যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইরানের পাল্টা জবাব: তেহরানের সামনে কোন কোন বিকল্প খোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় একযোগে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনায় পুরো অঞ্চলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, বাড়ছে যুদ্ধের শঙ্কা।

হামলার পরই প্রশ্ন উঠেছে ইরান কি চুপ করে থাকবে? নাকি দেবে পাল্টা জবাব?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের সামনে এখন নানা ধরনের প্রতিক্রিয়ার পথ খোলা থাকলেও, ভুল সিদ্ধান্ত তাদের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

কী বলছেন বিশ্লেষকেরা: আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক জ্যাঁ-মার্ক রিকলি মনে করেন, ইরানের প্রতিক্রিয়া হতে পারে তিন রকমের: এক, কোনো জবাব না দেওয়া; দুই, সরাসরি পাল্টা হামলা চালানো; তিন, সীমিত ও হিসেবি প্রতিক্রিয়া দেখানো।

তাঁর মতে, ইরান যদি একেবারে চুপ থাকে, তাহলে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত হানে, তাহলে ওয়াশিংটনের সামরিক প্রতিক্রিয়া ইরানের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তাই ইরান এমন একটি কৌশল নিতে পারে, যাতে প্রতিবাদ জানানো হয়, কিন্তু বড় ধরনের যুদ্ধ বাধে না।

অতীতের অভিজ্ঞতা কি কিছু বলে: বিশ্লেষকরা ২০২০ সালের সেই ঘটনাটির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। তার প্রতিশোধ নিতে ইরান তখন ইরাকে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে সে সময় ইরান আগে থেকেই সতর্ক করেছিল, যাতে প্রাণহানি না ঘটে। এবারও ইরান একই কৌশল নিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

হরমুজ প্রণালি বন্ধের সিদ্ধান্ত: হামলার পরপরই ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে তেল সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, যা বিশ্ববাজারেও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। তবে এই সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সেটি নিয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে।

পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয় পক্ষ কতটা সংযম দেখায়। কারণ, যেকোনো অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া নতুন করে একটি যুদ্ধের সূচনা করতে পারে, যার প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে।