
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনার ঢেউ। সম্প্রতি ইরানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনার পর, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে খামেনি বলেন, “ইরান কখনো কারও চাপের কাছে মাথা নত করেনি, করবেও না। যারা ইতিহাস জানেন, তারা জানেন ইরানিদের হুমকি দিয়ে দমন করা যায় না।”
এই বক্তব্য এসেছে এমন সময়, যখন মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে খামেনি কোথায় অবস্থান করছেন, তবে এখনই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা নেই।
খামেনি এসব মন্তব্যকে “উস্কানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, “যদি আমেরিকা ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দেয়, তবে তারা এমন ক্ষতির সম্মুখীন হবে, যা তারা কখনো কাটিয়ে উঠতে পারবে না।”
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ইরানের টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টার নামক দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই দুটি কেন্দ্র আগে আইএইএর নজরদারিতে ছিল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অভিযানে অংশ নেয় ৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান। তাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কার্যক্রম এবং অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলো।
যদিও ইরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব হামলার প্রতিক্রিয়া জানায়নি, খামেনির বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, দেশটি নতুন করে আরেকটি সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের বিবৃতি এবং পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পথকে আরও কঠিন করে তুলছে। আর এ ধরনের সংঘাত দীর্ঘমেয়াদে পুরো অঞ্চলসহ বৈশ্বিক রাজনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।