জ্যামিতি কাকে বলে? জ্যামিতি কত প্রকার
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমরা আমাদের উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে যে সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেমন :-
👉জ্যামিতি কাকে বলে,,কত প্রকার,,
👉জ্যামিতির বিভিন্ন অংশ,, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি।
গণিতের গণিতের একটি অন্যতম ও আলোচ্য বিষয় হলো জ্যামিতি শাস্ত্র। জ্যামিতি শাস্ত্র পড়ার মাধ্যমে জ্যামিতিক বিভিন্ন তথ্য এবং প্রকার পদের বিষদ পরিসীমা সম্পর্কে জানা যায়।
সাধারণত যেকোনো লেভেলের শিক্ষার্থীদের কে জ্যামিতি সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি জ্যামিতির বিভিন্ন প্রকারভেদ এবং জ্যামিতি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।
জ্যামিতি কাকে বলে
জ্যা শব্দটির অর্থ হলে ভূমি, আর মিতি শব্দটির অর্থ হলো পরিমাপ। অর্থাৎ জ্যামিতি শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ভূমির পরিমাপ বা জরিপ। গণিতের যে শাখায় স্থান বা ভূমির পরিমাপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে জ্যামিতি বলা হয়।
জ্যামিতি শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Geometry,, যেখানে Geo অংশের মানে হল পৃথিবী এবং metry এর মানে হল পরিমাপ। অর্থাৎ গ্রিক শব্দ থেকে উৎপন্ন জ্যামিতি অর্থাৎ জ্যা’ ও ‘মিতি’ দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত।
এছাড়া ও স্থানভিত্তিকভাবে জ্যামিতিকে স্থানভিত্তিক বিজ্ঞান বলা হয়। বর্তমান সময়ের আধুনিক গণিতবিদদের মত অনুযায়ী,, বিভিন্ন প্রকার চিহ্ন এবং ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যের বিচার বিশ্লেষণকে জ্যামিতি বলা হয়।
জ্যামিতি কত প্রকার
জ্যামিতিকে ব্যবহার অনুযায়ী দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :-
১. ব্যবহারিক জ্যামিতি,,,
২. তাত্ত্বিক জ্যামিতি।
১. ব্যবহারিক জ্যামিতি : গণিতের জ্যামিতি শাস্ত্রের যে শাখা পাঠ করার মাধ্যমে রেখা, ক্ষেত্র, তল, কোণ, স্থান, বস্তু, বিন্দু,, প্রভৃতি অঙ্কন করার পদ্ধতি হাতে-কলমে শেখা যায় তাকে ব্যবহারিক জ্যামিতি বলে।
২. তাত্ত্বিক জ্যামিতি : গণিতের জ্যামিতি শাস্ত্রের যে শাখা পাঠ করার মাধ্যমে জ্যামিতিক বিভিন্ন উপাত্ত গুলোকে সত্য বলে প্রমাণ করা হয় এবং তা থেকে তর্ক যুক্তি ও তত্ত্বের সাহায্যে নতুন কোন সিদ্ধান্তে আসা যায় তাকে তাত্ত্বিক জ্যামিতি বলা হয়।
- এছাড়াও জ্যামিতিকে আরো দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :-
১. তল জ্যামিতি,,,
২. ঘন জ্যামিতি।
১. তল জ্যামিতি:-
তল জ্যামিতি সাধারণত দুই মাত্রার। অর্থাৎ চওড়া এবং লম্বার উপর নির্ভর করে দুইটি মাত্রা বিদ্যমান। ফলে এ অংশে দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ বিষয়টি আলোচিত হয়।
২. ঘন জ্যামিতি:- ঘন জ্যামিতি সাধারণত তিনটি অংশ বা দিক নিয়ে গঠিত। সেগুলো হলো: দৈর্ঘ্য,, প্রস্থ এবং উচ্চতা
- এছাড়াও জ্যামিতিতে তলের উপর ভিত্তি করে দুই ধরনের তল রয়েছে। সেগুলো হলো :-
১. সমতল,,,
২. বক্রতল,,,
১. সমতল :-যদি দুইটি বিন্দুর সংযোজক সরলরেখা কোন তলের ওপর অবস্থিত থাকে তাহলে তাকে সমতল বলা হয়। যেমন :- বই, টেবিল, চেয়ার ইত্যাদি।
২. বক্রতল/অসমতল :-যে সকল তলের উপরিভাগ বা পৃষ্ঠ সমান নয় তাদেরকে বক্রতল অথবা অসমতল বলা হয়। যেমন : কমলা, বল, মার্বেল ইত্যাদি।
জ্যামিতির বিভিন্ন অংশ
জ্যামিতির বিভিন্ন অংশ রয়েছে। জ্যামিতির বিভিন্ন অংশ সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো :-
১. স্থান :- যে একটি বস্তু যতোটুকু পরিমাণ জায়গা দখল করে সে জায়গার পরিমাণকে স্থান বলা হয়। যেমন:- চেয়ার,, টেবিল,, বাক্স ইত্যাদি।
২. বস্তু :- কোন বস্তু যে জায়গা দখল করে তাকে বস্তু বলা হয়। যেমন: টেবিল, খাতা, বই ইত্যাদি। এছাড়াও একটি বস্তুর তিনটি মাত্রা থাকে। সেগুলো হলো :- দৈর্ঘ্য, প্রস্থ উচ্চতা। তবে বস্তুর মাথার উপর ভিত্তি করে বস্তুকে আবার ৩ ভাগে ভাগ হয়। তা হল :- একমাত্রিক,, দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক।
- একমাত্রিক:- যে সকল বস্তুর একটি মাত্র মাত্রা আছে তাকে একমাত্র বলা হয়। যেমন:- রেখা দৈর্ঘ্য।
- দ্বিমাত্রিক :- সাধারণত যে সকল বস্তুর দুইটি মাত্রা বিদ্যমান থাকে তাদেরকে দ্বিমাত্রিক বস্তু বলে। যেমন: একটি তল,, যার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ রয়েছে।
- ত্রিমাত্রিক :-যে সকল বস্তুর তিনটি মাত্রা আছে তাদেরকে ত্রিমাত্রিক বলা হয়। যেমন : যেকোনো একটি ঘনবস্তু, কেননা ঘন বস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা থাকে।
- বিন্দু :-যদি দুইটি টাকা পরস্পরকে ছেদ করি তখন বিন্দুর উৎপত্তি ঘটে। এক্ষেত্রে একটি বিন্দুর শুধু অবস্থান আছে তবে তার কোন মাত্রা থাকে না। বিভিন্ন প্রকার বিন্দু ও তার অবস্থান নিম্নে তুলে ধরা হলো :-
- সমরেখ বিন্দু :-একটি সরলরেখার উপর অবস্থিত একটি বিন্দু থাকলে সে অবস্থাকে সমরেখ ও বিন্দু বলা হয়।
- সমবিন্দুরেখ :-সাধারণত দুই বা তার অজিত সরলরেখা যদি একটি সাধারণ বিন্দুতে মিলিত হয় তাহলে ওই বিন্দু কে সমরেখ ও বিন্দু বলা হয়।
- সমতলবিন্দু যে সকল বিন্দু ১ টি নির্দিষ্ট তলের উপর অবস্থান করে তাদেরকে সমতল বিন্দু বলে।
- শীর্ষবিন্দু :-যদি দুইটি বাহু কোন একটি সাধারণ বিন্দুতে মিলিত হয় তখন তাদেরকে অর্থাৎ মিলিত বিন্দু কে শীর্ষবিন্দু বলে।
- রেখা :- সাধারণত চলন্ত বিন্দুর গতিপথ কে রেখা বলা হয়। অর্থাৎ বিন্দুর চলার যে পথ সে পথকে রেখা বলে। সাধারণভাবে রেখার দৈর্ঘ্য রয়েছে কিন্তু লেখার প্রস্থ বা উচ্চতা কিংবা বেধ কিছুই নেই।
- রেখাংশ :- যার নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু একটি প্রান্তবিন্দুও রয়েছে তাকে রেখাংশ বলা হয়।
- সাধারণত রেখা দুই প্রকারের। ১. সরলরেখা,,,,২. বক্ররেখা,,,,
১. সরলরেখা :-যে সকল রেখায় একবিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে অথবা একটি অবস্থান থেকে অন্য অবস্থায় নিয়ে পৌঁছাতে দিক পরিবর্তন করে না তাদেরকে সরলরেখা বলা হয়।
২. বক্ররেখা :-যে সকল রেখা একটি বিন্দু থেকে অন্য একটি বিন্দুতে অথবা একটি আবর্তন থেকে অন্য একটি অবস্থানে পৌঁছাতে দিক পরিবর্তন করে থাকে তাদেরকে বক্ররেখা বলে।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যেমন জ্যামিতি কাকে বলে এবং জ্যামিতির প্রকারভেদসহ উপাদান ইত্যাদি জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা যেমিতি রিলেটেড যে সকল প্রশ্নের উত্তর এবং তথ্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন।