
একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে: জামায়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বিচার ও আইন ব্যবস্থায় বড় পরিসরে সংস্কার আনতে উদ্যোগ নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং জনগণকে মামলা সংক্রান্ত হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তি দেওয়া।
শনিবার ঢাকার বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সভায় উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন জেলার আইনজীবী নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অধ্যাপক নজরুল বলেন, “আমরা তিনটি মূল লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি—দ্রুত ও কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি, বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, এবং মামলা থেকে মানুষের মুক্তি।”
তিনি জানান, দেওয়ানি কার্যবিধির পরিবর্তন ইতিমধ্যে করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধনের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে, যা অল্প সময়ের মধ্যেই অধ্যাদেশ আকারে পাস হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থার কথা বলেন তিনি। বিচারকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষাক্রমের মানোন্নয়ন এবং সম্পদ বিবরণী সংগ্রহের বিষয়গুলোকে সংস্কারের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
আইনগত সহায়তার প্রসঙ্গে তিনি জানান, দেশে প্রতিবছর গড়ে পাঁচ লাখ মামলা হয়। এর বিপরীতে মাত্র ৩৫ হাজার মামলা সরকারি সহায়তায় নিষ্পত্তি হয়। এই সংখ্যা বাড়িয়ে এক থেকে দুই লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
অধ্যাপক নজরুল বলেন, “মধ্যস্থতার প্রক্রিয়ায় আসা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, কিন্তু মধ্যস্থতার রায় মানা বাধ্যতামূলক নয়। এতে কারও অধিকার খর্ব হচ্ছে না, বরং দ্রুত সমাধানের পথ খুলছে।”
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, একজন প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন, যা সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যেখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন উপদেষ্টাই নিরপেক্ষ নন, সেখানে সাধারণ মানুষের আস্থা কীভাবে গড়ে উঠবে?”
আইন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা যে কোনো সংস্কারের জন্য অন্যতম পূর্বশর্ত এমন মন্তব্য উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকেও।