দাম প্রভাব কি? দাম প্রভাব ও আয় প্রভাবের পার্থক্য
দাম প্রভাব কি ভোক্তার আয়, রুচি ও পছন্দ আবার অন্যান্য দ্রব্যের দাম অপরিবর্তিত থেকে কোন এক একটি দ্রব্যের দামের এমন পরিবর্তন হলে তার ভারসাম্য অবস্থার অনেক পরিবর্তন ঘটে।
এর ফলে দুটি দ্রব্যের মূল্য বিভিন্ন সংমিশ্রণ ক্রয়ের মধ্যেও রয়েছে এক পরিবর্তন ঘটে। একটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস পায় এই জন্যে এমন পেলে ভোক্তার প্রকৃত আয় করতে হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়। ফলে তার এই দ্রব্য ক্রয়ের সংমিশ্রণে পরিবর্তন ও আসে। দাম পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট এমন প্রভাবকেই দাম প্রভাব বলে।
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য এমন অনুযায়ী, অগাস্ট মাসে দেশে একটি খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ও দাঁড়িয়েছে ১২.৫৪ শতাংশে। এটি দেশে গত প্রায় ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যস্ফীতির এমন কিছু বিষয়টি শুধু অগাস্ট মাসের বিষয় নয়, আবার বরং গত বছরের মার্চ থেকেই এই সব খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার আবার যেকোনো প্রবণতা শুরু হয়েছে তা আর ঠেকানো যায়নি আবার সেটাই এখন অনেক বড় আকার ধারণ করেছে।
তারা বলছেন, সরকারের অধীনে ভুল নীতি, ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেই সাথে বাজারের একটি উপর কোন ধরণের নিয়ন্ত্রণ ভাবে না থাকার কারণেই খাদ্য গ্রহণ মূল্যস্ফীতি ঠেকানো যায়নি
দাম প্রভাব কি
অগাস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ১২.৫৪ শতাংশ হওয়ার মানে হলো ২০২২ সালে দেশে একটি যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা ব্যয় করতেও হতো এ বছরের অগাস্টে সেই সব একই পণ্য কিনতে ব্যয় করে এমন করতে হয়েছে ১১২ টাকা প্রায় ৫৪ পয়সা।
অথচ জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি বিষয়ক সংস্থা এফএও আবার এর তথ্য অনুযায়ী, গত অগাস্ট এই মাসে সারা বিশ্বে খাদ্য গ্রহণ মূল্যস্ফীতি কমে সর্বনিম্ন ও হয়েছে। এই সময়ে চাল ও চিনি ছাড়া এই বিশ্ববাজারে প্রায় সব খাদ্যপণ্যের অনেক দামই কমেছে।
এর আগে দেশে পণ্যের দাম কেনো কোথায় এমন দাম বাড়ার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক উদ্বৃত্ত বাজারে দাম বাড়ার বিষয়টিকে নানা ব্যবহার করা হলেও এখন আর সেই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম প্রায় কমে গেলেও তার প্রতিফলন কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের বাজারে ও দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশে এই বিপুল সংখ্যক খাদ্য মূল্যস্ফীতির পেছনে একটা নির্দিষ্ট কিছু কারণ আছে বলে এমন কিছু অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।
আয় প্রভাব কাকে বলে
আয়ের প্রভাব হল ভোক্তা অধিকার পছন্দ তত্ত্বের একটি অংশ যা ভোক্তার খরচের জন্য পরিবর্তনগুলিকে ব্যাখ্যা করে যা আপনার চাহিদা রেখা. আয় বাড়ার সাথে সাথে এমন গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের জন্য একটি ভোক্তার চাহিদা বাড়বে।
উল্লেখ্য যে একটা আয়ের প্রভাব এবং প্রতিস্থাপন প্রভাব ফেলে তাহলে এই অর্থনৈতিক ধারণা যা ভোক্তা পছন্দ তত্ত্বের এক একটি অংশ। আয়ের প্রভাব ব্যবহারে ক্রয় করার ক্ষমতার পরিবর্তনের প্রভাব গুলো ব্যাখ্যা করে।
প্রতিস্থাপন প্রভাব এমন বর্ণনা করে যে কীভাবে দামের মধ্যে পরিবর্তন ভোক্তাদের এই জন্যে সম্পর্কিত পণ্যের ব্যবহারের ধরণকে এমন পরিবর্তন করতে পারে এবং অর্থনীতি এটি অন্যের জন্য প্রতিস্থাপন নানা ভাবে করতে পারে।
আয় ভোগ রেখা বলতে কি বুঝ
ভোক্তার আয় সবসময় একটা কিছু স্থির থাকে না। ভোক্তার আয় নানা ভাবে পরিবর্তনশীল। দ্রব্যমূল্য প্রদত্ত অবস্থায় এমন ভালো আয় বাড়লে তার ক্রয়ক্ষমতা ও বাড়ে। আয় বাড়লে তার অধিক তৃপ্তি পাবার যোগ্য সম্ভাবনা দেখা দেয়।
কাজেই এই আয় বাড়লে নিরপেক্ষ সরকার মানচিত্রের উপরের নিরপেক্ষ হবে রেখায় সে অনেক পৌঁছতে পারে। ফলে তার ভারসাম্যের এমন পরিবর্তন ঘটে। অপরদিকে একই আয় কমে গেলে ভোক্তার ক্রয় করার ক্ষমতা কমে যায় এবং ভোক্তার এমন নিচের নিরপেক্ষ রেখায় নানা ভাবে পৌছার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
সুতরাং, দ্রব্যমূল্য প্রদত্ত সেবা এমন অবস্থায় আর্থিক আয়ের পরিবর্তন হলে ভোক্তার ভারসাম্যে আবার যে পরিবর্তন আসে অর্থাৎ আবার দুটি দ্রব্যের বিভিন্ন সংমিশ্রণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে উপর আয় পরিবর্তনের যেকোনো প্রভাব পড়ে তাকে আয় প্রভাব বলে। তাই বলা হয়েছে,আর এ আয় প্রভাবের প্রকৃতি মূলত একটি দ্রব্যের প্রকৃতির (Nature of goods) এবং উপর নির্ভর করে।
নিকৃষ্ট দ্রব্য কি
যেসব দ্রব্য সামগ্রী দরিদ্র মানুষের জনসাধারণ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকে। যেমন- মোটা চাল, এবং মোট কাপড়,আবার এই নিম্ন মানের খাদ্য সামগ্রী ইত্যাদিকে এমন কিছু নিকৃষ্ট দ্রব্য বলা চলে। তবে এমন অন্য পরিভাষায় গিফেন দ্রব্যকেই আবার নিকৃষ্ট দ্রব্য বলা হয়।
গিফেন দ্রব্য (Giffen goods):
আপনি যদি আপনার আয়ের এমন কিছু সিংহভাগ ((Lion’s share)কোনোএকটি দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ধরে কেনার জন্য ব্যয় করেন, এবং তাহলে মূল্য বেড়ে গেলে এবং আপনি যদি দ্রব্যটি অনেক বেশি করে কিনেন, সে দ্রব্যকে এই জন্যে আমরা গিফেন দ্রব্য গুলো বলতে পারি।
আলফ্রেড মার্শাল এবং (Alfred Marshall) আবার তাঁর Principles of Economics বইতে জনৈক বাঙাল Sir Roger Giffen-এর নাম উলেখ করেছেন;আবার অনেক ভালো যিনি আয়ারল্যান্ডে রুটির মতো দাম বাড়লে নিম্ন আয়সম্পন্ন এই সব পরিবার বেশি রুটি ক্রয় করে আবার সেগুলো বলে দাবি করেছেন।
পরিবর্তক দ্রব্য কাকে বলে
যথারীতি বাজেট ঘোষণার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই দাম বেড়ে যায় এই সিগারেটের। অর্থমন্ত্রী এই আ হ ম মুস্তফা কামাল তার এমন বাজেট বক্তৃতায় তামাকজাত দ্রব্যের পণ্যের ব্যবহার কমানো আবার এই রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপযোগী বেশকিছু প্রস্তাব রাখেন।
সেক্ষেত্রে সিগারেটকে চারটি আসনে ভাগে ভাগ করে নিম্নস্তরের এই সব সিগারেটের প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য প্রায় ৪৫ টাকা ও সম্পূরক শূল্ক প্রায় ৫৮ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব ও করা হয়।
এছাড়া মধ্যম স্তর, এবং উচ্চ স্তর ও অতি-উচ্চ স্তরের এই সব সিগারেটের উপর প্রায় ৬৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার একইসাথে দাম বেড়েছে এমন কিছু ইলেকট্রনিক সিগারেটেরও।
পরিবর্তক প্রভাব কাকে বলে
সিমেন্ট উৎপাদনের অন্যতম প্রধান এই ভাবে কাঁচামাল সিমেন্ট ক্লিঙ্কার্স, যার শুল্ক প্রতি মেট্রিক টনে উন্নীত ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে আবার অনেক সময় ৭০০ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্যিক ভাবে আমদানিকারকদের জন্য একটি ‘স্পেসিফিক রেট অফ ডিউটি’ প্রতি মাসে মেট্রিক টনে ৭৫০ টাকা দিয়ে থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার দাবি প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী। ফলে এখন প্রতি বস্তা টাকাসহ সিমেন্টের দামে এর প্রভাব গুলো পড়বে বলে মনে করা ও হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন আবার বর্তমানে সিমেন্ট উৎপাদনে সক্ষম দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই আমদানি রফতানি শুল্ক যৌক্তিকীকরণ ও রাজস্ব বৃদ্ধির সঙ্গে স্বার্থে সিমেন্ট ক্লিঙ্কার্সের এই জন্যে শুল্কহার বাড়ানো হল।
বাজেট রেখা কাকে বলে
এবারের বাজেটে নতুন যে বিষয়টি নানা ভাবে অন্তভূর্ক্ত হয়েছে তা হলো- টিনধারী ব্যক্তি যখন এমন ভাবে রিটার্ন জমা দিতে যাবে তখন থেকে তাকে কমপক্ষে প্রায় দুই হাজার টাকা কর দিতেই হবে। সেক্ষেত্রে তার করযোগ্য আয় গুলো থাকুক বা না থাকুক।
“করমুক্ত সীমার নিচে আয় রয়েছে আবার অথচ সরকার হতে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর এমন রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থাকায় রয়েছে এমন সকল কাজই করদাতার ন্যূনতম কর প্রায় দুই হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি,” এমন বাজেট বক্তৃতায় বলেন এই অর্থমন্ত্রী।
বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ সিটি করপোরেশন এলাকার একটি এমন কিছু জন্য ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার,আবার অন্যান্য সিটি করপোরশন এলাকায় এই ভাবে বসবাসরত ব্যক্তিদের জন্য ।
আরো পড়ুন: জি আই এস বলতে কি বুঝ
দাম প্রভাব ও আয় প্রভাবের পার্থক্য
বাজারে কোন দ্রব্যএকক পিছু ,অর্থাৎ প্রায় প্রতি লিটার,মিটার,কিগ্রা বা ঘণ্টাপিছু যে কোন মূল্যে বিক্রি হয়, তাকে বলে এই “দাম”। আর “মূল্য”হ’ল দ্রব্যটির এমন মধ্যে নিহিত রয়েছে উপযোগিতা আবার সেটির প্রয়োজনীয়তা। যেমন জীবনধারণের আবার কিন্তু জন্য পানীয় জল অবশ্য প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে অর্থাৎ জলের মূল্য অস্বাভাবিক ( ব্যবহারগত ) অসীম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এই সব মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক এবং আবার মানি চেঞ্জারের জন্য ডলারের একটি দাম বেঁধে দেওয়া আছে। তা অনেক তদারকি করা হয়।
চাহিদা বিধি অনুযায়ী দ্রব্যের মূল্য দামের পরিবর্তন হলে দ্রব্যের মূল্য চাহিদার পরিবর্তন ও হয়। কিন্তুু দ্রব্যের দামের পরিবর্তন এবং আর চাহিদার পরিবর্তন সব কিছু সময় একই হারেও হয় না।
কোন ক্ষেত্রে দামের সামান্য একটু পরিবর্তন হলে চাহিদার ব্যাপক আলোচনা পরিবর্তন হয়। আবার দ্রব্যের দামের ব্যাপক আলোচনা টে পরিবর্তন হলে চাহিদার সামান্য পরিবর্তন ও হয়।