বাংলাদেশবাণিজ্য

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রভাবে জ্বালানি তেলের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, সরকার খুঁজছে বিকল্প উৎস

বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজার আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের আমদানি খাতে। বিশেষ করে জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়ায় তেল আমদানি ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তেজনা যদি আরও বাড়ে এবং ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। কারণ, বিশ্বের মোট পরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের ৩০ শতাংশ এই পথ দিয়ে পরিবহন হয়। এই রুট বন্ধ হয়ে গেলে বৈশ্বিকভাবে তেলের সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটবে, আর তেলের দামও উল্লম্ফন করবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যেই বিকল্প উৎস থেকে তেল আমদানির প্রস্তুতি নিচ্ছে। একাধিক বিকল্প রুট এবং দেশ নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে যাতে সরবরাহ বিঘ্নিত হলেও দেশের জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত না হয়।

এদিকে অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আপাতত আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এখনই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি কেমন যায়, সেটা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে তা শুধু তেলের দামে নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের আমদানি খাত, মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে সরকারকে এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সামলাতে।

দেশের সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে চাপে রয়েছে। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে পরিবহন, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য খাতে তার প্রভাব পড়বে সরাসরি। তাই পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন সাধারণ নাগরিকরাও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button