বিশ্বগ্রাম কি? সংজ্ঞা, উপাদান, সুবিধা ও অসুবিধা
পৃথিবী জুড়ে স্বল্প সময়ে যোগাযোগ সুবিধার জন্যই বিশ্বকে গ্রাম হিসেবে বলা হচ্ছে। এই পোস্টটির মাধ্যমে বিশ্বগ্রাম কি? সে সম্পর্কে জানতে হলে, পোস্টটির শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন।
বিশ্বগ্রাম কি
বিশ্বগ্রাম (Global village) হচ্ছে:তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর করে এমন এক ব্যবস্থা যেখানে পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তের মানুষ একক সমাজে বসবাস করে থাকে। পৃথিবী থেকে স্বল্প সময়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা সঠিক বিশ্বকে একটি গ্রাম আকারে ইঙ্গিত করা হয়।
মার্শাল ম্যাকলুহান গ্লোবাল ভিলেজ অথবা বিশ্ব গ্রামকে এমন একটি পরিস্থিতি বর্ণনা করে।যেখানে বিশ্বজুড়ে সমস্ত মানুষ আধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা আরও অনেক বেশি সংযুক্ত হবে। ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্যে বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করে থাকে।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদান
বিশ্বগ্রামের প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপাদানগুলো:
১. হার্ডওয়্যার (Hardware)
২. সফটওয়্যার (Software)
৩. ইন্টারনেট কানেকটিভিটি
৪. ডেটা (Data)
৫. সক্ষমতা (Capacity)
১. হার্ডওয়্যার: বিশ্বগ্রাম হলো অনেক রকমের যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্যে দরকারী কিছু কিছু উপযুক্ত হার্ডওয়্যার সামগ্রী।
হার্ডওয়্যার বলতে কম্পিউটার এবং যন্ত্রপাতি ও মোবাইল, অডিও-ভিডিও রেকর্ডার আবার স্যাটেলাইট, রেডিও ও টেলিভিশন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত অনেক ডিভাইস।
২. সফটওয়্যার: বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠায় সফটওয়্যারের অবদান রয়েছে অপরিসীম। সফটওয়্যারের মধ্যে আছে অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম, ওয়েব ব্রাউজ ও মিডিয়া সফটওয়্যার এবং ওয়ার্ড সফটওয়্যার, কমিউনিকেটিং সফ্টওয়্যার প্রোগ্রামিং ভাষা।
৩. ইন্টারনেট কানেকটিভিটি: বিশ্বগ্রামে নিরাপদ রিসোর্স শেয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেট কানেকটিভিটির জন্যে অনেক রকমের উপাত্ত ও তথ্য একে অপরের সাথে করতে পারছে। এক্ষেত্রে টেলিকমিউনিকেশন, ব্রডকাস্টিং এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
৪. ডেটা বা ইনফরমেশন: বিশ্বগ্রামে বিভিন্ন তথ্য থাকবে যেটা কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করে পাওয়া যায়। বিশ্বগ্রামে ডেটা এবং তথ্যকে মানুষ তার প্রয়োজন একে অপরের সঙ্গে বিনামূল্যে অথবা অর্থের বিনিময়ে শেয়ার করতে থাকে।
৫. সক্ষমতা: বিশ্বগ্রামের উপাদানগুলোর জন্যে ব্যবহারকারীর জ্ঞান অথবা সক্ষমতা অন্যতম। বিশ্বগ্রাম শুধুমাত্র তথ্যওপ্রযুক্তি নির্ভর। মানুষের সক্ষমতার ওপর এর সুফল নির্ভর করে থাকে।বিশ্বগ্রামের সুবিধা অসুবিধা
সুবিধাসমূহ মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে যোগাযোগ করা যায়।ভৌগোলিক দূরত্ব কমে হয়ে আসে।অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইটে বই পড়া যায়। ঘরে বসেই বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করার মাধ্যমে বিদেশি ডিগ্রি লাভ করা যায়।
বিভিন্ন দেশ ও তাদের সংস্কৃতি সমন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায়।টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার জন্যে বিশ্বের নামি-দামি চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা গুলো পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব ও অন্যন্য মাধ্যম ব্যবহার করে অনেক বিনোদন উপভোগ করা যায়।ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করা সম্ভব।অনলাইনে অনেক কাজ থাকায় বেকারত্ব হ্রাস পায়।সময় ও অর্থ
অসুবিধাসমূহ হ্যাকিং এর কারণে তথ্য চুরি হয় ও তথ্যের গোপনীয়তায় নষ্ট হয়।মিথ্যা তথ্য প্রকাশের কারণে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।সত্যিকারের বন্ধুর চেয়ে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির বন্ধুর সংখ্যা বেড়ে যায় ফলে আপন মানুষের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়।
ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরি। ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি হতে পারে।পর্নোগ্রাফির কারণে সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হয়।অত্যাধিক প্রযুক্তি আসক্তির মাধ্যমে শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়ে।
ইন্টারনেট প্রযুক্তির জন্যে অনেক কাজ সহজ হওয়ায় বেকারত্ব অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।সাইবার আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে।সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্যে বিভিন্ন দেশের নিজস্ব সংস্কৃতিগুলো হারিয়ে যায়।
আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে বিশ্বগ্রাম কি? সে সম্পর্কে কিছু কথা জানতে পারলেন, আপনার যদি এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।