধারা প্রমাণ করা হয়েছে তার সংখ্যা হল 47 টি। এর মধ্যে কিছু ধারা তুলে ধরা হলো 

১. মদিনা সনদে যারা স্বাক্ষর করেছেন যেমন ইহুদি খ্রিষ্টান পৌত্তলিক ও মুসলমান তারা সকলেই সম্প্রদায়কে সমানভাবে নাগরিক অধিকার হিসেবে ভোগ করবে। 

২. সেখানে সকলের পূর্ণভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। এমন কি কেউ কারো ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। 

৩. সনদটিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম সভাপতি হিসেবে থাকবেন এবং বিচারালয়ে সব সময় সর্বোচ্চ কর্তা হবেন। 

৪. যুদ্ধের ক্ষেত্রে ব্যায় ভার সকল গোত্রের লোকজন সমানভাবে বহন করবে। 

৫. যদি কোন ক্ষুদ্র বহির শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় বা আক্রমণ করে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সমবেত প্রচেষ্টায় তা প্রতিরোধ করবে সকলে মিলে। 

৬. কোন ব্যক্তি মদিনা বাশির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কাজই অথবা কুরাইশদের সাথে গোপনে আঁতাত এরকম কোন কাজে লিপ্ত হতে পারবেনা। 

৭. সকলের সমবেতভাবে দুর্বল এবং অসহায়দেরকে সাহায্য ও রক্ষা করবে। 

৮. ইহুদিদের যে সকল মিত্ররা রয়েছে তারা নাগরিক অধিকার এবং সমানভাবে স্বাধীনতা ভোগ করবে। 

৯. যদি কোন ব্যক্তি অপরাধে হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সকল পাপী বা অপরাধীকে ঘৃণার চোখে দেখা হবে এবং শাস্তি ভোগ করতে হবে। 

১০. যদি কোন সম্প্রদায় কোন অপরাধ করে তাহলে সে ক্ষেত্রে স্বাক্ষরকৃত সম্প্রদায় তাদের অপরাধকে ব্যক্তিগত অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করবে সে ক্ষেত্রে অন্য কোন পুত্রকে দায়ী করা যাবে না। 

১১. পড়তে গোত্রের লোকজন তাদের গোত্র কর্তৃপক্ষ হতে নিজেদের অধিকার বা প্রাপ্য অংশটুকু পাবে। 

১২. একজন স্ত্রীলোক তার নিজেদের গোত্রের অনুমতি ছাড়া অন্যান্য যে ভূত রয়েছে তাদের কাছে আশ্রয় দিতে পারবে না।

১৩. মুসলমান অথবা ইহুদী যে শত্রুপক্ষ হয়েছে তাদের কখনো কুরাইশদের কেউ আশ্রয় দিবে না। 

১৪. সনদের শর্তকে ভঙ্গ করে তাহলে তার উপর অভিশাপ্রাপ্ত অথবা আল্লাহর গজব বর্ষিত হবে। 

১৫. স্বাক্ষরকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যদি নিজেদের মধ্যে কোন বিরোধ  বা মতামত ঐক্য সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে মহানবী হযরত ফয়সালা করে দেবেন। 

১৬. মদিনা বাসি লোকজন কেউ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ অংশগ্রহণ করতে পারবে না যদি মনে সালাম অনুমতি না দেয়। 

উল্লেখিত ধারাগুলো হলো মদিনা সনদের মাত্র ১৬  টি ধারা তবে মদিনা সনদে মোট ৪৭ টি ধারা বিদ্যমান। 

আরো পড়ুন: হজ্জ কাকে বলে

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অন্যতম ও ম্যাগনেটিক যে সকল ধারা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম লিখিত সনদ হিসেবে বা  পরিপূর্ণ সনদের আসনে রয়েছে মদিনা সনদের ধারাগুলো। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে মদিনা সনদের যে ৪৭ টি ধারা রয়েছে এবং মদিনা সনদে ধারা কয়টি এ সম্পর্কে সকল তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আপনি মদিনা সনদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button