ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে: রাসায়নিকভাবে এবং ভৌতভাবে পদার্থের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন লক্ষণীয় রয়েছে। তবে পদার্থের ভৌত পরিবর্তন কিভাবে ঘটে অথবা কাকে বলে এবং ভৌত পরিবর্তন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
এজন্য উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে পদার্থের ভৌত অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানাচ্ছি।
সাধারণভাবে পদার্থ বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে অথবা তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তাপমাত্রা অথবা অন্যান্য প্রাইভেট দিককে বিবেচনা করে পদার্থের বিভিন্নভাবে পরিবর্তন ঘটে।
তবে ভৌত পরিবর্তন একটি অন্যতম পরিবর্তন। পানিকে কেন্দ্র করে উদাহরণস্বরূপ হিসেবে বলে ভৌত পরিবর্তনের বিভিন্ন উদাহরণ দেওয়া যায়।
শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় গুলোর মধ্যে ভৌত পরিবর্তন হলো অন্যতম, এজন্য ভৌত পরিবর্তন সম্পর্কে জানা জরুরী।
ভৌত পরিবর্তন কি
কোন পদার্থের আকার আকৃতি পরিবর্তন হয় এবং অবস্থার পরিবর্তন হলে কিন্তু নতুন পদার্থ উৎপন্ন না হলে ওই পদার্থ বা পদার্থের ওই পরিবর্তনকে ভৌত পরিবর্তন বলা হয়।
যেমন একটি পানিকে তরল অবস্থা থেকে বাষ্পে পরিণত করা যায়। উক্ত পানিকে গনিভবন প্রক্রিয়ায় কঠিন পদার্থের পরিণত করা যায় পরবর্তীতে পুনরায় কঠিন থেকে পরিণত করা যায়।
অর্থাৎ পদার্থের আকার বাকৃতির পরিবর্তন হলেও তবে পদার্থের পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন কোন উপাদান তৈরীর না হওয়ার প্রক্রিয়া হল ভৌত পরিবর্তন।
ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে?
সাধারণভাবে কোন বস্তু অথবা পদার্থের বাহ্যিক পরিবর্তনকে ভৌত পরিবর্তন বলা হয়।ভৌত পরিবর্তন এর অন্যতম উদাহরণ হল পানি, কেননা পানিকে কঠিন থেকে তরলে পরিবর্তন হওয়া এটি একটি ভৌত পরিবর্তন।
যদি কোন পদার্থকে এর রূপ পরিবর্তনের জন্য বাহ্যিকভাবে কোন কিছু প্রয়োগের মাধ্যমে একটি অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় নেয়া হয় এবং পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় তবে সেই পরিবর্তনকে ভৌত পরিবর্তন বলে।
পানিকে তরল অবস্থা থেকে কঠিন অবস্থায় পরিণত করা যায় আবার পুনরায় তরল পানিকে কঠিন অবস্থায় পরিণত করা যায় তাই পানি হল ভৌত পরিবর্তন এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
ভৌত পরিবর্তন গুলো কি কি?
ভৌত পরিবর্তন বলতে কোন একটি পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন এবং পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসাকে বুঝায়।
→চিনিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা অধিক তাপ প্রয়োগে তরল করা ।
→লোহাকে তা প্রয়োগ করার ফলে তরলে পরিণত করা।
→পানিকে তাপমাত্রা প্রয়োগ করে অর্থাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে বাষ্পে পরিণত করা।
→কঠিন অবস্থার বরফকে তাপমাত্রা প্রয়োগ করে বা তাপমাত্রার বৃদ্ধি করে পানিতে পরিণত করা।
→কাজকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা।
ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে ভৌত পরিবর্তনের ৫ টি উদাহরণ
ভৌত পরিবর্তনের ৫ টি উদাহরণ
ভৌত পরিবর্তন এর পাঁচটি উদাহরণ নিম্নের তুলে ধরা হলো:-
১. বরফ কঠিন অবস্থায় থাকে এবং বরফকে তা প্রয়োগ করার ফলে তা পানিতে পরিণত হয়।
২. পানি সাধারণ অবস্থায় তরল থাকে এবং পানিকে পুনরায় তাপ প্রয়োগ করার ফলে তা আসবে পরিণত হয়।
৩. কাট একটি পদার্থ এবং সেই পদার্থকে তাপমাত্রা প্রয়োগে অর্থাৎ পুড়ানো হলে তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
৪. চিনি সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ এবং চিনিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে চিনি তরল হয়ে যায়।
৫. লোহা একটি কঠিন পদার্থ তবে লোহাকে তাপমাত্রা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি করানোর ফলে তা গলে তরল পদার্থের পরিণত হয়।
ভৌত পরিবর্তন ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য
ভৌত পরিবর্তন এবং রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে তুলে ধরা হলো :-
১. পদার্থের যে পরিবর্তনের ফলে কোন একটি পদার্থের আকার আকৃতি অথবা অবস্থার পরিবর্তন হয় তবে নতুন কোন পদার্থ উৎপন্ন হয় না সেই অবস্থাকে পদার্থের ভৌত পরিবর্তন বলে।
২. পদার্থের ভৌত ধর্মের যে পরিবর্তন রয়েছে সে পরিবর্তনগুলো শুধুমাত্র ভৌত পরিবর্তন এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।
৩. একটি পদার্থ ঘটনার ক্ষেত্রে যে অণুগুলো রয়েছে ভৌত পরিবর্তন এর ফলে সেই অনুগুলো পরিবর্তন হয় না।
৪. ভৌত পরিবর্তন কর সীমিত এবং সাময়িক সময়ের জন্য পরিবর্তন।
৫.ভৌত পরিবর্তন এর মাধ্যমে পদার্থের অনুগুলো ভেঙে শক্তির উৎপন্ন হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
৬. ভৌত পরিবর্তনের মাধ্যমে পদার্থের মূল উপাদানকে পুনরায় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
রাসায়নিক পরিবর্তন :-
১. পদার্থের যে পরিবর্তনের মাধ্যমে পদার্থগুলো ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থের পরিবর্তিত হয় তাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বলে।
২. পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পদার্থ সমূহের রাসায়নিক ধর্মের এবং ভৌত ধর্মের পরিবর্তন হয়।
৩. পদার্থের গঠনের পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন একটি অনুর সৃষ্টি হয় রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে।
৪. কোন একটি পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন মানে হল এই পদার্থের স্থায়ী একটি পরিবর্তন।
৫. কোন পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন হলে পদার্থটির শক্তির শোষণ এবং বিবর্তন ঘটে থাকে।
৬. রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে মূল পদার্থ কে পুনর উদ্ধার করা যায় না।
আরো পড়ুন: ভেষজ উদ্ভিদ কাকে বলে
ভৌত পরিবর্তনের ৫ টি বৈশিষ্ট্য
ভৌত পরিবর্তন এর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে তুলে ধরা হলো :-
→পদার্থের ভৌত ধর্মের যে পরিবর্তন রয়েছে সে পরিবর্তনগুলো শুধুমাত্র ভৌত পরিবর্তন এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।
→একটি পদার্থ ঘটনার ক্ষেত্রে যে অণুগুলো রয়েছে ভৌত পরিবর্তন এর ফলে সেই অনুগুলো পরিবর্তন হয় না।
→ভৌত পরিবর্তন কর সীমিত এবং সাময়িক সময়ের জন্য পরিবর্তন।
→ভৌত পরিবর্তন এর মাধ্যমে পদার্থের অনুগুলো ভেঙে শক্তির উৎপন্ন হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
→ভৌত পরিবর্তনের মাধ্যমে পদার্থের মূল উপাদানকে পুনরায় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে ভৌত পরিবর্তন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি, আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনি ভৌত পরিবর্তন সম্পর্কে যে সকল তথ্য জানতে চেয়েছেন যেমন ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে এর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য এবং উদাহরণ সমূহ ইত্যাদি যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।