ইরানের পাল্টা জবাব – ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলা, ২৯ জন আহত

মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আবারও বড় ধরনের সংঘর্ষের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া পাল্টাপাল্টি হামলায় ইতোমধ্যে দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেক। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, পুরো অঞ্চলজুড়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
গত রোববার তেহরানে এক বিমান হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (IRGC) গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি ও দুই জেনারেল নিহত হন। ইরান এ ঘটনার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
এরপরই পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান থেকে ডজনখানেক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছোড়া হয় ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরের দিকে। তেল আবিব, জেরুজালেম ও হাইফায় বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে আকাশ। বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে। এতে বহু মানুষ আহত হন। কিছু এলাকায় আগুনও ধরে যায়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা শতাধিক ড্রোন মাঝ আকাশে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। তবে সব হামলা ঠেকানো যায়নি। ফলে দেশটির কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলও চুপ থাকেনি। মধ্য ইরানের বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় তারা। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সেখানে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৪ জনে, যার মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ মানুষ।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনেও হামলা হয়েছে, যেখানে অনেক সরকারি কর্মকর্তা এবং কর্মী আহত হয়েছেন।
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বর্তমানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে রাজি নয়। বরং তারা বলেছে, যতক্ষণ না ইসরায়েলের সব হামলার জবাব দেওয়া শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ কোনো আলাপচারি হবে না।
সাধারণ মানুষের অবস্থা: এই হামলা-পাল্টা হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকে পরিবার হারিয়েছেন, অনেকেই হাসপাতালের বিছানায় জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তেহরান, ইসফাহান ও অন্যান্য শহরে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করা হয়েছে।
পরিণতি কী হতে পারে: বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ থামানো না গেলে এটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোকেও জড়িয়ে ফেলতে পারে। যুদ্ধ যদি বাড়তে থাকে, তবে তার প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বের অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ওপর।