আপনি আমাদের উক্ত পুষ্টি পড়ার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য কি, জীববৈচিত্র্য কাকে বলে, প্রকারভেদ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
লক্ষ লক্ষ উদ্ভিদ ও প্রাণীর সমন্বয়ে বিভিন্ন জীব পৃথিবীতে টিকে আছে। আবার এমন অনেক উদ্ভিদ, প্রাণী বা জীব রয়েছে যারা ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
যে সকল প্রাণী রয়েছে পৃথিবীতে সে সকল প্রাণীকে আলাদা আলাদা ভাবে লক্ষ লক্ষ প্রাণীর নাম বা শ্রেণি মনে রাখা সম্ভব নয়। এজন্য তাদের বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট্যগত দিকে লক্ষ রেখে আলাদা আলাদা বিভক্ত করা হয়েছে।
যার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য এবং জীববৈচিত্র্য কাকে বলে এ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। অসংখ্য উদ্ভিদ বা প্রাণীকে তাদের বৈচিত্র্য অনুযায়ী মনে রাখা সম্ভব হয়।
Table of Contents
Toggleজীব বৈচিত্র্য
পৃথিবীর সমস্ত জলচর স্থলচর ও খেচর প্রাণীর মধ্যে যে জিনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুসংস্থানগত ভিন্নতা দেখা যায় সেটি হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। দেহের গঠন, বসতি নির্বাচন প্রভৃতি থেকে শুরু করে
চলন, খাদ্য গ্রহণ, পরিযান, প্রজননসহ আরো অনেক বিষয়ে জীবের বৈচিত্র সুস্পষ্ট। প্রত্যেক জীব নিজস্ব বৈশিষ্ট্য মন্ডিত হয়ে অন্য প্রাণী থেকে ভিন্ন। পৃথিবীর বিচিত্র পরিবেশে দৃশ্য ও অদৃশ্যমান অসংখ্য জীবের বিচরণ করেছে ।
কেউ দল ভেঁদে অতল সমুদ্রে, মাস সমুদ্রে বাস সমুদ্র সাঁতার কেটে চলছে। কেউ দ্রুত, কেউবা মন তোর লয়ে মাটির উপরে হেঁটে বেড়াচ্ছে, কোন
জীব হয়তো গাছের ডালে দুল খাচ্ছে, আবার কেউ কেউ যাকে যাকে পরি যাই হচ্ছে, আবার কেউ কেউ এত ছোট যে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া দেখাই যায় না। এদের কেউ তৃণভোজী, কেউ অন্যান্য মাংসাশী বা সর্ব ভোজীকিংবা পরজীবী।
জীব বৈচিত্র্য কী
জীববৈচিত্র হলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার জীব একটি নির্দিষ্ট সমাবেশের মাধ্যমে বসবাস করা। এক্ষেত্রে কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের যে সকল প্রজাতির মধ্যে জিনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুতান্ত ভিন্নতা বা তারতম্য লক্ষণীয় রয়েছে তা হলো জীববৈচিত্র্য।
জীবগোষ্ঠীর সার্থক ও অন্যতম সুন্দর বাসভূমি হল এই সুন্দর পৃথিবী। এখানে বিভিন্ন ধরনের জীব বসবাস করে। শুরু করে ছোট বড় উদ্ভিদ ও প্রাণীর সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়।
সকলে মিলে তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে একে অপরের অর্থাৎ পরস্পরের সহযোগিতা ভিত্তিক সমাবেশ তৈরি করে বেঁচে থাকার প্রক্রিয়া বা সকলে তাদের বৈচিত্র্যগতভাবে আলাদা আলাদা ভাবে বাসগত যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা হলো জীববৈচিত্র্য।
জীব বৈচিত্র্য কাকে বলে
একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার জীবএকটি নির্দিষ্ট সমাবেশের মাধ্যমে বসবাস করাকে জীববৈচিত্র বলা হয়।
অর্থাৎ কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের যে সকল প্রজাতির মধ্যে জিনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুতান্ত ভিন্নতা বা তারতম্য লক্ষণীয় রয়েছে তাকে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
পৃথিবীতে অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী এমনকি ছোট ছোট কীটপতঙ্গ বসবাস করে।
প্রত্যেকটি উদ্ভিদ ও প্রাণী তাদের নিজস্ব একটি সীমানার মধ্যে অঞ্চল ভিত্তিক ভাবে পারস্পারিক সহযোগিতা বা মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য টিকে থাকে।
বিভিন্ন প্রতিকূলতা এড়িয়ে প্রতিটি জীব তাদের নিজের নিজস্ব জীবন ধারা পদ্ধতির মাধ্যমে জগতের টিকা টাকার প্রক্রিয়াকে জীববৈচিত্র্য বলা হয়।
জীব বৈচিত্র্য কয় ভাগে বিভক্ত
জীববৈচিত্র তিন ভাগে বিভক্ত। সেগুলো হলো :-
১. জিনগত বৈচিত্র্য।
২. প্রজাতিগত বৈচিত্র্য।
৩. বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য।
১. জিনগত বৈচিত্র্য:-
→ নির্দিষ্ট বাস্তু অনুতে কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে জিনগত উপাদানের মধ্যে যে বৈষম্য মাত্রা রয়েছে তাকে জিনগত বৈচিত্র বলা হয়।
জিনগত সাধারণ গঠন বা কোটের কারণে একটি প্রজাতির প্রত্যেক সদস্যের সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে। জীব দেে অবস্থিত জিনগুলোর মধ্যে সীমাহীন সম্মেলনের ফলে জিনগত বৈষম্যের সৃষ্টি হয়।
এ কারণে একজন মানুষ একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির হওয়া সত্ত্বেও এদের মধ্যে একজন আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ ও অস্ট্রেলিয়ান শ্বেতাঙ্গ মানুষ দেহের আকৃতি, গায়ের রং ও চুলের রং ইত্যাদিতে পরস্পর থেকে সুস্পষ্ট কৃতক।
২. প্রজাতিগত বৈচিত্র্য:-
→ বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা যা একটি নির্দিষ্ট সময় ও অঞ্চলে একসঙ্গে বসবাস করে এবং এটিকে বাস্তুতান্ত্রিক সম্প্রদায় গড়ে তোলে তাকে প্রজাতি বৈচিত্র্য বলে।
এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে একে অপরের যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে সে বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরা হয়।
৩. বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য:-
→ বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য বলতে বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ ও পুষ্টি চক্রের মাধ্যমে সংযুক্ত বিভিন্ন যুব সম্প্রদায় ভুক্ত প্রজাতির মধ্যে ভিন্নতাকে বোঝায়।
আরো পড়ুন: আন্তঃআণবিক শক্তি কাকে বলে
জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ
যে সকল জীবিত প্রজাতি রয়েছে বিশেষ করে বিপন্ন প্রজাতিগুলো বা বন্যপ্রাণীগুলোর প্রাকৃতিক আবাসস্থল এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করার পদ্ধতি রয়েছে।
যথা সম্ভব পরিমিত পরিমাণে গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশকে সংরক্ষণ করা যায়। এক্ষেত্রে পরিবেশের বিভিন্ন জীববৈচিত্র্য বা বিভিন্ন শ্রেণীর ও বৈচিত্র্যের প্রাণিসমূহের বেঁচে থাকার জন্য প্রাকৃতিক সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।
পাশাপাশি যে সকল পশুপাখি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাদেরকে সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে তাদের বংশপরম্পরায় সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রাণীদের যে সকল প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো চাহিদা বা পূরণ করার মাধ্যমে জীব বৈচিত্র্য কে সংরক্ষণ করা যায়।
সংরক্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ করার মাধ্যমে জাতীয় উদ্যান এবং পবিত্র গ্রোভ, বন্য পানিদের অভয়ারণ্য ইত্যাদি পদ্ধতি প্রচলন এর মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায়।
বাংলাদেশের সহ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বনে বসবাসকারী প্রাণীদের শিকার করে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্তির পথ দ্বারা হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে তাদের টিকিয়ে রাখার জন্য বন্যপ্রাণী শিকার থেকে দূরে থাকা এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে জীববৈচিত্রকে টিকিয়ে রাখা এবং সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেমন : জীববৈচিত্র্য কাকে বলে, জীববৈচিত্র্যের প্রকারভেদ, জীববৈচিত্র কি, জীববৈচিত্র্য, এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করেছি।
আশা করি, আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে জীবজগৎ এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে যে সকল তথ্য অথবা প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন ও উপকৃত হতে পারবেন।