শিক্ষা

পানি দূষণ কি? পানি দূষণ কাকে বলে? পানি দূষণের কারণ প্রভাব ও প্রতিরোধ

পানি দূষণ কাকে বলে:- মানুষের জীবনের অপর নাম হিসেবে পানিকে বলা হয়। অর্থাৎ পানির অপর নাম জীবন এরকম বলা হয়ে থাকলেও সে পানি মানুষের জীবন বাজানোর তুলনায় ক্ষতিকর প্রভাব হয়ে উঠতে পারে যদি তা হয় দূষিত পানি।

এজন্য দূষিত পানি কাকে বলে দূষিত পান হওয়ার বিভিন্ন কারণ ইত্যাদি সম্পর্কিত যথাযথভাবে জানা প্রয়োজন এবং দূষিত পানি ব্যবহার থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। এজন্য উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে পানি দূষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি। 

পানি দূষণ হলো এমন একটি পক্রিয়া যে প্রক্রিয়ায় মানুষের ব্যবহার করার জন্য উপযোগী পানিকে অনুপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হয়। পানি দূষণ মানুষের দ্বারা ঘটে থাকে তাই সামাজিকভাবে পানি দূষণ মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ডের কারণে ঘটে।

এজন্য মানব সমাজকে পানি দূষণ সম্পর্কে যথাযথভাবে জানতে হবে পাশাপাশি কি কি কারণে পানি দূষণ হতে পারে তা সম্ভব যথেষ্ট জানা প্রয়োজন। 

এভাবে পানি দূষণ সম্পর্কে জানার মাধ্যমে পানি দূষণ এড়ানো যায় এবং পানিকে বিশুদ্ধ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করার মাধ্যমে পানি দূষণ এড়ানো সম্ভব। 

পানি দূষণ কি

বিভিন্ন ধরনের বজ্র পদার্থ নদী নালাখাল ইত্যাদির পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষিত করা বা দূষণ করার প্রক্রিয়া হল পানি দূষণ। অর্থাৎ পানির সাথে বিভিন্ন ক্ষতিকর দ্রব্য মেশানোর পরে পানির যে ক্ষতিকর দূষিত হিসেবে পরিচিত হয় তা হলো পানি  দূষণ। 

ফলে পানি দূষণ মানব সমাজের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর ও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। ফলে মানুষের জীবনে ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি করার জন্য পানি দূষণ অন্যতমভাবে দায়ী। 

পানি দূষণ কাকে বলে

যে প্রক্রিয়ায় নদী-নালা, খাল বিল ইত্যাদি পানিতে বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য বা দূষিত বজ্র মেশানোর ফলে সে পানি মানুষের ব্যবহারের জন্য  অনুপযোগী গড়ে তোলা হয় বা হয়ে পড়ে তখন পানির সেই অবস্থা বা প্রক্রিয়াকে পানি দূষণ বলে। 

মানুষের জীবনের মেয়ের অপর নাম হিসেবে পানিকে বলা হয়। তবে বিষাক্ত বা দূষিত পানি মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। 

মানুষের ব্যবহৃত বিভিন্ন অপর্যাপ্ত বা অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসমূহ পানির সাথে মিশে পানির গুণগত মান কে নষ্ট করে পানি মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী এরকম হয়ে তোলার প্রক্রিয়াকে পানি দূষণ বলে।

পানি দূষণের কারণ প্রভাব ও প্রতিরোধ

➡ পানি দূষণের কারণ :-

👉 অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাটির নিচের স্তর থেকে অতিরিক্ত পানি তুলে নেওয়ার ফলে মাটির ফাঁকে ফাঁকে আর্সেনিকের বাতাসের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বিভিন্ন পানিকে দূষণ করে। 

👉 পারমাণবিক চল্লিশ সহ বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন কারখানায় যে সকল তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলো পানির সাথে মিশে পানিকে দূষণ করে।

👉 গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পানির উপরে বিভিন্ন ধরনের পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পানি দূষিত হচ্ছে। 

👉 অনিয়ন্ত্রিত ভাবে জীবনযাত্রার মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন ধরনের ময়লা আবর্জনা পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষিত করে। 

👉 বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পরীক্ষার বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেগুলো উপ পর্যাপ্ত অংশ পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষিত করে।

➡পানি দূষণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো :-

👉 উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষিত প্রাণীকে পরিশোধন করতে হবে। 

👉 শিল্পায়ন এবং নগরায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপে পানিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা এবং অপচয় রোধ করার মাধ্যমে পানি দূষণ রোধ করা যায়। 

👉 পানি দূষণ প্রতিরোধ করার জন্য দূষণ আইন ১৯৭৪- ১৯৯৮ সংশোধন প্রক্রিয়া এবং ১৯৭৭-১৯৯১ সংশোধন প্রক্রিয়া ব্যবস্থা অনুযায়ী দূষণ  বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। 

👉 সকলে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। 

👉 পানির সঠিক ব্যবহার এবং অপচয় থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষিত পানিকে পরিশোধন পদ্ধতিতে ব্যবহার করার মাধ্যমে পানি দূষণ রোধ করা যায়। 

পানি দূষণের ১০টি কারণ

 

১. পুকুরে গোসল করলে, নদী নালা অপর্যাপ্তভাবে ব্যবহার করলে, কাপড়-চোপড় ধরে এবং গরু গোসল করালে পানি দূষিত হয়। 

২. গৃহস্থালির যে সকল আবর্জনা রয়েছে সেগুলো নদী-নালা এবং খাল বিলে ফেলার মাধ্যমে পানির সাথে মিশিয়ে পানি দূষণ করে। 

৩. শিল্প কারখানায় যে সকল দূষিত রসায়ন পদার্থ রয়েছে সে সকল পদার্থ পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষণ করছে। 

৪. জমিতে যে সকল কীটনাশক এবং সার ব্যবহার করা হয় সেগুলো বৃষ্টির পানির সাথে নদী-নালা এবং খাল বিলের পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে। 

৫. অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাটির নিচের স্তর থেকে অতিরিক্ত পানি তুলে নেওয়ার ফলে মাটির ফাঁকে ফাঁকে আর্সেনিকের বাতাসের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বিভিন্ন পানিকে দূষণ করে। 

৬. পারমাণবিক চল্লিশ সহ বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন কারখানায় যে সকল তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলো পানির সাথে মিশে পানিকে দূষণ করে।

৭. গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পানির উপরে বিভিন্ন ধরনের পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পানি দূষিত হচ্ছে। 

৮. অনিয়ন্ত্রিত ভাবে জীবনযাত্রার মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন ধরনের ময়লা আবর্জনা পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষিত করে। 

৯. বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পরীক্ষার বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বিক্রিয়ার মাধ্যমে সেগুলো উপ পর্যাপ্ত অংশ পানির সাথে মিশিয়ে পানিকে দূষিত করে। 

১০. যে সকল পারেন ড্রেন নদী নালা অথবা খাল বিলে গিয়ে মিশেছে সেগুলোতে অপর্যাপ্ত আকারে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে সে ময়লা আবর্জনা ড্রেনের মাধ্যমেও নদী নালার পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করছে। 

পানি দূষণের ৫টি ক্ষতিকর প্রভাব

ক্রমাগত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পানি দূষণ হচ্ছে এবং পানি দূষণের ফলে ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধরনের প্রভাব বিদ্যমান হচ্ছে। 

নিম্নে পানি দূষণের ফলে যে সকল ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে তা তুলে ধরা হলো :-

১. নদী নালা খাল বিল ইত্যাদি পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়। 

২. বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বা ময়লা দ্বারা নদী নালা খাল বিলের পানি নষ্ট হয়ে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়, ফলে সেখানে মাছ চাষ করা যায় না। 

৩. মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন ডায়রিয়া আমাশয় জন্ডিস টাইফয়েড ও চর্ম রোগে ও পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। 

৪. প্রাণী এবং উদ্ভিদের খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। 

৫. মারা যাওয়ার ফলে তা খাদ্য শৃঙ্খলের জন্য ব্যাপক পরিসরে ব্যাঘাত ঘটে। তা জনমানবের জন্য ক্ষতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। 

পানি দূষণ কি পানি দূষণ কাকে বলে পানি দূষণের কারণ প্রভাব ও প্রতিরোধ

পানি দূষণ রোধের ৫টি উপায়

পানি দূষণ রোধের বিভিন্ন ধরনের উপায় রয়েছে। নিম্নে পানি দূষণ রোধের পাঁচটি উপায় তুলে ধরা হলো :-

১. উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষিত প্রাণীকে পরিশোধন করতে হবে। 

২. শিল্পায়ন এবং নগরায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপে পানিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা এবং অপচয় রোধ করার মাধ্যমে পানি দূষণ রোধ করা যায়। 

৩. পানি দূষণ প্রতিরোধ করার জন্য দূষণ আইন ১৯৭৪- ১৯৯৮ সংশোধন প্রক্রিয়া এবং ১৯৭৭-১৯৯১ সংশোধন প্রক্রিয়া ব্যবস্থা অনুযায়ী দূষণ  বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। 

৪. সকলে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। 

৫. পানির সঠিক ব্যবহার এবং অপচয় থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষিত পানিকে পরিশোধন পদ্ধতিতে ব্যবহার করার মাধ্যমে পানি দূষণ রোধ করা যায়। 

পানি দূষণের প্রতিকার

১.বিভিন্ন ধরনের তেলবাহী জাহাজ বা ট্রাঙ্কার থেকে ছিদ্র বালিক হয়ে যেন পানিতে তেল না পড়ে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

২. কম্পেস্টিং পদ্ধতিতে টয়লেট ব্যবস্থা স্থাপন করে নেওয়া। 

৩. বিভিন্ন কীটনাশক এবং ছত্রাক পাশাপাশি রাসায়নিক সার এর ব্যবহার সীমিত পরিমাণে করা। 

৪. প্লাস্টিক রাবার বা পলিথিন যেখানে সেখানে না ফেলে মাটি গর্ত করে পুতে রাখা। 

৫. পৌর এলাকার আবর্জনা অথবা নর্দমার যে সকল আবর্জনা রয়েছে সেগুলো নদী বা খাল বিলে যেন পৌঁছুতে না পারে সেজন্য পরিশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

৬. মৃত জীবজন্তু এবং অন্যান্য অবস্তু সমূহ পচনীয় বস্তু সমূহ পানিতে না পেলে তা যথাস্থানে মাটির নিচে পুতে রাখা। 

৭. ব্যক্তিগত চেষ্টায় যে সকল অপ্রয়োজনীয় পদার্থ রয়েছে সেগুলো ব্যবহার কমিয়ে ফেলা। 

৮. দূষণের পরিচিতি নির্ণয় করার মাধ্যমে পানির বিশুদ্ধতা পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 

আরো পড়ুন: পানিবাহিত রোগ কাকে বলে

পানি দূষণের প্রভাব

পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব দেখা দিচ্ছে। নিচে পানি দূষণের প্রভাবসমূহ তুলে ধরা হলো :-

১. নদী নালা খাল বিল ইত্যাদি পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়। 

২. বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বা ময়লা দ্বারা নদী নালা খাল বিলের পানি নষ্ট হয়ে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়, ফলে সেখানে মাছ চাষ করা যায় না। 

৩. মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন ডায়রিয়া আমাশয় জন্ডিস টাইফয়েড ও চর্ম রোগে ও পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। 

৪. প্রাণী এবং উদ্ভিদের খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। 

৫. মারা যাওয়ার ফলে তা খাদ্য শৃঙ্খলের জন্য ব্যাপক পরিসরে ব্যাঘাত ঘটে। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে পানি দূষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। 

আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি পানি দূষণ রিলেটেড যে কোন তথ্য মতামত এবং যেকোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন অথবা জানতে চান তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button