সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না – কলা, দুধ, ডিম, খাওয়া যাবে কি?
সর্দি কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না: বর্তমান সময়ে ঋতু পরিবর্তনের কারণে সর্দি-কাশির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। অতিরিক্ত কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু খাবার মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু খাবার রয়েছে, যা কাশি নিরাময় করে। সর্দি কাশি হলে সেই খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
সর্দি-কাশি হলে কি খাওয়া উচিত না
সর্দি-কাশি হলে ঠান্ডা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে-
দুধ: কাশি হলে অনেকেই গরম দুধ খায়। কিন্তু দুধ খেলে গলায় আরাম হয় ঠিকই, কিন্তু দুধ ফুসফুস ও গলায় কিউকাস উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। তাই কাশি হলে দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। পানি স্বল্পতা বা ডিহাইড্রেশন : সর্দি-কাশি হলে গলা শুকনো রাখা যাবে না। তরল খাবার যেমন- স্যুপ খেতে পারেন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: যেসব খাবার খেলে কাশি বাড়ে যেমন- ব্রেড, পাস্তা, বিকড খাবার চিপস বা সুগারি ডেসার্ট ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সর্দি- কাশি হলে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত।
ভাজাভুজি: সর্দি হলে অনেক সময় মুখে রুচি থাকে না। তখন ভাজা খেতে ইচ্ছে করে। সুতরাং সর্দি কাশি হলে ফাস্টফুড জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে হবে।
টক জাতীয় ফল: টক জাতীয় ফলে থাকে সাইট্রিক এসিড। ফলে সর্দি কাশি হলে এই খাবার না খায় উত্তম। কারণ সাইট্রিক এসিড গলায় সংক্রমণ ঘটায় ও কফ বাড়িয়ে দেয়।
বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত
ঠান্ডা জনিত কারণে শিশুদের সর্দি কাশির পরিমাণ বেড়ে যায়। বড়দের তুলনায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম। শিশুদের সর্দি কাশি হলে ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করতে হবে।
সর্দি কাশি হলে সুষম পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হবে ফলে শিশুর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সেসব খাবার খাওয়াতে হবে।
শিশুকে বিভিন্ন রঙ্গিন ফল ও শাকসবজি খেতে উৎসাহিত করতে হবে যাতে করে শিশুর শরীর পুষ্টি সম্পন্ন হয়। শিশুকে চিকেন, মাছ, মটরশুঁটি এবং মসুর ডালের মতো চর্বিহীন প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খাওয়ান।
সর্দি-কাশি হলে কলা খাওয়া যাবে কি?
সর্দি-কাশি হলে অনেকে কলা খাওয়া বন্ধ করে দেয়, কারণ কলা খেলে ঠান্ডা বেড়ে যাবে এই ভয়ে। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। আরো রয়েছে কার্বনহাইড্রেট,ফাইবার,ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি।
কলা খেলে শরীরে পানির অভাব পূরণ হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন শীতে কলা খাওয়া যেতে পারে। কলা খেলে মিউকাসের পরিমাণ বৃদ্ধি হয়। তাই অনেকের বিশ্বাস করে সর্দি-কাশি, জ্বর হলে কলা খেলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়।
যদি দুই থেকে তিন দিন ধরে সর্দি-কাশি জ্বর হয়ে থাকে তাহলে সপ্তাহে তিন থেকে চার বার একটি পাকা কলা খেতে পারেন। কলাই হিস্টামিনের পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সর্দি কাশি,এলার্জি,চুলকানি থাকে তাহলে কলা না খাওয়া উত্তম।
সর্দি কাশি হলে কি ডিম খাওয়া যাবে কি?
সর্দি- কাশি হলে ডিম খাওয়া যেতে পারে।তবে সিদ্ধ ডিম খাওয়ায় উত্তম। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা সর্দি কাশি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ডিম হলো প্রোটিনের উৎস যা টিস্যু এবং পেশীর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অ্যামাইনো এসিড ধারণ করে রাখে।
ডিমে রয়েছে জিংক,আয়রন,পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন সি এর মত খনিজ পদার্থের উপস্থিতি যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। ডিম পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের উৎস, যা রক্তের শর্করা পরিমাণ কমায় এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
সর্দি -কাশি হলে ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে। উপরোক্ত পরামর্শ গুলো মেনে চললে সর্দি-কাশি সহজেই কমানো সম্ভব। সুতরাং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত।