টক্সিন কাকে বলে? টক্সিন কত প্রকার
টক্সিন কাকে বলে: মানুষের শরীরে যে সকল কোষ রয়েছে সে সকল কোষে অবস্থানকারী বিভিন্ন ধরনের এনজাইম রয়েছে।
তবে সে সকল এনজাইম বিষাক্ত হতে পারে অথবা উপকারীও হতে পারে। দেহের এমন কিছু বিষাক্ত অ্যাঞ্জাম রয়েছে যা দেহের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে এমন কি অন্ত্রের মাধ্যমে আঘাত হানার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এজন্য টক্সিন কাকে বলে টক্সিন কত প্রকার ইত্যাদি সমূহ টক্সিন সম্পর্কে ভালোভাবে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে টক্সিন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করে জানাচ্ছি।
শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকে যে সকল কোষ রয়েছে সেই সকল কোষে এনজাইম অবস্থান করে। অনেক সময় এ সকল অ্যাঞ্জাম সময় বিষাক্ত বিভিন্ন ধরনের টক্সিনে আক্রান্ত হতে পারে। এজন্য মানুষের সর্বব্যকা সচেতনতা অবলম্বন করার জন্য টক্সিন সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
পাশাপাশি টক্সিন সম্পর্কে জানার মাধ্যমে টক্সিন কাকে বলে, টক্সিন কত প্রকার এবং টক্সিন থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায় এবং ডাক্তারি বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
টক্সিন কাকে বলে
তাপমাত্রা এবং আদ্রতা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দেহে যে সকল ছত্রাক এবং জীবাণুর দ্বারা শরীর থেকে বিষাক্ত এক ধরনের এনজাইম মিশ্রিত হয় সে এনজাইমকে টক্সিন বলা হয়।
টক্সিন মারাত্মক একটি সমস্যা যার ফলে ফুড পয়েজিং সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। যদি কোন খাদ্যের টক্সিন মিশ্রিত থাকে তাহলে ওই খাদ্যকে ফুড পয়েজিংও বলা হয় যদি কোন ব্যক্তিত্বের টক্সিন আক্রমণ করে তাহলে সে ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
টক্সিন কত প্রকার
সাধারণভাবে টক্সিন বিভিন্ন প্রকারের। তবে টক্সিনকে প্রকার হিসেবে ভাগ করার ক্ষেত্রে শ্রেণীবিত্তিকভাবে প্রকার বিবেচনা করা হয়।
* উৎসের ভিত্তিতে টক্সিন কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :-
→ প্রাকৃতিক টক্সিন।
→ কৃত্রিম টক্সিন।
* ক্রিয়া কলাপের ভিত্তিতে টক্সিন কে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :-
→কিডনির উপর কাজ করে এমন টক্সিন।
→লিভারের উপর কাজ করে এমন টক্সিন।
→হৃদপিন্ডের উপর কাজ করে এমন টক্সিন।
→ স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করে এমন টক্সিন।
→অন্যান্য টিস্যুর উপর কাজ করে এমন টক্সিন।
* ঘণত্বের ভিত্তিতে টক্সিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-
→নিম্ন মাত্রার টক্সিন।
→উচ্চমাত্রার টক্সিন।
টক্সিন এর লক্ষণ
সাধারণত টক্সিন এর বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ রয়েছে। লক্ষণসমূহ হলো নিম্নরুপ:-
১. টক্সিন এর প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
২. তাৎক্ষণিকভাবে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া টক্সিন এর একটি লক্ষণ।
৩. অনেকের ক্ষেত্রে শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায় পাশাপাশি কর্ম ক্ষমতা হ্রাস পায়।
৪. শরীরে বিভিন্ন ধরনের র্যাস, ফোড়া, অত্যাধিক ঘাম ইত্যাদি বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিতে পারে এমনকি অন্ত্রে ও লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. অধিকাংশ সময় মেজাজ খারাপ বা বিগড়ে যাওয়া পাশাপাশি মোট সুইম হতে পারে। এমনকি অনেকে এস্পার্টেম নামক টক্সিন দেখা দিলে ডিপ্রেশনে চলে যেতে পারে।
৬. ব্রেনের বিভিন্ন টিস্যুর কারণে মাইগ্রেন অথবা মাথা যন্ত্রণা নামক সমস্যা দেখা দেয়।
৭. কালশিটে এবং পিসিতে ব্যথা জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
৮. ব্রাশ করেও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে না বা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
৯. সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিকাংশ সময় টক্সিন এর ক্ষেত্রে ইনসমনিয়া বা অনিদ্র জনিত সমস্যা হতে পারে। ফলে ঘুমের ঘাটতি তৈরি হওয়ার কারণে শরীর থেকে সহজেই টক্সিন গুলো আর বাইরে যেতে পারে না।
১০. ওদের পরিমাণ ঘেমে যাওয়া বাঁ শরীরে তাপমাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া। উপরোক্ত লক্ষণগুলো হলো টক্সিন রূপটি হওয়ার বিভিন্ন ধরনের লক্ষণসমূহ।
টক্সিন দূর করার উপায়
যে সকল দিকগুলো সঠিকভাবে খেয়াল রাখার মাধ্যমে টক্সিন দূর করা যায় তার উপায় গুলো নিম্ন তুলে ধরা হলো :
১. রান্না করার সময় সব সময় ভালো করে ধুয়ে তারপর রান্না করা। ফোনে সবজিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থগুলো পরিষ্কার করে রান্না করা হয়।
২. বিভিন্ন ধরনের ফ্রেশণার বা সেন্টার ক্যান্ডেল পাওয়া যায় যেগুলো বেশিরভাগ টক্সিন থাকে তাই এয়ার ফ্রেশনার নৈবচ নির্বাচন করে তা ব্যবহার করা।
৩. প্রাকৃতিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে রুমের ভিতরে বাতাস পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ঘরের মধ্যে গাছ আর কোন বিকল্প নেই। যা রান্না করে অধিকাংশ টক্সিন গুলোকে কমিয়ে দিবে।
৪. বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অথবা শ্যাম্পু এবং মেকআপে যাবতীয় জিনিসগুলো ব্যবহার করার পূর্বে তা ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে।
৫. পরিবর্তে পরিমানে পানি পান করার মাধ্যমে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কংসের যে সকল টক্সিন রয়েছে চাদর করা বা পরিশ্রুত করা যায়।
৬৷ ইলেকট্রিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার রয়েছে যা কমানোর মাধ্যমে, এমনকি ৯৭ শতাংশ খাদ্যগুণ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার কমান।
৭. বিভিন্ন ধরনের তেল রয়েছে যেগুলোর মধ্যে টক্সিন থাকতে পারে। তাই রান্না করার ক্ষেত্রে একবার ব্যবহৃত তেল পুনরায় ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে এবং টক্সিন মুক্ত তেল ব্যবহার করতে হবে।
৮. যথাসম্ভব প্লাস্টিকের যে সকল বোতল বা অন্যান্য প্লেট রয়েছে সেগুলো পুরোপুরি ভাবে ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকা এমনকি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া।
৯. প্রতিদিন নিয়মিত পরিমাণে ব্যায়াম করার মাধ্যমে এবং শারীরিক কস রাতের মাধ্যমে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায় ফলে ত্বক সুন্দর এবং প্রাণোউজ্জ্বল থাকে।
আরো পড়ুন: সাইক্লোন কাকে বলে
টক্সিন দূর করার ঘরোয়া উপায়
অনেক সময় মানুষের হাতে পায়ে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন হয় যা দূর করার ঘরোয়া উপায় রয়েছে। টক্সিন দূর করার ঘরোয়া উপায় হল :-
সামুদ্রিক যে লবণ রয়েছে তা এক কাপ পরিমাণ নিতে হবে এবং তার সাথে ব্যাগিং সোডা ও কয়েক ফোঁটা পছন্দের অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল মিক্সড করে নিতে হবে। এবং একটি বড় পাত্রে গরম পানির নিয়ে তা ভালোভাবে মিশাতে হবে।পরবর্তীতে মিশ্রিতই এই পানিতে পা ভিজিয়ে ১ ঘন্টা বসে থাকতে হবে।
টক্সিন দূর করার জন্য হালকা গরম পানিতে ১/৪ কাপ নারিকেল তেল এবং ১/৪ কাপ লবণ দিয়ে পা ভিজিয়ে বসে থাকুন আধাঘন্টা। ফলে এ সকল পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে ঘরোয়া পদ্ধতিতে টক্সিন দূর করা সম্ভব।
এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে টক্সিন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি, টক্সিন সম্পর্কে আপনার যে সকল তথ্য ছিল অথবা আপনি যে সকল তথ্য জানতে চেয়েছেন তা আমাদের পোষ্টের মাধ্যমে যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।