
নিউজ প্রতিবেদন:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিক সজল মিয়া হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে, পৃথক একটি হত্যা চেষ্টার মামলায়ও তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনউদ্দিন কাদিরের আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন সেলিনা হায়াৎ। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান জানান, সজল মিয়া হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি, ফতুল্লা থানায় দায়ের হওয়া আরেকটি হত্যা চেষ্টার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সেলিনা হায়াতের পক্ষে আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, “এজাহারে তাঁর নাম থাকলেও, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। কে গুলি করেছে, কার নেতৃত্বে ঘটনা ঘটেছে এসব বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলা হয়নি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হয়রানি করতেই তাঁকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।”নিহত সজল মিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি জুতা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, সেদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে চলমান আন্দোলনে সজল গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনায় নিহত সজলের মা রুনা বেগম বাদী হয়ে ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ সেলিনা হায়াতের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। সেলিনা হায়াতকে গত ৯ মে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে মিনারুল নামে এক পোশাক শ্রমিক হত্যার মামলায় আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা।
বর্তমানে সেলিনা হায়াৎ কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং মামলার আইনি প্রক্রিয়া চলছে।