পদ কাকে বলে :-আমাদের ওয়েবসাইটের ব্যাকরণ রিলেটেড পদ নামক পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। উক্ত পোস্টের মাধ্যমে ব্যাকরণের অন্যতম আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ পথ সম্পর্কে আপনারা জানতে পারবেন। এছাড়াও আপনারা —পদ কাকে বলে,,, পদ কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ,,, ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।
ব্যাকরণের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পদ।। এছাড়া পদের প্রকারভেদসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।
যে কারণে প্রতিবছর বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা সহ অন্যান্য পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের জানার এবং শেখার জন্য পদ নিয়ে আলোচনা এবং পদ রিলেটেড বিভিন্ন প্রশ্ন এসে থাকে। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে পথ এবং পদের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।
পদ কাকে বলে
সাধারণভাবে বাক্যে যে সকল শব্দসমূহ ব্যবহৃত হওয়ার মাধ্যমে অর্থবোধক শব্দ তৈরি হয় তাকে পদ বলা হয়। সাধারণত অব দৈনন্দিন জীবনের সাথে যত শব্দ ব্যবহার করা হয় সেগুলোর এক একটি এক একটি পদ নামে পরিচিত।
যেমন :- ছেলেরা বল খেলছে, ছাড়াও বাংলা ব্যাকরণে যাকে পদ বলা হয়, ইংরেজিতে তাকে part of speech বলা হয়।
পদ কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ
সাধারণভাবে পদকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো :-
১.নাম পদ,,,
২. ক্রিয়া পদ,,,
বিভক্তিযুক্ত প্রতিটি শব্দকে এক একটি নাম পদ বলা হয়। সাধারণত নাম পদকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :-
১.বিশেষ্য,,
২. বিশেষণ,,
৩.সর্বনাম,,,
৪. অব্যয়,,,
১ক্রিয়া পদ:- বাকি বিভক্তিযুক্ত ক্রিয়ামুল বা ধাতুকে ক্রিয়া পদ বলা হয়। সুতরাং, পদ হলো মোট পাঁচ প্রকারের। সেগুলো হলো :-
১. বিশেষ্য,,,
২. বিশেষণ,,,
৩. সর্বনাম,,,
৪. অব্যয়,,,
৫. ক্রিয়া,,,
১. বিশেষ্য পদ:- সাধারণভাবে যে পদ দ্বারা কোন কিছুর নাম বজায় তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়। হঠাৎ বাংলা ব্যাকরণের মত অনুযায়ী যে কোন পদ দ্বারা যদি কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাত, সমষ্টি ইত্যাদি বা গুনের নাম যায় তাহলে তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়।
যেমন :- ঢাকা, চেয়ার, বই খাতা, মানুষ, পানি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রহিম, করিম ইত্যাদি।
এছাড়াও বিশেষ্য পদকে সাধারণভাবে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো :-
১. সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য,,,
২. জাতিবাচক বিশেষ্য,,,
৩. বস্তুবাচক বিশেষ্য,,,
৪. গুণবাচক বিশেষ্য,,,
৫. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য,,,
৬. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য,,,
১.সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য:- যদি কোন পদ দ্বারা সুনির্দিষ্ট কোন বস্তু, স্থান বা ব্যক্তিকে বোঝায় তাহলে তাকে সংজ্ঞা বাচক বিশেষ্য বলা হয়।
যেমন :- মেঘনা, হুমায়ুন, আফ্রিকা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি।
২. জাতিবাচক বিশেষ্য:- যদি কোন পদ দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন জাতিকে না বুঝি এসব কিছু একত্রে বুঝায় তাহলে সেই পদকে জাতিবাচক বিশেষ্য পদ বলা হয়।
যেমন :-পাহাড়, পাখি, শিক্ষার্থী, ছাগল, ইত্যাদি।
৩. বস্তুবাচক বিশেষ্য:-যে সকল বিশ্বস্ত পদ দিয়ে কোন বস্তুর নাম কি বোঝায় এবং কোন সংখ্যা নির্দেশ করা হয় না কিন্তু পরিমাপ করা যায় এরকম বোঝাই তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য পদ বলে।
যেমন : বালি, তেল, পানি, আটা, ডাল, চাল ইত্যাদি।
৪. গুণবাচক বিশেষ্য:- যে সকল বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন বস্তুর গুণের অবস্থা বা ভাব ইত্যাদি বোঝায় তাহলে তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলা হয়।
যেমন :- বেদনা, কষ্ট, দুঃখ, সুখ, অর্জনকারী, জয়িতা ইত্যাদি।
৫. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য:- বাংলা ব্যাকরণে বাক্যে ব্যবহৃত যেকোনো বিশেষ্য পদ দ্বারা যদি এক জাতীয় কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সমষ্টিকে বোঝায় তাহলে তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলা হয়।
যেমন :- পাল, দল, সমিতি, সভা, ছাত্রলীগ, ধর্ম, জাতি ইত্যাদি।
৬. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ:- যে সকল বিশেষ্য পথ দ্বারা অনুক্রিয়ার কাজের অবস্থা অর্থাৎ কাজের ভাব প্রকাশ করা হয় তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ বলা হয়।
যেমন :- কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্য, কোন কিছু দেখার কাজ, কোন কিছু পাওয়ার আশায় ইত্যাদি।
২. বিশেষণ পদ:- যে সকল পথ দ্বারা কোন বিশেষ্য সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ গুণ অবস্থা সংখা পরিমান ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাহলে তাকে বিশেষণ পদ বলে।
বিশেষণ পদকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো:-
১.নাম বিশেষণ,,,
২. ভাব বিশেষণ,,,
৩. সর্বনাম পদ :- বাংলা ব্যাকরণের মত অনুযায়ী বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পথকে ব্যবহার করা হয় তাকে সর্বনাম পদ বলা হয়।
যেমন:- বিশেষ্য পদ → করিম একজন ভালো ছেলে,, সর্বনাম পদ → সে প্রতিদিন বিদ্যালয় যায়। তার বুদ্ধি খুবই প্রকর। সবাই এজন্য তাকে ভালোবাসে।
উপরের বাক্যে আমরা দেখতে পাই যে, করিম একটি নাম এবং এই নামের পরিবর্তে আমরা তার’ ব্যবহার করেছি। করিম একটি নাম অর্থাৎ বিশেষ্য এবং এই বিশেষ্য পদের পরিবর্তে আমরা যে তার’ ব্যবহার করেছি তা হল সর্বনাম পদ।
সর্বনাম পদ হ্যাঁ প্রকারের হয়ে থাকে। সেগুলো যথাক্রমে :-
→ ব্যক্তিবাচক সর্বনাম:- তিনি, তারা, সে, তোমরা, তুমি, আমরা, আমি ইত্যাদি।
→ নির্দেশক সর্বনাম:- সেগুলো, সেটি, এটি, এ,, ইত্যাদি।
→ সাপেক্ষ সর্বনাম:- যিনি-তিনি, যা-তা, যে- সে,,, ইত্যাদি।
→ প্রশ্নসূচক সর্বনাম:- কে, কেন, কাদের, কারা, কি,, ইত্যাদি।
→ আত্মবাচক সর্বনাম:- আপনি, খোদ, নিজ, স্বয়ং,,,,ইত্যাদি
→ অন্যদিকবাচক সর্বনাম:- পর, অপর, অন্য,,, ইত্যাদি
৪. অব্যয় পদ :- বাকাংশে যে পথ সর্বদা অপরিবর্তনীয় হিসেবে থাকে এবং অপরিবর্তনীয় থেকে বাক্যের শোবর বর্ধন করে, বাক্যের বিয়োগের বা সংযোগের সমন্বয়ে ঘটায় তাকে অব্যয় পদ বলা হয়।
যেমন:- মেয়েটি গরীব কিন্তু সৎ।
অব্যয় পদকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :-
→ পদোন্বয়ী অব্যয়,,,
→সমুচ্চয়ী অব্যয়,,,
→অনন্বয়ীবা ভাববাচক অব্যয়,,,
→অনুকার অব্যয়,,,,
৫. ক্রিয়া পদ:- সাধারণত যে পথ দ্বারা কোন কাজ করা বা কোন কর্মকে বোঝানো হয় তাকে ক্রিয়াপদ বলা হয়। এছাড়াও যে পথ দ্বারা কার্যসম্পাদনকে বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
যেমন :- কাজটি আমি করব, সে খেলতে যাবে, করিম ভাত খায়,, ইত্যাদি।
ক্রিয়াপদ কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :-
১. সমাপিকা ক্রিয়া,,,,,
২. অসমাপিকা ক্রিয়া,,,,,
১.সমাপিকা ক্রিয়া:-যদি কোন ক্রিয়া দ্বারা বক্তার মনে প্রকাশ পায় সম্পূর্ণরূপে তাহলে সে ক্রিয়াকে সমাপিকা ক্রিয়া বলা হয়।
যেমন :- আমি অনেক কষ্টে কাজটি সম্পন্ন করেছি।
২. অসমাপিকা ক্রিয়া:- সাধারণত যে ক্রিয়া দ্বারা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্নরূপে প্রকাশ পায় না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলা হয়।
যেমন :- আজকে বিদ্যালয় গিয়ে আমি।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে পদ রিলেটেড বিভিন্ন তথ্য এবং প্রশ্নের উত্তর আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি, আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি পদ কাকে বলে এবং পদের বিভিন্ন প্রকারভেদের প্রকারভেদসমূহ সম্পর্কে যে সকল তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়েছেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।