জটিল বাক্য কাকে বলে? জটিল বাক্য চেনার উপায়
জটিল বাক্য কাকে বলে: বাংলা ব্যাকরণের আলোচনার একটি অন্যতম বিষয় হলো বাক্য। বাক্যের বিভিন্ন পদ অথবা শ্রেণীবিন্যাস এবং গঠন অনুসারে বাক্যের তিনটি প্রকারভেদের একটি হল জটিল বাক্য। এজন্য জটিল বাক্য সম্পর্কে উক্ত পোস্টে আমরা আপনাদেরকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি। :
গঠন গতবাকে ভাবে যদি বাংলা ভাষার বাক্যকে আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে জটিল বাক্য সাধারন ভাবে দুইটি পদ নিয়ে গঠিত হয়। বাক্য রচনার ক্ষেত্রে অথবা বাক্য লিখার ক্ষেত্রে এ সম্পর্কে জটিল বাক্য লেখা প্রয়োজন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে কারণের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক আলোচনার মধ্যে জটিল বাক্য একটি অন্যতম বিষয় এজন্য জটিল বাক্য সম্পর্কে জানা প্রয়োজন এবং এই সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন জরুরী।
জটিল বাক্য কি
যে বাক্যে প্রধান খন্ড বাক্য এবং অপ্রধান খন্ড বাক্য এরূপ দুটি আলাদা বাক্যের সমন্বয়ে মিশ্রিতভাবে একটি বাক্য তৈরি করা হয় সে বাক্য হল মিশ্র বাক্য।
জটিল বাক্যে দুইটি আলাদা পদ বিদ্যমান থাকলেও এতে আশ্রিত বাক্য, সাপেক্ষ পদ যুক্ত এবং প্রতিনিধক সর্বনামযুক্ত বাক্য রয়েছে।
জটিল বাক্য কাকে বলে
সাধারণভাবে যে সকল বাক্যে সাধারণত প্রধান খন্ড বাক্য থাকে এবং এক বা একাধিক ও প্রধান খন্ড বাক্য থাকে যা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত ভাবে পরস্পর মিলিত হয়ে একটি নতুন বাক্য তৈরি করে এবং সে বাক্যটিকে মিশ্র বাক্য অথবা জটিল বাক্য বলা হয়ে থাকে।
জটিল বাক্যে সাধারণত অপ প্রধান খন্ড বাক্য বা আসবি তো খন্ড বাক্য হিসেবে বাক্যের প্রথম অংশ থাকে। বাক্যে দ্বিতীয় অংশ ভাই শেষ অংশ হিসেবে প্রধান খন্ড বাক্য থাকে।
জটিল বাক্য উদাহরণ
জটিল বাকের বিভিন্ন উদাহরণ নিম্নে দেয়া হলো :
১.যদিও তিনি বিদ্বান , তবুও বড়ই দূর্বিনীত।
২.যেদিন বঙ্কিমচন্দ্র নোবেল লিখলেন, সেদিন ঐ বাংলা সাহিত্যের একটি শাখা সৃষ্টি হলো।
৩.এই সকাল হলো, অমনি বের হলাম।
৪.তার চোখে যেমন আগুন জ্বলছে তেমনি শরীরটা হয়েছে ইস্পাতের মত।
৫.সকলে জানে যে রহমান ভালো ছেলে।
৬.যেহেতু বড় ডাক্তার এসেছে, সেহেতু আর রোগীর জীবন সংখ্যা নেই।
৭.যেহেতু দোষ করেছ, সেহেতু শাস্তি পাবে।
৮.যদিও যদিও তিনি দরিদ্র তবুও চরিত্রহীন নন।
৯.যদিও গাছে অনেক জল দিয়েছি তবুও ফল ধরল না।
১০.সেসব দিন আর নেই, কিন্তু সেসব স্মৃতি এখনো জেগে রয়েছে।
জটিল বাক্য চেনার উপায়
জটিল বাক্য চেনার উপায় নিম্নে তুলে ধরা হলো :-
১. জটিল বাক্যে দুই ধরনের মিশ্রিত বাক্য থাকবে।
২. জটিল বাক্যের প্রধান অংশে অপ্রধান খন্ড বাক্য থাকবে এবং দ্বিতীয় অংশে প্রধান খন্ড বাক্য থাকবে।
৩. জটিল বাক্যে আশ্রিত খন্ড বাক্য বিদ্যমান।
৪. জটিল বাক্যকে আবারো সাধারণত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়।
৫. শ্রেণীভিত্তিকভাবে জটিল বাক্যে আশ্রয় অর্থাৎ আশ্রিত, সাপেক্ষ পদ যুক্ত এবং প্রতি নির্দেশক সর্বনামযুক্ত পদ রয়েছে।
৬. জটিল বাকের ক্ষেত্রে দুইটি আলাদা পদ থাকবে।
সরল জটিল ও যৌগিক বাক্য কাকে বলে, উদাহরন
সরল বাক্য :
কোন বাক্যে যদি একটি মাত্র কর্তা এবং একটি মাত্র সময় প্রক্রিয়া বিদ্যমান থাকে তাহলে সেই বাক্যটি কে সরল বাক্য বলা হয়।
সরল বাক্যের উদাহরণ :
→সকলে মিলে সে সব গাছে জল সেচন করতে লাগলেন।
→সমাজে পেশি শক্তির চেয়ে সৌন্দর্যের মর্যাদা বেশি।
→তবু না বলা কথাটা সবাই মেনে নেয়।
→দয়া করে সব খুলে বলেন।
→এত সম্পত্তির মালিক হয় সত্ত্বেও তার মনে শান্তি নেই।
→বাবা আমাকে 100 টাকা দিয়ে বাজারে যেতে বললেন।
→ঠিক সময় স্টেশনে না গেলে ট্রেন পাওয়া যাবে না।
→মিথ্যা কথা বলে বিপদে পড়েছি।
→জনগণ সচেতন নয় বলে নেতারা আরামে আছেন।
→পরিশ্রম করলে ফল পাবে।
যৌগিক বাক্য :
যদি কোন বাক্যে দুই বা ততদিন সরল বা জটিল বাক্যর মিলনের মাধ্যমে একটি পূর্ণ বাক্য গঠন করা হয়ে থাকে তবে সেই বাক্যটিকে যৌগিক বাক্য বলা হয়।
আরো পড়ুন: ভাষণ কাকে বলে
যৌগিক বাক্যের উদাহরণ :
→সকলেই মিলিত হলেন এবং সেই সব গাছে জলসেচন করলেন।
→সমাজের পেশী শক্তির মর্যাদা বেশি নয়, বরং সৌন্দর্যের মর্যাদা বেশি।
→দয়া করেন ও সব খুলে বলেন।
→সে অনেক সম্পত্তির মালিক কিন্তু তার মনে শান্তি নেই।
→বাবা ১০০ টাকা দিলেন এবং বাজারে যেতে বললেন।
→ঠিক সময় স্টেশনে যেতে হবে নতুবা ট্রেন পাওয়া যাবে না।
→মিথ্যা কথা বলেছ, তাই বিপদে পড়েছ।
→তারা আরামে আছেন কেননা যত জনগণ সচেতন নয়।
→ ফল পাবে কিন্তু তার জন্য পরিশ্রম করতে হবে।
উক্ত পোস্টে আমরা জটিল বাক্য সম্পর্কে যে সকল তথ্য জানার ছিল তা যথাযথভাবে আপনাদেরকে জানানোর জন্য উল্লেখ করেছি।
আপনি যদি জটিল বাক্য সম্পর্কে যে কোন তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়ে থাকেন আশা করি তা আমাদের পোস্টের মাধ্যমে যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।