ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ অবশেষে সহিংস রূপ নেয়। সোমবার দুপুরে শিমরাইল সাতপাড়া এলাকায় শুরু হওয়া সংঘর্ষে আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
দলীয় নেতৃত্ব ও এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির সভাপতি আবদুল আওয়াল ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামালের অনুসারীদের মধ্যে এই বিরোধ অনেকদিন ধরেই চলে আসছিল। মোস্তাফা কামাল বর্তমানে হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে থাকলেও তাঁর সমর্থকরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের পর একটি সামান্য ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে মোস্তাফা কামালের সমর্থকরা আবদুল আওয়াল ঘনিষ্ঠ এক নেতার বাড়িতে হামলা চালায়। লোহার রড, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চালানো এই হামলার খবরে আওয়ালপন্থীরাও সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলে টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে। ককটেল বিস্ফোরণ, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহারে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আহতদের মধ্যে কামাল (২৪), জসিম (৪০), কিবরিয়া (৫০) ও সুমন (৪৫) নামে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের পরপরই কসবা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করেছে।
এখনও পর্যন্ত কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করেনি, তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে।
নাসিরনগরেও উত্তেজনা, জমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২০: একই দিনে, সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে থানার ওসিসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী দুটি পরিবারের মধ্যে জমির দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। আদালতে মামলার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশ হলেও সমাধান আসেনি। সোমবার সকালে এক পক্ষ জোরপূর্বক ঘর তুলতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়, আর সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।
খবর পেয়ে নাসিরনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
