ন্যানো টেকনোলজি কি? ব্যবহার, সুবিধা-অসুবিধা
ন্যানো টেকনোলজি কি :- সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আমাদের ওয়েবসাইটের প্রযুক্তি রিলেটেড উক্ত পোস্টটিতে আপনাদেরকে স্বাগতম।
আমাদের উক্ত পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা — ন্যানো টেকনোলজি কি,, ব্যবহার,, সুবিধা,,,, ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বর্তমান সময় প্রযুক্তির যুগ। এজন্য বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে নতুন নতুন তথ্য ও আবিষ্কারের বিভিন্ন পদ্ধতি উন্মোচিত হচ্ছে।
পাশাপাশি নিউ টেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি ব্যবস্থা। মানব জীবনকে উন্নতির দিকে অগ্রসর করার ক্ষেত্রে এর প্রভাব উল্লেখযোগ্য। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে ন্যানো টেকনোলজি সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ন্যানো টেকনোলজি কি
10^-9 মিটারকে ন্যানোমিটার বলে এবং বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে 1 থেকে 100 ন্যানোমিটার আকৃতির কোনো কিছু তৈরি করা এবং ব্যবহার করাকে ন্যানোটেকনোলজি বলে।
এই আকৃতির কোনো কিছু তৈরি করা হলে তাকে সাধারণভাবে ন্যানো-পার্টিকেল বলে। ক্ষুদ্র আকৃতির জন্য ন্যানো পার্টিকেলের পৃষ্ঠদেশের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি; সেজন্য রাসায়নিকভাবে অনেক বেশি ক্রিয়াশীল হয়ে থাকে।
শুধু তাই নয়, একটি দ্রব্যের বড় আকৃতিতে যে ধর্ম বা গুণাগুণ থাকে, ন্যানো পার্টিকেল হলে তার ভেতর কোয়ান্টাম পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাব দেখা যেতে শুরু করে বলে সেই ধর্ম বা গুণাগুন সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে পারে।
উদাহরণ দেওয়ার জন্য বলা যায় অনেক ধাতুর কাঠিন্য ন্যানো আকৃতিতে সাধারণ অবস্থা থেকে সাতগুণ বেশি হতে পারে। এই কারণে এই ন্যানো-পার্টিকেল নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিশেষভাবে কৌতুহলী।
বিভিন্ন ধরনের রসায়নবিদ রয়েছে যারা অনেকদিন থেকে এ ধরনের ব্যাসারদের পলিমার তৈরি করে আসছে এবং তারা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট এর চিপস তৈরি করার জন্য প্রযুক্তিবিদরা সেখানে ন্যানো আকৃতির বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করে আসছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ন্যানো পার্টিকেল ব্যবহার করা অর্থাৎ পাটিকেল তৈরি ও ব্যবহার করার মাধ্যম বিভিন্ন টুল তৈরি হয়েছে যেগুলো ন্যানো পার্টিকেলের জগতকে সত্যিকার অর্থে উন্মুক্ত করেছে।
ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার
ন্যানো টেকনোলজি নামক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বৃহৎ স্কেলে পণ্যোৎপাদন সম্ভব হচ্ছে এবং উৎপাদিত পণ্য আকারে সূক্ষ্ম ও ছোট হলেও অত্যন্ত মজবুত, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, টেকসই ও হালকা হয়।
আগামী বিশ্ব হবে ন্যানোটেকনোলজির বিশ্ব’,–এই প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে স্মার্ট ওষুধের মাধ্যমে প্রাণঘাতী ক্যান্সার ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধি হতে মুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ন্যানো রোবট, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বিশ্বব্যাপী বৃহৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি,
কার্যকরী ও সস্তায় শক্তি উৎপাদনসহ পানি ও বায়ুদূষণ কমানো সম্ভব হবে মর্মে গবেষকগণ আমাদের আশার বাণী শুনিয়েছেন।ন্যানো টেকনোলজি এর দুইটি পদ্ধতিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। সেগুলো যথাক্রমে :-
১. ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ (Bottom Up) :- এই পদ্ধতিতে খুদরাতে ক্ষুদ্র আণবিক উপাদান থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বড় কোন জিনিস তৈরি করা হয়।
২. বৃহৎ থেকে ক্ষুদ্র (Top Down):- এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি বড় আকৃতির কিছু থেকে শুরু করে ওই বড় আকৃতির বস্তুটিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকৃতিতে ভেঙে পরিণত করা যায়।
- \ন্যানো প্রযুক্তির ব্যবহার:- ১. কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারে ব্যবহার : প্রসেসরের উচ্চ গতি, দীর্ঘস্থায়িত্ব, কম শক্তি খরচ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যে ব্যবহার্য। একই সঙ্গে ডিসপ্লে ও কোয়ান্টাম প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়তা করে।
২. চিকিৎসা ক্ষেত্রে : ন্যানো-রোবট ব্যবহার করে অপারেশন করা, যেমন— এনজিওপ্লাস্টি সরাসরি এন্ডোসকপি, এনজিওগ্রাম, কলোনোস্কোপি ইত্যাদি।
রোগাক্রান্ত সেলে চিকিৎসা প্রদান করা, যেমন— ন্যানো ক্রায়োসার্জারি, ডায়াগনোসিস করা, যেমন— ধরনের দ্রব্যাদি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
৩. খাদ্যশিল্পে : খাদ্যজাত দ্রব্য প্যাকেটিং, খাদ্যে স্বাদ তৈরিতে, খাদ্যের গুণাগুণ রক্ষার্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন হাইড্রোজেন আয়ন থেকে ফুয়েল, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সৌরকোষ তৈরির কাজে।
৪. জ্বালানি ক্ষেত্রে : সাধারণত বিভিন্ন ফুয়েল তৈরির কাজে জ্বালানিকে উৎসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন—হাইড্রোজেন আয়ন থেকে ফুয়েল, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সৌর কোষ তৈরীর কাজে।
৫. যোগাযোগ ক্ষেত্রে : হালকা ওজনের ও কম জ্বালানি চাহিদাসম্পন্ন গাড়ি প্রস্তুতকরণে।
৬. খেলাধুলার সামগ্রী তৈরিতে :- খেলাধুলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার সামগ্রী যথা – ফুটবল বা গলফ বলের বাতাসের ভারসাম্য রক্ষার্থে,, টেনিস বলের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য,,, ক্রিকেট,,, ইত্যাদি।
৭. বায়ু ও পানি দূষণ রোধে ব্যবহার : – বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানার যে সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক বজ্র রয়েছে সেগুলোকে ন্যানো পার্টিকেল ব্যবহার করার মাধ্যমে ও ক্ষতিকর বস্তুতে পরিণত করা যায় এবং তা পানিতে নিষ্কাশিত করে, যেমন—
কেন নারী শিল্পের ক্ষেত্রে এ বজ্রগুলোকে প্রযুক্তির সাহায্যে দূষণমুক্ত করা হয় এবং নদীর পানির দূষণ রোধ করতে সাহায্য করে।।।
৮. প্রসাধন শিল্পে : মানুষের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী রয়েছে যেগুলোতে, জিংক অক্সাইড ঢাকার কারণে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাব্যতা রয়েছে।
এমন অবস্থায় সেই সাথে সানস্ক্রিন ও ময়্চারাইজিং তৈরির কাজে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করার ক্ষেত্রে এ ধরনের ক্রিম তৈরিতে যে সকল রয়েছে সেগুলো ন্যানো টেকনোলজিতে ব্যবহৃত হয়।
ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা
ন্যানো টেকনোলজির বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। নিম্নে ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা গুলো তুলে ধরা হলো :-
১. ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা যায় এবং বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করা যায় যেগুলো শক্তিশালী, টেকসই, নির্ভুল, হালকা এবং সস্তা হয়।
২. মেনু টেকনোলজি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পিউটার গুলোর মধ্যে এক বিলিয়ন গুণ দ্রুত এবং ক্ষুদ্র হতে পারে।
৩. ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করার মাধ্যমে এটি একটি স্বয়ংক্রিয় দূষণ পরিষ্কার করা যায়।
৪. এটি বিনা খরচে উৎপন্ন করা যায় অথবা খুব কম করে যে উৎপন্ন করা যায়।
৫. চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ করে ক্যান্সার ও হৃদরোগ অসুস্থতার অবসান ঘটায়।
৬. সার্বজনীন রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন এইডস, ফ্লো ইত্যাদি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৭. এছাড়াও মানুষের চেহারা পরিবর্তন অর্থাৎ সার্জারি করা যায়।
৮. টেকনোলজি একটি দুজন মুক্ত পরিবেশ।
৯. বিভিন্ন ধরনের খাদ্য বা ভোগ্যপন্য ব্যাপক উৎপাদন করা হয়।
আমাদের উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে নিয়ে ন্যানো টেকনোলজি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানিয়েছি।
আশা করি আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা ন্যানো টেকনোলজি সম্পর্কিত যে সকল তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়েছেন তা সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবেন।