শিক্ষা

ধ্বনি কাকে বলে? ধ্বনি কত প্রকার ও কী কী?  ব্যাখ্যা করো 

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ আমাদের ওয়েবসাইটের শিক্ষার যেটা উক্ত পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে ধ্বনি কাকে বলে, ধ্বনির প্রকারভেদ ও ব্যাখ্যা  সমূহ বিভিন্ন তথ্য আলোচনার মাধ্যমে জানাচ্ছি। 

বাংলা ভাষা এবং ব্যাকরণের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হলো ধ্বনি। আমরা কথা বলার সময় ধ্বনির ব্যবহারের মাধ্যমে শব্দ তৈরি করি। 

এজন্য একজন বাংলা ভাষাভাষী মানুষের ধ্বনি  কত প্রকার, ধ্বনি  কাকে বলে এবং ব্যাখ্যা ইত্যাদি সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য। 

ধ্বনি কাকে বলে? 

ধ্বনি হলো মানুষের বাগ্যন্ত্রের আওয়াজ। অর্থাৎ মানুষের বাগ্যন্ত্রের ন্যূনতম প্রয়াসে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলে। ধ্বনি সম্পর্কে ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনো ভাষার উচ্চারিত শব্দকে (Word-কে) বিশ্লেষণ করিলে আমরা কতগুলি (Sound) ধ্বনি পাই।

ধ্বনির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী বলেন, “মানুষের বাকপ্রত্যঙ্গ অর্থাৎ কণ্ঠনালি, মুখবিবর, জিহ্বা, আল-জিহ্বা, কোমল তালু, শক্ত তালু, দাঁত, মাড়ি, চোয়াল, ঠোঁট ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলা হয়।’

ধ্বনির উৎস কি?

ভাষা বা মানুষের কথা কতগুলো ধ্বনির সমষ্টি। ধ্বনিগুলো বের হয় মুখ দিয়ে, কিন্তু ধ্বনির মূল উৎস হলো ফুসফুস। ফুসফুসের কাজ হলো মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ও ছাড়া। সে কারণে ফুসফুস থেকে বাতাস বাইরে বেরিয়ে আসে।

বাতাস বের হওয়ার সময় মুখে ধ্বনির সৃষ্টি হয়। ফুসফুস থেকে বাতাস গলনালি, মুখ, নাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। মুখে যে ধ্বনি উচ্চারিত হয়, তার পেছনে কাজ করে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাস।

ফুসফুস থেকে বাতাস স্বরতন্ত্রীর মাধ্যমে বেরিয়ে আসার সময় মুখের বিভিন্ন অংশে ঘষা লাগে। ফলে মুখে নানা ধরনের ধ্বনির সৃষ্টি হয়।

বাগ্যন্ত্রের সঙ্গে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাসের স্পর্শের দ্বারা ধ্বনির সৃষ্টি হয়ে থাকে। ধ্বনি ফুসফুস থেকে আসে না, ফুসফুস থেকে আসে বাতাস আর এই বাতাসের আঘাতেই তৈরি হয় ধ্বনি। ধ্বনি তৈরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে বাগ্যন্ত্র।

ধ্বনি কাকে বলে
ধ্বনি কাকে বলে

ধ্বনি কত প্রকার ও কী কী?  ব্যাখ্যা কর 

ফুসফুস থেকে আসা বাতাস গলনালি, মুখবিবর বা নাক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মুখের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে। আঘাত লাগার জায়গা, ধরন ও পরিমাণ নানা রকমের ধ্বনির সৃষ্টি করে।

লক্ষ করা যায়, কোনো কোনো ধ্বনির উচ্চারণে ফুসফুস তাড়িত বাতাস বাধা না পেয়ে সোজা বেরিয়ে যায়। আবার কখনো কখনো বাতাস মুখের বিভিন্ন অংশে বাধা পায়। বাধার এই পার্থক্যের দিক থেকে ধ্বনিকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন :

১. স্বরধ্বনি ; ২. ব্যঞ্জনধ্বনি

১. স্বরধ্বনি:- যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখে দিয়ে ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখের কোথাও  বাধা পায় না, তাদের স্বরধ্বনি বলা হয়।

যেমন:- অ, আ, ই, ঈ ইত্যাদি। 

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় স্বরধ্বনিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে, ‘যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ব্যতিরেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পরিস্ফুটভাবে উচ্চারিত হয় এবং যাহাকে আশ্রয় করিয়া অন্য ধ্বনি প্রকাশিত হয়, তাহাকে স্বরধ্বনি (Vowel) বলে।’

২.ব্যঞ্জনধ্বনি:- যেসব ধ্বনি উচ্চারণ করার সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস মুখ দিয়ে  বেরিয়ে যেতে মুখের কোথাও না কোথাও  বাধা পেয়ে থাকে , তাদের ব্যঞ্জনধ্বনি বলে । 

যেমন : ক, খ,ম, চ, প, ইত্যাদি

ব্যঞ্জনধ্বনির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ব্যতীত উচ্চারিত হইতে পারে না এবং সাধারণত যে ধ্বনি অপর ধ্বনিকে আশ্রয় করিয়া উচ্চারিত হইয়া থাকে, তাহাকে ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonent) বলে।’

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে ধ্বনি কাকে বলে, প্রকারভেদ এবং ধ্বনির উপাদান ইত্যাদি  সম্পর্কে আলোচনার মাধ্যমে জানিয়েছি। 

আশা করি,,  আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ধ্বনি সম্পর্কিত যে সকল তথ্য আপনারা জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে উপকৃত হতে পেরেছেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button