বাংলাশিক্ষা

বিরাম চিহ্ন কাকে বলে? বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম

বিরাম চিহ্ন কাকে বলে: বাংলা ভাষায় যেকোনো একটি বাক্য লেখার ক্ষেত্রে বিরাম চিহ্ন ব্যবহার রয়েছে। একটি অনুচ্ছেদ পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি বাক্য কোথায় শেষ এবং কোথায় শুরু এবং কোথায় কত সেকেন্ড থামতে হয় তা বিরাম চিহ্নের উপর নির্ভর করে। এজন্য বিরাম চিহ্ন সম্পর্কে আমরা আপনাদেরকে যথাযথভাবে বিস্তারিত আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি। 

বিভিন্ন চিহ্ন ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি অনুচ্ছেদ পড়ার ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদের প্রতিটি বাক্য পড়ার গুরুত্ব এবং অর্থবোধ প্রাধান্য তুলে ধরা হয়। 

এজন্য বাংলা ভাষায় বিভিন্ন কবিতা, গল্প অথবা অনুচ্ছেদ পড়ার পূর্বে কিভাবে পড়তে হবে তা জানার পাশাপাশি বিরাম চিহ্ন সম্পর্কে যথাযথভাবে জ্ঞান অর্জন প্রয়োজন। 

বিরাম চিহ্ন সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে লিখতে পারবে এবং বাংলা ভাষায় পড়তে সক্ষম হবে। 

বিরাম চিহ্ন কাকে বলে

বাংলা ভাষার বিভিন্ন তথ্য বা বিভিন্ন মতামত অথবা বক্তব্যসমূহ লেখার মাধ্যমে বা বলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় থামতে হয়।কথা বলার মাধ্যমে অথবা লেখার মাধ্যমে মানুষের আবেগ অনুভূতি বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে কোন জায়গায় অথবা কোন চিহ্ন ব্যবহার করে কতটুকু থামতে হবে তা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যে চিহ্নসমূহ ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে বিরাম চিহ্ন বলে। 

বিরাম চিহ্ন কত প্রকার

বিরাম চিহ্ন ১৪ প্রকারের। যথা :-

পিরিয়ড,,,

প্রশ্ন চিহ্ন,,,

বিস্ময়বোধক বিন্দু,,,

কমা,,,

কোলন,,,

 সেমিকোলন,,, 

ড্যাশ,,,,

হাইফেন,,,,

প্রথম বন্ধনী,,,

দ্বিতীয় বন্ধনী,,,

তৃতীয় বন্ধনী,,,

 অ্যাপোস্ট্রোফ,,,,

উদ্ধৃতি চিহ্ন,,

 উপবৃত্ত।

বিরাম চিহ্ন কয়টি | বিরাম চিহ্ন মোট কয়টি

বাংলা ভাষায় বিভিন্নভাবে লেখার ক্ষেত্রে বিরাম চিহ্ন রয়েছে মোট ১৪ টি। 

১.কমা বা পাদচ্ছেদ,,,,

২.সেমিকোলন,,

 ৩.দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ,,

৪.প্রশ্নবোধক চিহ্ন?,,,,

৫.কোলন,,,

৬.কোলন ড্যাশ,,,

৭.হাইফেন,,,

৮.ইলেক বা লোপ চিহ্ন’,,,

৯.যুগল উদ্ধৃতি চিহ্ন“,,,,

১০.ব্র্যাকেট (বন্ধনি চিহ্ন),,,,

১১.ধাতু দ্যোতক চিহ্ন,,,

১২.সমান চিহ্ন,,,,

১৩.বর্জন চিহ্ন,,

১৪.সংক্ষেপণ চিহ্ন,,,,

বিরাম চিহ্ন কাকে বলে বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম
বিরাম চিহ্ন কাকে বলে বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম

বিরাম চিহ্ন এর উদাহরণ

বিরাম চিহ্ন ব্যবহারে কিছু বাক্য নিম্নে উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরা হলো :-

১. আহ! কি চমৎকার দৃশ্য। 

২. জননী! আজ্ঞা দেহ মরে যায় রনস্থলে। 

৩.ঘু-ম -আ-সে -না ;দু- চো-খে- আ-মা-র।

৪.সংস্কার- পরিমার্জন ;অগাধ- প্রচুর।

৫.সোনা -রুপা চায়না আমি। 

৬.বনের পাখি বলে, ‘না ‘।

৭.( বিরক্ত সুরে) কি সব আবোল তাবোল বলতে শুরু করেছে। 

৮.শিক্ষক বললেন, “আগামীকাল তোমাদের ইংরেজি পরীক্ষা নেব। “

৯. সাপুড়ে মেয়ে বিলাসী বলিল,  “ঠাকুর, একটু সাবধানে খুঁড়ো।

১০. সুরে তব এত কান্না, বুকে তব কা’র লাগি এত ক্ষুধা জাগে? “

বিরাম চিহ্ন ব্যবহারের নিয়ম

১. কমা বা পাদচ্ছেদ →১ (এক) বলতে প্রয়োজনীয় সময়,,

২. সেমিকোলন → ১ বলার দ্বিগুণ সময়,,,,

৩.দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ →এক সেকেন্ড,,

৪.প্রশ্নবোধক চিহ্ন? →এক সেকেন্ড,,

৫.বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন! →এক সেকেন্ড,,

৬.কোলন:→ এক সেকেন্ড,,

৭.ড্যাশ → এক সেকেন্ড,,

৮.কোলন ড্যাশ → এক সেকেন্ড,,

৯.হাইফেন- →থামার প্রয়োজন নেই।

১০. ইলেক বা লোপ চিহ্ন’→থামার প্রয়োজন নেই।

১১.একক উদ্ধৃতি চিহ্ন’ ”এক’ উচ্চরণে যে পরিমান সময় লাগে।

১২.যুগল উদ্ধৃতি চিহ্ন“→থামার প্রয়োজন নেই।

১৩.ধাতু দ্যোতক চিহ্ন,→ থামার প্রয়োজন নেই।

১৪.সমান চিহ্ন= → থামার প্রয়োজন নেই।

বিরাম চিহ্নের ব্যবহার অনুচ্ছেদ

নিম্নে একটি অনুচ্ছেদে বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করার মাধ্যমে তুলে ধরা হলো :-

  • ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ন্যাপ (ওয়ালী)  বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিল।  তবে সেই সমস্ত অর্জনের লক্ষ্য ছিল একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। 

* নেতা।।

হাফেজ।। এই লাশটা।।

নেতা।। লাশ? কোন লাশটা? 

হাফিজ।।বুলেট  খাওয়া। ছাত্র, খুলি নেই। 

* তোমার হৃদয় কি পাষাণে গড়া! 

একটিবারও আমার কথা ভাবলে না! 

* দয়া করে আমার কথা শুনুন! 

* ফরিদ: আব্বা, আমি যাই। 

 আব্বা: কোথায়? 

 ফরিদ :ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসি। 

আব্বা:  না না। তুই যেতে পারবি না। 

* অর্ধ -চন্দ্র ;হস্ত -হাত 

সংস্কার -পরিমার্জন; অগাধ- প্রচুর।

ধর্ম -অধর্ম, লাভ-ক্ষতি, উত্তম- অধম। 

* তোমার অপেক্ষায় ছিলাম -আজও অপেক্ষায় আছি।। 

* ‘পঙ্কজ ‘শব্দের অর্থ ‘পদ্ম ‘।

বলে তারা,” হে পথিক! বল বল তব প্রাণ কোন ধন মাগে? 

সুরে তবু এত কান্না, বুকে তব কা’র লাগি এত ক্ষুধা জাগে? পূজারিণী :কাজী নজরুল ইসলাম। 

* বনের পাখি বলে, ‘না’

আমি শেখানো গান নাহি গাই। ‘

খাঁচার পাখি বলে,  ‘হায়, 

আমি কেমনে বনের গান গাই। 

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 

আরো পড়ুন: জটিল বাক্য কাকে বলে

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে বিরাম চিহ্ন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য এবং ব্যবহার আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। 

আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বিরাম চিহ্ন সম্পর্কে যে কোন তথ্য জানতে পারবেন এবং যথাযথভাবে বিরাম চিহ্নের ব্যবহার জেনে তা প্রয়োগ করতে পারবেন এবং আমাদের পোস্টের  মাধ্যমে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button