শক্তি কি? শক্তির রূপ, প্রকার ও উদাহরণ
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আমাদের ওয়েবসাইটের শিক্ষা রিলেটেড এর শক্তি নিয়ে লেখা উক্ত আর্টিকেলে আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা শক্তি কি এবং শক্তির বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন
সাধারণত একজন মানুষের অথবা কোন একটি যন্ত্রে কাজ করার যে সামর্থ্য রয়েছে তা হলো শক্তি। তবে অবস্থান বেদে এবং বিভিন্ন সময় অনুযায়ী শক্তির বিভিন্ন রূপ পরিলক্ষিত হয়। এজন্য শিক্ষার্থীদের শক্তি সম্পর্কে যথাযথভাবে জানা ক্ষেত্রে শক্তি কি এবং শক্তির বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।
শক্তি কি
শক্তি হচ্ছে কাজ করার সামর্থ্য !বস্তুটির মাঝে যতটুকু কাজ করা হয়েছে বস্তুটির মাঝে ততটুকু শক্তি সৃষ্টি হয় এবং যে বল প্রয়োগ করছে তাকে ঠিক সেই পরিমাণ শক্তি দিতে হয়।
যে পরিমাণ ঋণাত্মক বা নেগেটিভ কাজ করা হয়েছে ঠিক ততটুকু শক্তি অপসারণ করলে এবং যে বল প্রয়োগ করেছে সে এই শক্তিটুকু কোনো না কোনোভাবে পেয়ে যায়। অর্থাৎ কোনো বস্তুর উপর
- ধনাত্মক কাজ করা → বস্তুটিকে শক্তি দেওয়া
- ঋণাত্মক কাজ করা → বস্তুটি থেকে শক্তিকে অপসারন করা।
তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ শক্তির কোনো দিক নেই এবং এটি একটি স্কেলার। যেহেতু কাজ করে আমরা শক্তি তৈরি করি কিংবা শক্তি খরচ করে কাজ করি তাই দুটোরই একই একক এবং একই মাত্রা।
- শক্তির একক J (জুল) শক্তির মাত্রা [W] = ML2T-2
শক্তির রূপ
বৈদ্যুতিক শক্তি দিয়ে আমরা যন্ত্রপাতি চালাই আবার রাসায়নিক শক্তি ব্যবহার করে তড়িৎ কোষ বিদ্যুৎ তৈরি করি। ভারী নিউক্লিয়াস ভেঙে বা হালকা নিউক্লিয়াস জোড়া দিয়ে আমরা যে নিউক্লিয়ার শক্তি পাই সেটা দিয়েও বিদ্যুৎ শক্তি তৈরি করি। খাবার থেকে পুষ্টি নিয়ে আমাদের শরীরে শক্তি তৈরি হয়, আমরা কাজকর্ম করি!
আমরা সাধারণত শক্তির বিভিন্ন রূপ দেখতে পাই। সেগুলো যথাক্রমে :- সৌর শক্তি,, নিউক্লিয় শক্তি,, রাসায়নিক শক্তি,, বিদ্যুৎ শক্তি,, আলোক শক্তি,, শব্দ শক্তি,, যান্ত্রিক শক্তি,, চৌম্বক শক্তি,, ইত্যাদি।
যান্ত্রিক শক্তির দুটি রূপ হতে পারে। তা হলো :-
১. গতিশক্তি এবং
২. স্থিতিশক্তি,,,,
১. গতিশক্তি (Kinetic Energy):-
অন্য বস্তুকে গতিশীল করে ফেলার অর্থ নিশ্চয়ই সেখানে বল প্রয়োগ হয়েছে এবং সেই বলের জন্য খানিকটা দূরত্ব যাওয়ার অর্থ নিশ্চয়ই সেখানে কাজ হয়েছে! কাজেই আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।
একটা বাস-ট্রাক বা গাড়ি যখন প্রচণ্ড বেগে ছুটতে থাকে তখন তার অনেক বড় গতিশক্তি থাকে। দুঘটনার সময় এই পুরো শক্তিটার কারণে গাড়ি ভেঙেচুরে যায়, প্রচণ্ড ধাক্কায় মানুষ মারা যায়।
মনে করি, F বল প্রয়োগ করলে, m ভরের একটা বস্তুকে সর্বোচ্চ s দূরত্ব সরানো হয়। তখন, এই F বল কর্তৃক সম্পাদিত কাজ W হচ্ছে
W = Fs
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র ব্যবহার করে,
আমরা জানি,,,
F = ma গতির সমীকরণ অনুযায়ী কোণো স্থির অবস্থা থেকে যদি যাত্রা শুরু করা হয়, তাহলে
S= 1/2 at2 এবং v = at
কাজ_W = Fs = mas = ma× 1/2 at 2
= 1/2 ma2t2 = 1/2 mv2
এজন্য বলা যায়— F বল কোনো বস্তুকে s দূরত্বে নিয়ে গেলে তার ভেতরে একটি শক্তির সঞ্চার হয়।
সে শক্তিটি হচ্ছে:
T = 1⁄2mv2
গতির সমীকরণ শেখার সময় আমরা দেখেছিলাম,,
v2 = u2 + 2as
এখন, দুইপাশে যদি 1/2 m দিয়ে গুণ করলে সূত্রটি দাঁড়ায়:
1/2 mv2 = 1/2 mu2 + mas
→ যদি ma কে পরিবর্তন করে F লিখা হয় এবং Fs কে পরিবর্তন করে W লিখা হয়, তাহলে সূত্রটি হবে →
1/2 mv2 = 1/2 mu2 + W
২. বিভব শক্তি (Potential Energy)
কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমরা বলেছিলাম যখন কোনো বল কোনো কিছুর ওপর পজিটিভ কাজ দিয়েছিলাম, দেখিয়েছিলাম একটা বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করে সেটাকে খানিকটা দূরত্বে নিয়ে গেলে করে তখন সেখানে শক্তির সৃষ্টি হয়। গতিশক্তি সম্পর্কে বলার সময় আমরা তার একটা উদাহরণও গতিশক্তি 1/2 mv2 বেড়ে যায় ।
তাই কোথাও কোনো গতিশক্তি নেই! যেহেতু যেদিকে F বল প্রয়োগ করা হয়েছে অতিক্রান্ত দূরত্বও x সেই দিকে, তাই কাজটি পজিটিভ, আমাদের কাজের সংজ্ঞা অনুযায়ী এখানে শক্তি সৃষ্টি হওয়ার কথা। কিন্তু সেই শক্তিটি কোথায়? কোনো কিছু গতিশীল নয়, তাই এখানে নিশ্চিতভাবে কোনো গতিশক্তি নেই ।
কোনো স্প্রিংকে সংকুচিত করে m ভরের বস্তু রেখে স্প্রিংটিকে ছেড়ে দিলে স্প্রিংটা ভরটার ওপর বল প্রয়োগ করে একটা দূরত্ব অতিক্রম করাতে পারত, যার অর্থ কাজ করাতে পারত।
অর্থাৎ এটি একটি শক্তি, গতিশক্তি না হলেও এটি অন্য এক ধরনের শক্তি। এই ধরনের সঞ্চিত শক্তিকে বলে বিভব শক্তি (Potential Energy)। এই শক্তিটি কোনো বস্তুর অবস্থা বা অবস্থানের জন্য তৈরি হয়।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে শক্তি কি এবং শক্তির বিভিন্ন রূপ নিয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে জানিয়েছি। আশা করি আমাদের পোস্টটি পাড়ার মাধ্যমে আপনারা শক্তি এবং শক্তির বিভিন্ন রূপ সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবেন।