শিক্ষা

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য :- আসসালামু আলাইকুম,,, আমাদের ওয়েবসাইটের ভাষার এক অনন্য বিষয় অর্থাৎ সাধু ও চলিত ভাষার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে উক্ত পুষ্টি আপনাদেরকে স্বাগতম। 

আমাদের উক্ত পোস্টে আমরা আপনাদেরকে সাধু ও চলিত ভাষার যে পার্থক্য রয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা এবং পার্থক্যসমূহ তুলে ধরার মাধ্যমে জানাচ্ছি। 

বাংলা ভাষাভাষীর সকল মানুষের জন্য বাংলা ভাষায় হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা। তবে একজন ব্যক্তি যখন বাংলা ভাষায় কথা বলে তখন বাংলা ভাষার মধ্যে দুইটি পার্থক্য চলে আসে।

এর মধ্যে একটি হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক থেকে সংগৃহীত ভাষা এবং অন্য একটি ভাষা হচ্ছে মানুষের মুখোমুখি প্রচলিত ভাষা। অর্থাৎ সাধু ভাষা এবং চলিত ভাষা।

এজন্য বাজারীতির বিভিন্ন প্রকার এবং প্রয়োগ ক্ষেত্রের ভাষার যে সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য রয়েছে তা সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য

সাধু ও চলিত ভাষার বা রীতির মধ্যে পার্থক্য নিম্নে তুলে ধরা হলো :-

১.সাধু রীতি→গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের অধিকারী। চলিত রীতি→ কৃত্রিমতাবর্জিত। এ রীতি মানুষের মনের ভাব প্রকাশে অপেক্ষাকৃত বেশি উপযোগী।

২. সাধু রীতি → সুনির্দিষ্ট ব্যাকরণের নিয়ম অনুসরণ করে চলে এবং এর কাঠামো অপরিবর্তনশীল। এর পদবিন্যাস সুনির্দিষ্ট এবং সুনিয়ন্ত্রিত। চলিত রীতি→পরিবর্তনশীল। কালের প্রবাহে এ রীতি পরিবর্তিত রূপ লাভ করেছে।

৩. সাধু রীতি→ নাটকের সংলাপ, বক্তৃতা ও কথোপকথনের অনুপযোগী ।চলিত রীতি→ সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য। এ রীতি নাটকের সংলাপ, বক্তৃতা ও কথোপকথনের জন্য বেশি উপযোগী।

৪. সাধু রীতির → ক্রিয়াপদের সাথে যে ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয় তা চলিত রীতি অপেক্ষা বড় এবং রীতিসিদ্ধ। অসমাপিকা ক্রিয়ার

ক্ষেত্রে একথা প্রযোজ্য। যেমন:-

  • সাধু রীতি :-

সমাপিকা→ লিখিয়াছি, লিখিব, লিখিত

অসমাপিকা→  লিখিয়া, লিখিতে, লিখিবার

  • চলিত রীতি:-

 সমাপিকা→লিখেছি, লিখব, লিখত,,

অসমাপিকা↓লিখে, লিখতে, লিখবার,,

৫. সাধু রীতিতে তৎসম শব্দের ব্যবহার বেশি এবং চলিত রীতিতে তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দের ব্যবহার বেশি। নিচে কিছু উদাহরণ দেখানো হলো :

সাধু→চর্মকার,, চলিত→চামার,,,

সাধু →কর্ম,,চলিত→ কাজ,,,

সাধু→ দধি,,চলিত→ দই,,, 

সাধু →ব্যাঘ্র,,চলিত→বাঘ,,, 

সাধু→ হস্ত,, & চলিত →হাত,,,

সাধু →বধূ,,, & চলিত → বউ,,,

সাধু → অদ্য,, & চলিত → আজ,,,

সাধু → অবতরণ,,, & চলিত→ নামা,,,,

৬. সাধু রীতিতে সর্বনাম পদ বড় এবং চলিত রীতিতে ছোট হয়। যেমন—

সাধু→ইহারা,,,& চলিত→ এরা,,,

সাধু → তাহারা,,,& চলিত→ তারা,,,

সাধু →কাহারা,,,& চলিত →কারা,,,

 সাধু →ইহা,, & চলিত →এ,,,

সাধু → কাহাদের,,,& চলিত →কাদের,,,

৭. সাধু রীতিতে তৎসম অব্যয় এবং চলিত রীতিতে তদ্ভব অব্যয় ব্যবহৃত হয়। যেমন—

সাধু→ পূর্বে,,,& চলিত → আগে,,,,

সাধু →যদ্যপি,,, & চলিত → যদি,,,

সাধু → সহিত,,, & চলিত → সাথে,,,,

সাধু → তথাপি,,,  & চলিত → তবুও,,,,

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য

৮. সাধু রীতিতে ক্রিয়াপদ পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয় এবং চলিত রীতিতে ক্রিয়াপদ সংক্ষিপ্তরূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন—

সাধু → আসিয়া,,, &  চলিত →এসে

সাধু → হাসিয়া,,,, & চলিত → হেসে,,,

সাধু → দেখিয়া,,, & চলিত → দেখে,,,

সাধু →হইল,,,,& চলিত → হল,,,,

সাধু →  দ্বারা,,, &  চলিত → দিয়ে,,,,

সাধু → হইতে,,,& চলিত →  হতে,,, 

সাধু → বিহনে,,, & চলিত → বিনে,,,

সাধু→ দিয়া,,, & চলিত → দিয়ে,,,,,

১০. ধ্বনি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে অভিশ্রুতি, স্বরসঙ্গতি ও সমীকরণে সাধু ও চলিত রীতির মধ্যে পার্থক্য দেখযায়। যেমন:-

রাখিয়া > রাইখা > রেখে,,,,

বাহিরে > বাইরে,,,

মূলা > মূলো,,,,

শুনিয়া >  শুনে,,,

ভিতর > ভেতর,,,

করিয়া > করে,,,,,

আমাদের উক্ত পোস্টের মধ্যে আমরা আপনাদেরকে সাধু  ও চলিত ভাষারীতির যে পার্থক্য রয়েছে তা তুলে ধরেছি। আশা করি, আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা সাধু ও চলিত ভাষারীতির যে পার্থক্য রয়েছে তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button