বিজ্ঞান

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা – বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা: পৃথিবী এবং সুন্দর দেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য জীববৈচিত্র্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উক্ত পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ,

জীব বৈচিত্র্যের স্বরূপ কেমন,জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পদ্ধতি, জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব, জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি ও প্রতিকার ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে যথাযথভাবে জানতে পারবেন। 

সুন্দর পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে গঠন করা সম্ভব। তবে জীববৈচিত্র্য বা সুন্দর পৃথিবী ও দেশকে সুন্দর রাখার ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্য কে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও পরিবেশের সাথে খাপ  খেয়ে টিকিয়ে রাখার প্রয়োগ ব্যবহার করতে হবে। 

ফলে প্রকৃতিতে মানুষকে বেঁচে থাকার পাশাপাশি অন্যান্য  পশুপাখিকে যথাযথভাবে টিকে থাকার জন্য এবং   জীববৈচিত্র্যের বিভিন্ন ক্রমধারায় বিভিন্ন প্রাণীকে বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব হল মানুষের। যার মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন বৈচিত্র্যকে পৃথিবীর মাঝে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। 

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদের মধ্যে যে বৈচিত্র রয়েছে তা হলো জীববৈচিত্র্য।  জীববৈচিত্রের কল্যাণে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ জীববৈচিত্র্য পৃথিবীর অন্যতম চালিকাশক্তি। 

এশিয়ার মধ্যে অন্যতম ও সুন্দর একটি দেশ হলো বাংলাদেশ। এদেশে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকার পরেও দেশের জীববৈচিত্র্য পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সমৃদ্ধশীল। 

কেননা বিভিন্ন প্রকার বাস্তুতন্ত্রের প্রয়োগে প্রাণী এবং উদ্ভিদের বৈচিত্র উক্ত দেশটিকে বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ থেকে প্রতিরোধ করার মাধ্যমে টিকিয়ে রেখেছে। 

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের জলবায়ু বিভিন্ন রকম হওয়ার পরেও স্থিতিশীলতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের জলবায়ু হলো নাতিশীতোষ্ণ। এক্ষেত্রে মানব প্রজাতির সহ বিভিন্ন প্রজাতির বসবাসীর জন্য একটি উপযোগী দেশ  হলো বাংলাদেশ।  এখানে বিভিন্ন প্রজাতিগত বৈচিত্রের মাধ্যমে আলাদা আলাদা অঞ্চল বেঁধে উদ্ভিদ ও প্রাণে রয়েছে। 

তাছাড়া গত কয়েক শতাব্দী অনুযায়ী সারা বিশ্বব্যাপীর তুলনায় জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাওয়ার পরেও বাংলাদেশে তা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।  

ভৌগলিক বিবেচনায় বাংলাদেশী ইন্দো বার্মা অঞ্চলের বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্পট এলাকার অন্তর্ভুক্ত এবং ধারণা অনুযায়ী এখানে প্রায় ৭ হাজার এন্টোমিক উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে।  

তাদের মধ্যে ৬৮ হাজার প্রজাতি হলো শিম জাতীয়।  এছাড়াও ২৯ টি প্রজাতি রয়েছে অর্কিডের, এবং তিনটি প্রজাতি রয়েছে জিমনোস্পার্মের। বাংলাদেশে আনুমানিক  ৫ হাজার ৭০০ প্রজাতির  Angiosperms এবং ১৭০০ pteridophytes রয়েছে।  

বাংলাদেশের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ এবং মানব প্রজাতি বসবাসের উপযোগী হওয়ার অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে এই অঞ্চলের প্রজাতিগত বৈচিত্র্য।

গত কয়েক শতাব্দী ধরে সারা বিশ্ব ব্যাপী জীববৈচিত্র্য হ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার চাপ, গ্রামীণ দারিদ্র এবং বেকার সমস্যার কারনে এই অঞ্চলেও ইস্যুটি দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল চট্টগ্রামের জরিপ অনুযায়ী ফরেস্টিক অঞ্চলের মধ্যে চট্টগ্রাম একটি অন্যতম অঞ্চল হিসেবে পরিণত হয়েছি। যেখানে স্তন্যপায়ী প্রজাতির সংখ্যা রয়েছে ১১৩ টি, ৬২৮ টি প্রজাতির পাখি,

১২ টি প্রজাতির সরীসৃপ, ২২ টি প্রজাতির উভচর, ১৬৪ টি প্রজাতির শেওলা, ৭০৮ টি প্রজাতির  স্বাদু পানির মাছ, এবং অতি ক্ষুদ্র কীট রয়েছে ১৯ প্রজাতির, বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ রয়েছে ২৪৯৩ টি প্রজাতির। 

এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক গবেষণা অনুযায়ী জানা যায় যে মাত্র 17.5% বনভূমি আছে, এবং বাংলাদেশে তাদের মধ্যে ৬% ভালো ও মজুদ বিদ্যমান।

ফলে এ অঞ্চলের অর্থাৎ বাংলাদেশের বার্ষিক বন উজাড় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ যা ৩ দশমিক ৩% হয়েছে। এরপরে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের হ্রাসের সম্ভাব্য কিছু কারণ দেখা দিয়েছে। 

বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের মানুষ ও বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ প্রকৃতির সম্পদের উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। সে ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্য সেবা প্রদান করার মাধ্যমে বাস্ত সেবা সহ জীবিকা ও সামাজিক বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি অর্থনৈতিক

কাঠামোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন এক অপরিহার্য বিষয়। এজন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাংলাদেশের সকল মানুষের এগিয়ে আছে আসা উচিত। 

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি দশকে বিশেষ করে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র সংরক্ষণের কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

এরমধ্যে জীব বৈচিত্র সমৃদ্ধ এলাকাগুলোকে জাতীয় উদ্যান বা বন ও প্রাণী অভরায়ণ্য ইত্যাদি বিভিন্ন সমাধানের ক্ষেত্রে এবং বৈচিত্র সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে  পদক্ষেপ গুলো কার্যকর। 

যে সকল জীবিত প্রজাতি রয়েছে বিশেষ করে বিপন্ন প্রজাতিগুলো বা বন্যপ্রাণীগুলোর প্রাকৃতিক আবাসস্থল এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করার পদ্ধতি রয়েছে। 

যথা সম্ভব পরিমিত পরিমাণে গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশকে সংরক্ষণ করা যায়। এক্ষেত্রে পরিবেশের বিভিন্ন জীববৈচিত্র্য বা বিভিন্ন শ্রেণীর ও বৈচিত্র্যের প্রাণিসমূহের বেঁচে থাকার জন্য প্রাকৃতিক সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। 

পাশাপাশি যে সকল পশুপাখি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে তাদের বংশপরম্পরায় সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীদের যে সকল প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো চাহিদা বা পূরণ করার মাধ্যমে জীব বৈচিত্র্য কে সংরক্ষণ করা যায়। 

সংরক্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ করার মাধ্যমে জাতীয় উদ্যান এবং পবিত্র গ্রোভ, বন্য পানিদের অভয়ারণ্য ইত্যাদি পদ্ধতি প্রচলন এর মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায়। 

বাংলাদেশের সহ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বনে বসবাসকারী প্রাণীদের শিকার করে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্তির পথ দ্বারা হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে তাদের টিকিয়ে রাখার জন্য বন্যপ্রাণী শিকার থেকে দূরে থাকা এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বর্ণনা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

জীববৈচিত্র্যের স্বরূপ কেমন

জীববৈচিত্রের সড়ক হল পৃথিবীর বিভিন্ন জৈবিক বৈচিত্র এবং পরিবর্তনশীলতা। এক্ষেত্রে জীববৈচিত্র স্বরূপ সম্পর্কে অধ্যাপক হ্যামিলটন এর মতে, 

জীববৈচিত্র স্বরূপ হল এমন একটি পর্যায়ে যেখানে মাটি এবং জলবায়ুর মাধ্যমে বসবাসকারী সকল প্রাণী উদ্ভিদ এবং অণুজীবদের বাস্তুতান্ত্রিক প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। 

এছাড়াও জীবজগতের বিভিন্ন অনুজীব উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের পরিবেশগত, প্রজাতিগত এবং দিনগত যে বৈচিত্র্য পার্থক্য দেখা যায় তা হল জীববৈচিত্র্যের স্বরূপ ও দৃষ্টান্ত। 

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পদ্ধতি

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতির রয়েছে। পদ্ধতি সমূহ যথাক্রমে :-

১. গাছপালা রক্ষা করা, কৃষি প্রাণী ও গবাদি পশু রক্ষা করা। উদ্ভিদ, প্রজাতি ও অন্যান্য প্রাণীদের খাদ্য নিরাপত্তা, জীবিকা নির্বান করা ও অর্থনীতিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে জনসংখ্যার মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা ও অভিযোজন ক্ষমতা বজায় রাখার পদ্ধতির প্রয়োগে জেনেটিক বৈচিত্র সংরক্ষণের প্রতি ফোকাস রাখা উচিত। 

২. বিভিন্ন প্রজাতির জনসংখ্যা পুনরুদ্ধার করার মাধ্যমে বিপন্ন যে সকল প্রজাতিগুলো রয়েছে সেগুলোকে যথাযথভাবে পরিবেশের ভারসাম্য বা পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার ব্যবস্থা তুলে ধরা। 

এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীদের বাসস্থান পুনরুদ্ধার করা, বন্দী প্রজনন কর্মসূচি ব্যাখ্যা করা, শিকার ও বাসস্থান ধ্বংসের হুমকির মুখ থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে জনগণকে সচেষ্টার থাকার উদ্যোগী করে গড়ে তোলা। 

৩. দীর্ঘমেয়াদি যে সকল টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করে প্রাকৃতিক সম্পদের দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।

এছাড়াও মানুষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বৈচিত্রের উপরে সকল নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে সেগুলো কমানোর ক্ষেত্রে সহযোগি ভূমিকা পালন করা। 

৪. অবিরাম হারে বন উজাড় করণ বন্ধ করার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি কমানো যায়। একটি নির্দিষ্ট বাস্তু তন্ত্র কে ব্যাহত করা বা আবাসস্থল ধ্বংস করার প্রক্রিয়া হল বন উজার করন প্রক্রিয়া। 

এছাড়াও কঠোর পরিমাণে সুরক্ষা প্রদান ও জনসচেতন সচেতনতার মাধ্যমে বন উজান উজাড় করণ বন্ধ করার ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো যায়। 

৫. শিখার করা থেকে শুরু করে অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা ইত্যাদি প্রয়োগ নিষিদ্ধ করে জীববৈচিত্রকে মারাত্মক হুমকির হাত থেকে বাঁচানো যায়।

এছাড়াও সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সংরক্ষণ সংস্থাগুলো কঠোর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী অপরাধের প্রতি নজর ধারী করার মাধ্যমে চোরাচালান ও বন উজাড় করণ পাশাপাশি বিপন্ন প্রজাতির রক্ষা ও অবৈধ বন্যপ্রাণী পণ্যের চাহিদা কমানোতে সকলের সশস্ত্র ভূমিকা থাকার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। 

৬. সর্বোপরি জনসচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এবং জীববৈচিত্র্যের মূল্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে জানানোর মাধ্যমে বৈচিত্র সংরক্ষণ করা যাবে। 

জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব

জীববৈচিত্র্য হলো বিভিন্ন ধরনের জীবের সমষ্টি আলাদা আলাদা ভাবে বোঝানো বা আলাদা আলাদা প্রক্রিয়ায় তাদের বাসস্থান ও কর্মসংস্থান সম্মুখে বোঝানো। মূলত জীববৈচিত্র্য হলো পৃথিবীতে যে সকল জীব রয়েছে তাদের সমষ্টি বা আলাদাভাবে বিচরণ সমূহ। 

জীবজগতের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য এবং কার্যকারিতা বজায় রাখার একটি মৌলিক ভূমিকা হল পরিবেশগত গুরুত্ব। পরিবেশের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণী বেঁচে থাকে। 

এক্ষেত্রে আবহাওয়া বা পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন উদ্ভিদ তাদের জীবন পরিচালন খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়। 

এছাড়াও বিভিন্ন কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, বীজ বিচ্ছুরণ, পরাগায়ন, সাইক্লিন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে পরিবেশগত বাস্তুতন্ত্রের প্রক্রিয়া মুখ্য।

পাশাপাশি জীববৈচিত্রের অর্থগত গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক খাত ও মূল্যবান অর্থনৈতিক সম্পদের ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র ইকোসিস্টেম পরিসেবা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। 

এছাড়াও মৎস্য, বনজ, কৃষি, পর্যটনদের জন্য বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রাণী প্রজাতি এবং মানুষের বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে অর্থনৈতিকভাবে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব অপরিসীম। 

মানুষের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিষেবা চিত্ত বিনোদন ইকো ট্যুরিজম স্থানীয় অর্থনীতির ও কর্মসংস্থান ইত্যাদি পরিষেবা দেয়ার ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি ও প্রতিকার

পৃথিবীতে যে সকল জীববৈচিত্র্য রয়েছে সেগুলো মানুষের ব্যবহার ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের ফলে ক্রমান্বয়ে চোখের মধ্যে রয়েছে।  মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বাস্তুতন্ত্র কে বিশৃঙ্খল এমনকি বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। 

এছাড়াও এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি স্বরুপ।

ফলে বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে, আগামী কয়েক শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতির প্রায় অর্ধেক নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হলেও বাংলাদেশের নানা প্রজাতির বর্তমান সময়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

বর্তমানে (IUCN)ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার এর তত্ত্বাবধান অনুসারে,  বাংলাদেশের প্রায় ২৩ টি প্রজাতি রয়েছে যে সকল বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব প্রায় হুমকির সম্মূখে।

ফলে দেশের প্রায় ২৯ টি বর্ণ প্রজাতির অস্তিত্ব ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে।  যার ফলে ঔষধ ও পরিবেশ বস্ত্রের উপাদান জোগাড় করার কারণে এবং মানুষের বাসস্থান তৈরির জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশের প্রায় ১২৫টি বৃক্ষ প্রজাতি রয়েছে যা বর্তমান সময়ে বিপন্ন। মানবজাতির সকল প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্যান্য বিষয় যেমন বনাঞ্চল উজার, সমুদ্র, জলাশয় ইত্যাদি নিজেদের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করে নষ্ট করছে। 

ফলে সুন্দরবনের ভাওয়ালের গড় সহ মধুপুর সুন্দরবন এবং বিভিন্ন বনভূমিতে বিদ্যমান থাকা বিভিন্ন প্রাণীর যেমন:  মিঠা পানির কুমির, বনমহিস, রাজশকুন,  বনো হাঁস, অজগর, সরীসৃপ হরিণ, চিত্রা হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ইত্যাদি বিলুপ্ত হতে চলেছে, এবং তাদের জীবনদারা হুমকির সম্মুখীন। 

এ সকল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে মানুষকে উৎসাহিত হতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সেখানকার অধিবাসী উদ্ভিদ এবং বনভূমির জন্য তা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সকল মানুষকে উদ্যোগী হতে হবে। 

পাশাপাশি সরকার কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে  এ বিষয়ে সকলকে উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে যথেষ্ট জোড়ালো ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। 

আরো পড়ুন: উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য

সময়ের সাথে সাথে জীববৈচিত্র্য এবং জীবগুলো যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায় সে ক্ষেত্রে তাদের জীববৈচিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে চলে থাকা বা ক্রমান্বয়ে প্রকৃতিকে সুন্দরতম বৈচিত্র্য উপহার বা রক্ষা করার ক্ষেত্রে মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে।এছাড়াও সুন্দর পৃথিবী, সমৃদ্ধ ও বোর্ডিং করে তোলার জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষা পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। 

আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জীববৈচিত্র সম্পর্কিত যে সকল তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button