
যশোরে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের পর খুন: আটকের পর একজনের স্বীকারোক্তি
যশোর, ১৩ জুন ২০২৫:
ঈদের ছুটিতে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নির্মমতার শিকার হলো খুলনার এক শিশু। যশোরের মনিরামপুরে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক দুইজনের একজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের দায় স্বীকার করেছে।
শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল শিশুটি। শনিবার সকালে বাড়ির কাছের একটি ডোবার ভেতর কচুরিপানার নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত শিশুটি খুলনা মহানগরের সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। ঈদ উপলক্ষে মায়ের সঙ্গে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হানুয়ার গ্রামে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল।
কি ঘটেছিল সেদিন?
শুক্রবার বিকেলে বাড়ির উঠানে খেলছিল শিশুটি। একপর্যায়ে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও সে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা ও প্রতিবেশীরা সারারাত খোঁজাখুঁজি করেন। শনিবার সকালেই বাড়ির অদূরে ডোবার পাশে কচুরিপানার স্তূপের নিচে শিশুটির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ বলছে কী?
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের একজন সম্পর্কে নিহতের আত্মীয় এবং শিশু থাকাকালেই সে প্রায়ই ওই বাড়িতে যাতায়াত করত।
“আটকদের একজন আমাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। আমরা এখন বিস্তারিত তদন্ত করছি,” বলেন ওসি।
মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে মাঠে নেমেছে।
গ্রামের মানুষের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় হানুয়ার গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশুটির মৃত্যুতে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, “শুধু বেড়াতে এসেছিল মেয়েটা। এমন মর্মান্তিক পরিণতি আমাদের কল্পনার বাইরে। আমরা এর বিচার চাই।”
সামাজিক মাধ্যমে নিন্দার ঝড়
এই নৃশংস ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নেটিজেনদের অনেকেই দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।