সিলেটে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত

সিলেট, ১৮ জুন সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা ও জকিগঞ্জে একদিনেই দুটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। প্রাণ হারিয়েছেন এক নারী, তাঁর শিশু সন্তান এবং এক অটোরিকশাচালক। আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
দক্ষিণ সুরমায় গাড়ি খাদে, মায়ের পর হাসপাতালে ছেলেও মৃত্যুবরণ
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানার শ্রীরামপুর এলাকায় একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তাঘাটের পাশে গভীর খাদে পড়ে যায়। গাড়িটিতে ছিলেন সিলাম আকিলপুর এলাকার বাসিন্দা জুনেদ আহমদের পরিবার।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান তাঁর স্ত্রী, ঝর্ণা বেগম (৩৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বামী ও তাঁদের ১১ বছরের ছেলে সিয়াম আহমদকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছুক্ষণ পর শিশুটিও মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, গাড়িটি উচ্চগতিতে চলছিল এবং হঠাৎ করে মোড় ঘোরাতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মোগলাবাজার থানার পুলিশ দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর পরই গাড়ি উদ্ধারের কাজ শুরু করা হয়েছে।
জকিগঞ্জে বরযাত্রী বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ, নিহত অটোরিকশাচালক
একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের বাজার এলাকায় ঘটে আরেকটি দুর্ঘটনা। বরযাত্রী বহনকারী একটি মাইক্রোবাস ও ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অটোরিকশাচালক শাহাব উদ্দিন (৪৮)। তিনি কসকনকপুর এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন।
জানা গেছে, মাইক্রোবাসটি বাল্লা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। আচমকা মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, “নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
এলাকাজুড়ে শোক
এই দুই ঘটনায় সিলেটের স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, ঝর্ণা বেগম ও তাঁর ছোট ছেলেকে একসঙ্গে হারিয়ে পরিবারটি যেন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, শাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অটোচালক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে কসকনকপুর এলাকার মানুষজন দুঃখ ভারাক্রান্ত।
সড়কে সচেতনতা জরুরি
এই দুর্ঘটনাগুলো আমাদের সামনে আবারও স্পষ্ট করে তুলে ধরে সড়কে নিয়ম না মানা, গতি নিয়ন্ত্রণে না রাখা, কিংবা সামান্য অসতর্কতাও মুহূর্তেই কেড়ে নিতে পারে মূল্যবান প্রাণ।
প্রতি অনুরোধ:
* গতি সীমার মধ্যে রাখুন
* গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল বা অন্য কিছুতে মনোযোগ না দিন
* পথচারী ও ছোট যানবাহনের প্রতি সতর্ক থাকুন