
ইশরাক হোসেনের অভিযোগ: “উপদেষ্টা সজীব বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন, পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই”
ঢাকা, ১৭ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে চলমান জটিলতার মধ্যে বিএনপি নেতা ও সদ্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বৈধ ঘোষিত মেয়র ইশরাক হোসেন কড়া বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, সজীব ভুঁইয়া দায়িত্বশীল পদে থেকেও মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য গণমাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন এবং পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনে উপস্থিত হয়ে ইশরাক সাংবাদিকদের বলেন, “জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ এবং আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান দেখানো একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার অন্যতম কর্তব্য। কিন্তু বর্তমান উপদেষ্টা সেটা পালন করেননি।”
এর আগে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে বৈধ ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচন কমিশন সেই অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠায়। নিয়ম অনুযায়ী, এরপর শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কথা।তবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব গণমাধ্যমে বলেন, গেজেটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শপথ গ্রহণ সম্ভব হয়নি। এই মন্তব্যের জবাবে ইশরাক বলেন, “যদি সেটাই সত্য হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়রই হয়তো শপথ নিতে পারবেন না। এই ব্যাখ্যা দায়িত্ব এড়ানোর একটা অজুহাত ছাড়া কিছু নয়।”
ইতোমধ্যে ইশরাক কোনো আনুষ্ঠানিক শপথ ছাড়াই নগর ভবনে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন। আজ তিনি সিটি করপোরেশনের ৭০টি ওয়ার্ডের সচিবদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এর আগে গতকাল তিনি পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকদের সঙ্গে বসেন।
এদিকে, নগর ভবনের বাইরে চলছে টানা অবস্থান কর্মসূচি। ইশরাকের সমর্থকেরা “ঢাকাবাসী” ব্যানারে গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। পরদিন থেকেই নগর ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। এখন পর্যন্ত সেই অবস্থা বহাল রয়েছে।
ইশরাক হোসেন বলেন, “সরকার ও সংশ্লিষ্ট দফতরের উচিত জনগণের রায়কে সম্মান করে দ্রুত শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করা। নইলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ আরও বাড়বে।”
এই বিষয়ে এখনো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা সময়ই বলবে। তবে সিটি করপোরেশন কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা এবং প্রশাসনিক জটিলতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বাড়ছে উদ্বেগ।