নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রের স্থাপনায় বিমান হামলা: ইসরায়েলের অভিযানে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্যে আবারও বাড়ছে উত্তেজনা। ইসরায়েলের দাবি, তারা ইরানের গোপন পারমাণবিক প্রকল্পকে লক্ষ্য করে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই স্থাপনাটি দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজরে ছিল।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ওই স্থাপনায় এমন উপকরণ ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, যেগুলো সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহার করা যায়। তাঁদের ভাষায়, “নাতাঞ্জে এমন কিছু প্রকল্প চলছে যা ইরানের সামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পারে।”
এর আগেও এই কেন্দ্রে হামলা হয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, গত শুক্রবারও একটি হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় থাকা সেন্ট্রিফিউজগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানের প্রতিবাদ
তেহরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তারা এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আইএইএ’র নির্বাহী বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “এ ধরনের হামলা শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন নয়, এটি গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।”
নাতাঞ্জ: একটি সংবেদনশীল স্থান
ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনাটি গভীরভাবে সুরক্ষিত। বাংকারযুক্ত এই কেন্দ্রটিতে বহু সারি আধুনিক সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে, যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই স্থাপনার অস্তিত্ব প্রথম জনসমক্ষে আসে ২০০২ সালে।
২০২১ সালেও এই কেন্দ্রে একবার বড় ধরনের হামলা হয়েছিল। তখনও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এমন সংঘর্ষ শুধু দুই দেশের সীমাবদ্ধ নয়। এতে করে গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে পারমাণবিক ইস্যু জড়িত হওয়ায় এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।