কম্পিউটার ভাইরাস কি? লক্ষণ, প্রতিরোধ ও উদাহরণ
কম্পিউটার ভাইরাস কি :-সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ,, কম্পিউটার রিলেটেড উক্ত পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। বর্তমান সময়ে আধুনিক উন্নয়ন এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির জন্য প্রায়ই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
তবে কম্পিউটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার ভাড়া সম্পর্কে জানতে হবে। উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে —
→ কম্পিউটার ভাইরাস কি,,,
→ ভাইরাসের নাম,,,→ লক্ষণ,,,
→কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়,,,,ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি।
কম্পিউটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আক্রমণ করার মাধ্যমে কম্পিউটারে কার্যকারী থাকে কমিয়ে ফেলে। এজন্য প্রতিটি কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে কম্পিউটার ভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব এবং কি কি কারণে বা কি কি লক্ষণ দেখা দিয়ে তা জানতে হবে।
পাশাপাশি একজন ব্যবহারকারীকে কিভাবে কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায় সেই উপায় গুলো সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।
কম্পিউটার ভাইরাস কি
কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যেটি ব্যবহার করে কম্পিউটারে কোডের বিভিন্ন কাজকর্ম এবং ইন্টারফেয়ার করা যায়। এছাড়া অনিরাপদ নেটওয়ার্ক, ডাটা, দুষিত ফাইল ইত্যাদিকে কম্পিউটার ভাইরাল বলা হয়।
একটি সিস্টেমে একবার বায়রাস প্রবেশ করলে এটি একটি প্রোগ্রাম থেকে অন্য একটি প্রোগ্রামে ছড়িয়ে যায় এবং ইনফেক্টেড কম্পিউটার থেকে অন্য একটি কম্পিউটারে ছড়িয়ে নিজেদের কপি তৈরি করে রাখে।
অর্থাৎ এটি একটি সেলফ রেপ্লিকেটিং কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যাক কোন একটি প্রোগ্রাম ডেটা বা ফাইলকে ইনফেক্টেড করে কম্পিউটারের কাজ কাজকর্মে ইন্টারফেয়ার করে।
তবে অনেকগুলো এন্টিভাইরাস রয়েছে যে যেগুলো উক্ত প্রোগ্রামগুলোকে অর্থাৎ মেশিনের সাহায্যে ভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য সাহায্য করে।
একটি সিস্টেম স্ক্যান করে এবং স্ক্যান করার সময় ডিটেকটিভ করার ভাইরাস গুলোকে পরিষ্কার করা যায়। বিভিন্ন জনপ্রিয় অ্যান্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলো এটি করে থাকে। যেমন :- Avast, Quickheal, McAfee, Kaspersky ইত্যাদি।
কম্পিউটার ভাইরাসের নাম
কম্পিউটার কে আক্রান্ত করার জন্য অসংখ্য কম্পিউটার ভাইরাস রয়েছে। এমন কিছু কম্পিউটার ভাইরাসের নাম নিম্নে তুলে ধরা হলো :-
১. ওভাররাইট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
২. এপেন্ড কম্পিউটার ভাইরাস,,,,,
৩. ম্যাক্রো কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৪. বুট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৫. রেসিডেন্ট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৬. নন-রেসিডেন্ট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৭. মাল্টিপার্টাইট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৮. ফাইল ইনফেক্টর কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
৯. কম্পিউটার ওয়ার্ম,,,
১০. ট্রোজান হর্স,,,,
১১. ক্যাভিটি কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
১২. CMOS কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
১৩. Companion কম্পিউটার ভাইরাস,,,
১৪. এনক্রিপ্টেড কম্পিউটার ভাইরাস,,,
১৫. এক্সিকিউটেবল কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
১৬. পলিমরফিক কম্পিউটার ভাইরাস,,,
১৭. র্রাবিট কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
১৮. স্টিলথ কম্পিউটার ভাইরাস,,,,
১৯. এস কিউ এল স্ল্যামার (SQL Slammer),,,,
২০. দ্য ক্লেজ ভাইরাস (The Klez Virus),,,,
২১. আইলাভইউ (ILOVEYOU),,,,
২২. মাই-ডুম (MyDoom),,,,
২৩. স্টর্ম ওয়ার্ম (Storm Worm),,,,
২৪. ক্রিপ্টোলকার (Cryptolocker),,,,
২৫. কনফিকার (Conficker),,,,
২৬. কোড রেড (Code Red),,,,
২৭. স্টাক্সনেট (Stuxnet),,,,
২৮. মরিস ওয়ার্ম (Morris Worm),,,,
২৯.টিনবা (Tinba),,,, ইত্যাদি।
কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ
কম্পিউটার ভাইরাসের অনেক লক্ষণ রয়েছে। নিচে কম্পিউটার ভাইরাসের কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো :-
১. কম্পিউটার ঘনঘন পপ আপ করলে, কম্পিউটারের উইন্ডো দেওয়া স্বাভাবিক ঘনঘন পপের কারণ হতে পারে।
২. ধীর গতির কম্পিউটারের কর্মদক্ষতা দেখা দিলে, হঠাৎ কম্পিউটার তুলনামূলকভাবে ধীরে চললে এবং হঠাৎ কোন ফাইল খোলার সময় বন্ধ হয়ে গেলে,,,
৩. হার্ড ড্রাইভ সমস্যা দেখা দিলে অস্বাভাবিকভাবে হাই কার্যালয় প্রদর্শন করা হয়। এক্ষেত্রে হার্ড ড্রাইভ এ আন ওয়ান্টেড পরিবর্তন ঘটে এবং ডিভাইসটি ফ্রিজ বা ক্রাশ করতে পারে।
৪. ঘন ঘন ক্র্যাশ হলে ইনফেক্টেড হওয়ার মাধ্যমে সিস্টেম ব্যবহার করে গেম খেলা ভিডিও দেখায় ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্র্যাশ অনুভব করা হয়। হলে একটি কম্পিউটার ক্র্যাশ হলে নীল পর্দা প্রদর্শিত হতে পারে।
৫. যদি কোন ব্যক্তি কম্পিউটার চালু করে আনওয়ান্টেড ভাবে প্রোগ্রামগুলো অটোমেটিকলি একটি খুলতে শুরু করে সে ক্ষেত্রে অজানা প্রোগ্রামের সমস্যা দেখা দেয়।
৬. কম্পিউটারের বিভিন্ন অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ দেখা দিলে অর্থাৎ যদি হঠাৎ কোন একাউন্ট লগইন করতে সক্ষম না হতে পারে অথবা দূষিত ফাইলগুলো মুছে ফেলতে পারেন সেই ক্ষেত্রে।
৭. অপ্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে প্রায়শ ব্রাউজ করার সময় বিজ্ঞাপন দেখা যায় ফলে ব্রাউজিং না করার সময় সেগুলো দেখেন তবে কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত।
৯. ইমপাইরেড সিকিউরিটি সলিউশনস দেখা দেয়।এক্ষেত্রে কম্পিউটার ভাইরাস আক্রমণের কারণে মসৃণ ভাবে কাজ করতে পারে না।
১০. ডিসপ্লে সমস্যা দেখা দিলে কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সে ক্ষেত্রে ডিসপ্লের বিভিন্ন রং অনুভূত দেখা দিতে পারে।
১১. এফেক্টেড অ্যাপ্লিকেশন প্রদর্শন করার মাধ্যমে বিভিন্ন ভাইরাস তৈরি করা হয়। এর ফলে কিছু অ্যাপ্লিকেশন কম্পিউটারে কাজ করতে পারে আবার কিছু নাও করতে পারে।
১২. ব্লক এন্টিভাইরাস সাইটে কম্পিউটার ইনফেক্টেড এবং এক্সেস অস্বীকার করতে পারে।
১৩. ডায়ালগ বক্সে হঠাৎ করে স্কিনে ডায়লগ বক্স দেখা দিতে পারি।
১৪. প্রিন্টিং করার ক্ষেত্রে ইনফেক্টেড কম্পিউটারের সাথে সম্পৃক্ত হলে সে ক্ষেত্রে প্রিন্টার কোন আদেশ না পেয়েও অনুপযুক্ত উপায়ে কম্পিউটারের বিভিন্ন ডকুমেন্ট প্রিন্ট করতে পারে।
১৫. কখনো কখনো না চাওয়া সত্যি অথবা কোন প্লেট ছাড়াই হোম পেজ পরিবর্তিত হয়। সে ক্ষেত্রে নতুন টুলবার দেখা যায়।
কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়
অধিকাংশ সময় কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা ভরে যায় ফলে কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় গুলো জানতে হবে। নিম্নে কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় গুলো তুলে ধরা হলো :-
১. অবাঞ্চিত ভাবে পপ আপ বিজ্ঞাপনে ক্লিক না করা এবং ভাইরাসের কারণে মেলওয়ার যুক্ত সম্ভাবনা এড়ানোর জন্য কম্পিউটার ভাইরাস ডাউনলোড না করা।
২. বিভিন্ন কম্পিউটারে যেগুলোর এন্টিভাইরাস সমূহ সফটওয়্যারের ম্যালের গুলোতে আক্রমণ করে এবং কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যায়। সেজন্য নিয়মিতভাবে স্ক্যান করা এবং ম্যালওয়্যার সনাক্তকরণ ও ব্লক দেয়ার মাধ্যমে সংক্রমিত থেকে ডিভাইসটিকে রক্ষা করা যায়।
৩. ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে ফেইল স্ক্যান প্রদর্শন করা। যদি কোন ফাইল শেয়ারিং বা প্রোগ্রাম কম্পিউটারের ভাইরাস দ্বারা আচরণ হয় তাহলে আক্রমণকারীদের জন্য সেটি একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে দেখা যায়। এক্ষেত্রে অপরিচিত সাইড অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার সমূহ ডাউনলোড করা থেকে এড়িয়ে চলুন।
৪. কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কম্পিউটারের সন্দেহজনক যে ইমেইল গুলো রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলা এবং সেগুলো ম্যানোওয়ার থেকে দূরে রাখা। হলে বিভিন্ন এন্টিভাইরাস দিয়ে এই সফটওয়্যার গুলো ইমেজ স্ক্যান করে রাখা।
৫. যে সকল ওয়েবসাইট সন্দেহজনক রয়েছে সেগুলোর ব্রাউজার সর্বদা আপডেট রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে অপরিচিত বা সন্দেহজনক সাইট সমূহ এড়িয়ে চলাই উত্তম।
৬. একটি অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে কম্পিউটারের শেষ সংরক্ষণ বা অপারেটিং সাইটগুলো আপডেট দিয়ে রাখা এবং অপ্রয়োজনে বন্ধ রাখা।
৭. পাইরেটের সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে কম্পিউটার ভাড়া সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানিয়েছি আশা করি,,, আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য এবং কম্পিউটার ভাইরাস থেকে প্রতিরোধের উপায়সমূহ জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।