ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন ট্রাম্প: সিবিএস জানাচ্ছে, যুদ্ধ যেন কেবল সময়ের ব্যাপার

মধ্যপ্রাচ্য আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সামরিক হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছেন এমন খবর ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তিনি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি, তবে ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পরিস্থিতি দ্রুত কোনো চরম পরিণতির দিকে এগোচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি যুদ্ধ শুরু করতে চান না। তিনি চান, ইরান যেন তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। বিশেষ করে গোপন ফর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটি ট্রাম্পের লক্ষ্যবস্তুতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এই অবস্থায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘ইরানি জাতি কখনোই মাথা নত করবে না। মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের খেসারত দিতে হবে।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ছিল সংক্ষিপ্ত ‘শুভকামনা রইল।’ তবে ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে তিনি কিছু প্রকাশ করতে চাননি।
এদিকে ইসরায়েল ইতোমধ্যেই ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই হামলার জবাবে ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। যদিও ইসরায়েল দাবি করেছে, এতে তাদের বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় জানান, তার দেশের সেনাবাহিনী ‘ধাপে ধাপে’ ইরানের হুমকি মোকাবিলা করছে। তিনি বলেন, “আমরা তেহরানের আকাশে প্রবেশ করেছি এবং শাসকদের প্রতীক, পারমাণবিক কেন্দ্র, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি সবকিছুই আমাদের নিশানায়।”
এর মধ্যেই দেখা গেছে, লাখ লাখ ইরানি রাজধানী তেহরান ছেড়ে সড়কে বেরিয়ে পড়েছে। শহরের মানুষজন আশঙ্কায় ভুগছে একটি বড় হামলা যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই প্রতিরক্ষা বাহিনী হামলা চালাতে প্রস্তুত। বর্তমানে উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। ইউএসএস নিমিৎস ও ইউএসএস কার্ল ভিনসনের মতো শক্তিশালী নৌযানগুলো সেখানে অবস্থান করছে।
একইসঙ্গে ওয়াশিংটনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর। আলোচনার মূল বিষয় ইরান সংকট। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য হামলার জন্য ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটিগুলোর ব্যবহার নিয়েও ভাবছে।
এই পুরো পরিস্থিতির মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্রের জেরুজালেম দূতাবাস মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। তবে এই সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা কখন কার্যকর হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি ট্রাম্প ইরানে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে সেটি শুধু দুই দেশের নয়, বরং গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।