ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতির পার্থক্য
ব্যষ্টিক অর্থনীতি: প্রিয় এই অর্থনীতির বিষয়ের শিক্ষাথী বন্ধুরা, আজকে আমি তোমাদের জন্য এই ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে এমন ভাবে পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করেছি।
অর্থনীতির অনেক কিছু বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও তার সমাধানের উপায় একটা বিশ্লেষণ দুটি আলাদা ভাবে দৃষ্টি কোন থেকে আলোচনা ও করা যায়।
বিশ্লেষণ পদ্ধতির উপর শুধু ভিত্তি করে অর্থনীতিকে আমরা প্রায় দুভাগে বিভক্ত করতে ও পারি। ১৯৩৩ সালে অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অধ্যাপক রাগনার ফিশ এই সর্বপ্রথম এ প্রত্যয় দুটি এমন ব্যবহার করেন।
যথা-
- ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও
- আবার সামষ্টিক অর্থনীতি
- আমরা ব্যষ্টিক অর্থনীতি এবং সামষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে বেশ কিছু কিছু সাধার পার্থক্য ও লক্ষ্য করি। নিম্নে উক্ত পার্থক্যগুলো নানা ভাবে আলোচনা করা হল :
- ব্যষ্টিক বা (Micro) শব্দের অর্থ হল এমন একটি ক্ষুদ্র। অর্থনীতির যে অংশে অতি কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে নানা ভাবে আলোচনা করা হয় তাকে এই ব্যষ্টিক অর্থনীতি বলে।
- পক্ষান্তরে, সামষ্টিক বা (Macro) এমন শব্দের অর্থ হল বৃহৎ। অর্থনীতির যে অংশে বৃহৎ অথবা বিশাল দিক সমূহ নিয়ে নানা কথা আলোচনা করা হয় তাকে এই সামষ্টিক অর্থনীতি বলে।
- যেহেতু ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক আলোচনায় নানা ভাবে অর্থনৈতির বিষয়বস্তু গুলো পৃথক অভিযানে এবং ক্ষুদ্র দৃষ্টিকোন থেকে নানা ভাবে আলোচনা করা হয় তাই তাদের মধ্যে শুধু তেমন কোন যোগসূত্র অথবা আন্তঃসম্পর্ক থাকে না।
- পক্ষান্তরে, সামষ্টিক এই সব অর্থনীতির বিষয়গুলে বৃহত এবং সামগ্রিত দৃষ্টিকোন থেকে অনেক বেশি আলোচনা করা হয় তাই এমন কিছু এর আলোচনার বিভিন্ন বিষয় ছাড়া পরস্পর সম্পর্কযুক্ত থাকে।
আরো পড়ুন: আধুনিক অর্থনীতির জনক কে?
ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতির পার্থক্য
ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য একটা বিদ্যমান। ব্যষ্টিক অর্থনীতি এটি বলতে ভোক্তা, ও উৎপাদক ও ফার্মের একক অর্থনৈতিক অবস্থা কার্যক্রমকে বোঝায়।
যে অর্থনীতি বৃহৎ পরিবেশে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে নানা কথা আলোচনা করে, তাকে এই সামষ্টিক অর্থনীতি বলে। ইংরেজি হলো Micro শব্দটি গ্রিক শব্দ Mikros থেকে এর উদ্ভব।
ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক
ব্যষ্টিক অর্থনীতি
‘ব্যষ্টিক’ শব্দটি ইংরেজি এর প্রতিশব্দ Micro, যা গ্রিক শব্দ এবং ‘Mikros’ শব্দ হতে এসেছে ও যার অর্থ ‘ক্ষুদ্র’।
অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় যখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অথবা এককভাবে বিশ্নেষণ করা হয়, যেকোনো সময় তখন তাকে কমপক্ষে ব্যষ্টিক অর্থনীতি বলা হয়। যেমন- এমন কিছু একটি দ্রব্যের দাম, এমন কিছু একটা,একজন ব্যক্তির আয়, এবং একজন ভোক্তার ভোগ ইত্যাদি।
সামষ্টিক অর্থনীতি
‘সামষ্টিক’ শব্দটি ইংরেজি প্রতিশব্দ এই জন্যে‘Macro, যা গ্রিক শব্দ ‘Makros’ শব্দ হতে এসেছে আবার যার অর্থ ‘বৃহৎ’। অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়গুলো যখন আবার একত্রে কিংবা সামগ্রিকভাবে এমন একটি বিশ্নেষণ করা হয়।
তখন তাকে এই সামষ্টিক অর্থনীতি বলা হয়। যেমন- দামস্তর, এবং জাতীয় আয়, এই সামগ্রিক ভোগ ইত্যাদি।
ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য
আধুনিক অর্থশাস্ত্রের দু’টি এই সব গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে ব্যষ্টিক অর্থনীতি এবং সমষ্টিক অর্থনীতি।
সংজ্ঞা ও বিষয়বস্তু আবার বিশ্লেষণ পদ্ধতির দিক হতে আজই বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, কোন সময় ব্যষ্টিক ও সমষ্টিক অর্থনীতির ওপর মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য ও রয়েছে। নিম্নে ব্যধিক এবং এইসব সমষ্টিক অর্থনীতির পার্থক্যসমূহ নানা ভাবে আলোচনা করা হল।
১. সংজ্ঞাগত পার্থক্য :এই ব্যষ্টিক অর্থনীতি এবং সমষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে সংজ্ঞাগত পার্থক্য ও রয়েছে।
ব্যঠিক বা Micro শব্দের অর্থ হল এক ক্ষুদ্র। ব্যষ্টিক অর্থনীতি বিস্তৃত পরিসরে ক্ষেত্রের খণ্ডখণ্ড অংশ নিয়ে আলোচনাও করে।
অপরদিকে, সমষ্টিক হলো এই Macro শব্দের অর্থ হল বৃহৎ বা বিশাল,আবার এমন যা অর্থনীতির বিস্তৃত অথবা বিশাল ক্ষেত্র নিয়ে ও আলোচনা করে।
সামষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্ব
সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে কোন বিশেষ ব্যক্তি আবার প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে স্বতন্ত্র আলোচনা করেন না করে দেশের অনেক অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে সামগ্রিকভাবে নানা ভাবে আলোচনা করা হয়।
অর্থাৎ, আপনার বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব যখন সামগ্রিকভাবে অনুযায়ী আলোচনা করা হয় তখন অর্থনীতির সে ক্ষেত্রে শাখাকে এই সামষ্টিক অর্থনীতি বলা হয়।
ব্যষ্টিক অর্থনীতি অর্থব্যবস্থার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ এমন হিসেবে নিয়ে আলোচনা করে। এ কারণে অনেক কিছু ব্যষ্টিক অর্থনীতির পরিধি বা বিষয়বস্তু ক্ষুদ্র এবং আংশিক।
আরো পড়ুন: মিশ্র অর্থনীতি কাকে বলে?
সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়বস্তু আলোচনা কর
সামষ্টিক অর্থনীতি বলতে ভোক্তা অধিকার অর্থনীতি শাস্ত্রের এমন এক দিক বুঝায় যেখানে আপনি যদি জাতীয় আয়, বিনিয়োগ, নিয়োগ ইত্যাদি ও পর্যলোচনা করা হয়।
এ অর্থে এই জন্যে এমন সামষ্টিক অর্থনীতি দেশের মোট উৎপাদন, এবং মোট জাতীয় আয়, মোট বিনিয়োগ, এবং মোট কর্মসংস্থান, মোট চাহিদা, আবার মোট যোগান
সাধারণ সামান্তর এমন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা ও করে। দেশের ভোগ বিনিয়োগ, নিয়োগ এবং আয় পর্যালোচনা করে বলে এর মধ্যে আওতায় মল্লা, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, এই সব স্থবিরতা ইত্যাদি সংক্রান্ত এমন আলোচনা ও এই সামষ্টিক অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত।
সামষ্টিক অর্থনীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
সামষ্টিক শব্দের ইংরেজি শব্দ হলো Macro এবং গ্রিক শব্দ Makros যার বাংলা অর্থ বড় বড় সামগ্রিক (Large বা whole)।
অর্থনীতির আওতাভুক্ত যেকোনো বিষয়কে যখন সামগ্রিক অথবা জাতীয় পর্যায়ে বিশ্লেষণ করা হয়, যেকোনো সময় তখন তাকে সামষ্টিক অর্থনীতি বলে।
অর্থনীতির যেকোনো কাজ করতে বিষয়ের সব এককের আচরণ বা কার্যাবলি সমষ্টিগতভাবে এমন কিছু আলোচনা জাতীয় করা হয় এ শাখায়।
যেমন — সামগ্রিক চাহিদা, মেটাতে সামগ্রিক যোগান, সামগ্রিক ভোগ, সাধারণ মূল্যস্তর, এমন কিছু মজুরি স্তর, আয়, করতে সামগ্রিক বিনিয়োগ ব্যয়, জাতীয় সঞ্চয়,এবং নিয়োগ স্তর প্রভৃতি এমন সামষ্টিক অর্থনীতির উদাহরণ স্বরূপ হিসেবে স্বীকৃত।
সামষ্টিক অর্থনীতির হাতিয়ার সমূহ আলোচনা কর
অর্থনীতি হল কিভাবে মানুষ উৎপাদন, বন্টন আবার এই ভোগের জন্য দুষ্প্রাপ্য সম্পদ বরাদ্দ করে এমন অধ্যয়ন। এছাড়া এটি হলো সম্পদের উৎপাদন, বন্টন হিসেবে ভোগ বিশ্লেষণ করে।
অর্থনীতি দু’ভাগে বিভক্ত যেমন, হলো সামষ্টিক অর্থনীতি আবার ব্যষ্টিক অর্থনীতি। সামষ্টিক অর্থনীতি, এটি অর্থনীতির সামগ্রিক আচরণ নিয়ে কাজ করে আবার ব্যষ্টিক অর্থনীতি ভোক্তা শুধু তাই ব্যবসার উপর ফোকাস করে। নিম্মে এই অর্থনীতির দুটি শাখা গুলো ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতির সংজ্ঞা নানা ভাবে উভয়ের মধ্যে প্রধান পার্থক্য এই সমূহ বর্ণনা করা হল।
শেষ কথা: বর্তমানকালে অর্থনীতির আওতা অনেক অনেক বিষয়ে প্রসারিত। অর্থনীতির বিভিন্ন তাত্ত্বিক এবং বাস্তব ধারণাকে সম্যকরূপে উপলব্ধি করার জন্য এ বৃহৎ আওতাকে আবার ১৯৩৩ সালে ওসলো
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রাগনার ফ্রিশ এবং (Ragner Frisch) ব্যষ্টিক অর্থনীতি আবার (Micro Economics) এমন কিছু সামষ্টিক অর্থনীতি (Macro Economics) এই সব কিছু নামে দুভাগে বিভক্ত করেন।
বর্তমানে জটিল করে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা আলোচনার ক্ষেত্রে এ কারণেই শব্দ দুটি ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
মাইক্রো ও ম্যাক্রো অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য কি
সংজ্ঞাগত পার্থক্য : ব্যষ্টিক অর্থনীতি এবং সমষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে এমন ভাবে সংজ্ঞাগত পার্থক্য রয়েছে।
সামষ্টিক অর্থনীতির জনক কে?
সামষ্টিক অর্থনীতির জনক বলা হয় , জন মাইনার্ড কেইন্স।