বিজ্ঞান

ধাতু কি? ধাতু ও অধাতুর পার্থক্য

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আমাদের ওয়েবসাইটের শিক্ষা রিলেটেড ধাতু এবং অধাতু সম্পর্কে তথ্য পোস্টটি আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা —

👉ধাতু কি?

👉ধাতুর বৈশিষ্ট্য

👉অধাতু কি?

👉অধাতুর বৈশিষ্ট্য

👉ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য,,, ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

ধাতু এবং অধাতু হল প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের পদার্থ। উক্ত পদার্থ সমূহ বিভিন্ন বিক্রিয়া করার ক্ষেত্রে এবং বিক্রিয়া করার মাধ্যমে নতুন নতুন পদার্থ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

এজন্য শিক্ষার্থীদের অর্থাৎ বিশেষ করে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার্থীদেরকে ধাতু এবং অধাতু সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

ধাতু কি

প্রাকৃতিক যে উপাদান গুলো ঘন, অস্বচ্ছ, শক্ত এবং চকচকে সেগুলো হলো ধাতু। অর্থাৎ যে সকল মৌলিক পদার্থ সমূহ সাধারণ অবস্থায় ভারী, চকচকে, কঠিন, তবে আঘাত করলে তা থেকে ঝঞ্জন শব্দ তৈরি হয় এবং বিদ্যুৎ সুপরিবাহী ও তাপ সুপরিবাহী সেগুলোকে ধাতু বলা হয়।

যেমন : দস্তা, কোবাল্ট, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, টাইটানিয়াম, তামা, নিকেল, সীসা, সোনা, রুপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি। 

ধাতুর বৈশিষ্ট্য

ধাতুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেগুলো যথাক্রমে :-

১. ধাতুকে পিটিয়ে পাতে পরিণত করা যায়। 

২. ধাতু ওজনে ভারা থাকে। 

৩. ধাতু সমূহকে সহজে জোড়া লাগানো যায়। 

৪. ধাতুর বিশেষ দ্যুতি রয়েছে। 

৫. সাধারণত ধাতুসমূহ নমনীয় এবং ঘাতসহনশীল। 

৬.ধাতুর ঘষলে চকচক করে। 

৭. ধাতুকে আঘাত করলে তা থেকে জন জন শব্দ উৎপন্ন হয়। 

৮. সাধারণত ধাতুসমূহ বিদ্যুৎ পরিবাহী এবং তাপ পরিবাহী। 

৯. ধাতু৷ সমূহ অপেক্ষাকৃত উচ্চ স্ফুটনাংক বিশিষ্ট এবং উচ্চ গলনাংক বিশিষ্ট। 

১০. ধাতু সাধারণত এসিডের হাইড্রোজেন প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে লবণ উৎপন্ন করে। 

১১. দাদাব অক্সাইডের ক্ষারকীয় অংশ  পানিতে দ্রবীভূত করলে ক্ষার  উৎপন্ন হয়। 

১২. সাধারণত দাতবসমূহ বিজারক পদার্থ। 

অধাতু কি

যে সকল রাজনের পদার্থসমূহ ভঙ্গুর, স্বচ্ছ ও চকচকে এবং নরম সেগুলো হল অধাতু। অর্থাৎ যে সকল মৌলিক পদার্থ সমূহ  সাধারণত বিদ্যুৎ এবং তাপ পরিবাহী নয়, আঘাত করলে ঝন ঘন শব্দ করে না, ভঙ্গুর হয়, স্বচ্ছ,, অচকচকে, নরম  হয় তাকে অদাত বলা হয়। 

যেমন :-.অক্সিজেন,, ফসফরাস,, ক্লোরিন,,  সালফার,, জেনন, আর্গন,, নাইট্রোজেন,, কার্বন,, হাইড্রোজেন ইত্যাদি। 

অধাতুর বৈশিষ্ট্য

অধাতুর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে অধাতুর বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো :- 

১. অধাতু সমূহ কে পিটিয়ে পাত করা যায় না। 

২. অধাতুকে সহজে জোড়া লাগানো যায় না। 

৩. বিভিন্ন অধাতু পদার্থের ওজন হালকা হয়। 

৪. অধাতু জাতীয় পদার্থের দ্যুতি নেই।

৫. অধাতু কে ঘষলেচকচক করে না। 

৬. অধাতু সমূহ নমনীয় নয় এবং গাছ সহনশীল নয়। 

৭. কোন ওয়ালা তোকে আঘাত করলে তা কর্তৃক শব্দ হয় না। 

৮. অধাতুরাআবিদ্যুৎ পরিবাহী নয় এবং  তাপ পরিবাহীও নয়। 

৯. অধাতুসমূহ চুম্বক দ্বারা বিকশিত হয় অর্থাৎ সময়গনেটিক প্রকৃতির হয়ে থাকে। 

১০. বিভিন্ন ধরনের অধাতুসমূহকে বিভিন্ন এসিডের হাইড্রোজেন কে প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে লবণ উৎপাদন করতে পারে না। 

১১. অধাতুসমূহে কার্বন ছাড়া অন্যান্য জারক পদার্থ রয়েছে। 

১২. সাধারণত অধাতু সমূহ অপেক্ষাকৃত নিম্নস্ফুটনাঙ্ক ও নিম্ন গলনাঙ্ক বিশিষ্ট। 

ধাতু কি
ধাতু কি

ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য

ধাতু এবং অধাতুর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো :-

ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য

১. সাধারণত ধাতুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো নমনীয়তা, এর জন্য ধাতুকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পাতলা পাত এ পরিণত করা যায়। অপরদিকে ও অধাতুসমূহকে হাতুড়ি দিয়ে পিটালে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, কেননা অযথাসমূহ ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়ে থাকে।

২. ধাতু হলো  সাধারণত কঠিন পদার্থ। অপরদিকে ও অধাতুসমূহ সাধারণত নরম পদার্থের হয়ে থাকে। 

৩. ধাতু সাধারণত চকচকে দেখায় এবং মসৃণ দেখায়, তবে অধাতুসমূহ বিবর্ণ এবং অমসৃণ দেখায়। 

৪. ধাতু পারদ ও গ্যালিয়াম ছাড়া অন্য অবস্থায় কঠিন হয় শুধুমাত্র পারদ ও গ্যালিয়াম অবস্থায় তরল হয়ে থাকে। বিপরীতে, ওয়াদা তো সমূহ বায়বীয় আকারে কিংবা কঠিন আকারে পাওয়া যায় শুধুমাত্র ব্রোমিন ব্যতীত। 

৫. ধাতু মূলত ইলেকট্রো পজেটিভ প্রকৃতির হয়ে থাকে, কারণ ধাতুগুলো খুব সহজেই ইলেকট্রন হারায়। অপরদিকে অধাতুসমূহ ইলেকট্রো নেগেটিভ হয়, এজন্য এগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ কর, কিংবা অর্জন করে। 

৬. যে সকল প্রাকৃতিক  উপাদান সমূহ ঘন, অস্বচ্ছ, চকচকে এবং শক্ত হয়, সেগুলোকে ধাতু বলা হয়। অপরদিকে যে সকল রাসায়নিক পদার্থসমূহ ভঙ্গুর,স্বচ্ছ, অ-চকচকে, নরম ইত্যাদি প্রকৃতির হয়ে থাকে তাকে অধাতু বলা হয়। 

৭. ধাতু সমূহ সাধারণত অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে এবং দাতব অক্সাইড সমূহ উৎপাদন করে। অপরদিকে অধাতু সমূহ অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করার মাধ্যমে অম্লীয় প্রকৃতির অধাতুর অক্সাইড উৎপন্ন করে। 

৮. ধাতুসমূহ বিদ্যুতের এবং তাপের পরিবহনে সমর্থন করে। অপরদিকে ও অধাতু সমূহ অন্তরক হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ এবং তাপের পরিবাহককে সমর্থন করে না। 

. ধাতুর বিভিন্ন রূপ রয়েছে সেগুলো হল :- দস্তা, কোবাল্ট, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, টাইটানিয়াম, তামা, নিকেল, সীসা, সোনা, রুপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি। 

এছাড়াও অধাতুর বিভিন্ন উদাহরণ রয়েছে। সেগুলো হল :- অক্সিজেন,, ফসফরাস,, ক্লোরিন,,  সালফার,, জেনন, আর্গন,, নাইট্রোজেন,, কার্বন,, হাইড্রোজেন ইত্যাদি। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে ধাতু এবং অধাতু কাকে বলে,  ধাতু এবং অধাতুর বৈশিষ্ট্য এবং পার্থক্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানিয়েছি। 

আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ধাতু এবং অধাতু  সম্পর্কিত যে সকল তথ্য বা প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে উপকৃত হতে পেরেছেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button