চতুর্ভুজ কাকে বলে? চতুর্ভুজ এর বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আসসালামু আলাইকুম আমাদের ওয়েবসাইটের শিক্ষা রিলেটেড গাণিতিক বিষয়ক জ্যামিতিভিত্তিক উক্ত পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত প্রতি পড়ার মাধ্যমে আপনারা —
→ চতুর্ভুজ কাকে বলে,,, এর বৈশিষ্ট্য,,,এর প্রকারভেদ,,,ইত্যাদি সম্পর্কে যথাযথভাবে জানতে পারবেন।
গণিতের প্রাচীন ও অন্যতম শাখা হিসেবে জ্যামিতিক শাখাটি পরিচিত। তবে জ্যামিতি বিভিন্ন বিষয় বা প্রকারভেদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। সেক্ষেত্রে জ্যামিতির আলোচ্য বা অন্যান্য প্রকারভেদ ভিত্তিক একটি বিষয় হলো চতুর্ভুজ।
জ্যামিতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে জ্ঞান অর্জন এবং তথ্য সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার ক্ষেত্রে চতুর্ভুজ কাকে বলে, চতুর্ভুজের প্রকারভেদ এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
চতুর্ভুজ কাকে বলে
চারটি রেখাংশ অথবা চারটি রেখা দ্বারা আবদ্ধ জ্যামিতি আকৃতি তৈরি করলে তাকে চতুর্ভূজ বলা হয়। অর্থাৎ চারটি কোণ থাকলে এবং চারটি সমান বাহু থাকলে আবদ্ধ যে আকৃতি তৈরি করা যায় তাকে চতুর্ভুজ বলা হয়।
যেহেতু একটি চতুর্ভুজ অঙ্কন করার ক্ষেত্রে অনেকগুলো রেখা বা কোন প্রয়োজন হয় তাই একটি চতুর্ভুজকে একটি বহুভুজের রূপ বলা হয়।
চতুর্ভুজ এর বৈশিষ্ট্য
১. একটি চতুর্ভুজের চারটি কোণ থাকে।
২. একটি চতুর্ভুজের মধ্যে চারটি বাহু বিদ্যমান থাকে।
৩. সাধারণত যে কোন একটি চতুর্ভুজকে কমপক্ষে দুইটি ত্রিভুজে ভাগ করা যেতে পারে।
৪. একটি চতুর্ভুজের চারটি কোণ এর সমষ্টি হয় ৩৬০ ডিগ্রি।
৫. সাধারণত অঙ্কন করার ক্ষেত্রে তিনটি কোন বা তিনটি বাহু, দুইটি বাহু বা তিনটি কোণের প্রয়োজন হয়।
৬. একটি চতুর্ভুজের বহি ক্রান্ত থেকে যদি প্রতিটি শীর্ষবিন্দু দূরত্ব পরিমাণ করা হয় তাহলে দূরত্ব পরস্পর সমান হয়।
৭. সাধারণত একটি চতুর্ভুজের অন্তক্রান্ত থেকে যদি প্রতিটি বাহুর দুরত্ব পরিমাপ করা হয় তাহলে লম্ব দূরত্ব পরস্পর সমান হয়।
৮. একটি বাহুর বিপরীত পাশে যদি দুইটি করে ত্রিভুজ আঁকা হয় তাহলে ত্রিভুজ গুলো ব্যবহার করে একটি চতুর্ভুজ পাওয়া যায়।
৯. একটি চতুর্ভুজের যেকোনো দুইটি বাহুকে সমান্তরাল ভাবে অবস্থান করলে একটি ট্রাপিজিয়াম পাওয়া যায় এবং একে ট্রাপিজিয়াম বলে।
১০. কোন একটি চতুর্ভুজের যেকোনো দুটি বাহু যদি সমান্তরাল হয় তাহলে সমান্তরাল বাহনীয় অঙ্কিত চতুর্ভুজকে ট্রাপিজিয়াম বলে।
১১. একটি চতুর্ভুজের প্রতিটি বাহু যদি সমান থাকে এবং সমান্তরাল থাকে এবং বিপরীত কোনগুলো যদি পরস্পর সমান হয় তাহলে তাকে রম্বস বলা হয়।
১২. একটি চতুর্ভূজ এর প্রতিটি কোণের মান যদি সমান হয় তাহলে এবং সেই সাথে প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য যদি সমান হয় তাহলে অঙ্কিত চতুর্ভুজ কে কে বর্গক্ষেত্র বলা হয়।
১৩. যদি কোন চতুর্ভুজের বাহুগুলোকে পরস্পর বিপরীত বাহুর সমান বা পরস্পর সমান হয় তাহলে তাকে সামান্তরিক বলা হয়।
১৪. অঙ্কন করার জন্য চারটি বাহু এবং চারটি কোণ এবং চারটি শীর্ষবিন্দু এবং দুটি কর্ণ নিয়ে চতুর্ভুজটি গঠিত করা হয়।
চতুর্ভুজ এর প্রকারভেদ
চতুর্ভুজের ছেদকের উপর নির্ভর করে সাধারণত একটি চতুর্ভুজকে দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :- ক) সরল চতুর্ভুজ,,,খ) জটিল চতুর্ভুজ,,,
ক) সরল চতুর্ভুজ:-
যে সকল চতুর্ভুজের একটি বাহু এবং অপর একটি বাহুর শীর্ষবিন্দু ব্যতীত অন্যান্য যে বিন্দুগুলো রয়েছে সেগুলো সেভ করে না তাকে সরল চতুর্ভুজ বলা হয়।
- তবে একটি সরল চতুর্ভুজকে পুনরায় দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যতাক্রমে :- ১. উত্তল চতুর্ভুজ,,,২. অবতল চতুর্ভুজ,,,,
১. উত্তল চতুর্ভুজ:-যে সকল চতুর্ভুজের প্রতিটি অন্তঃস্থ কোণের মান হয় 180 ডিগ্রি অপেক্ষার থেকে ছোট এবং যে চতুর্ভুজের কর্ণ দুইটির অভ্যন্তরে অবস্থিত থাকে তাকে উত্তল চতুর্ভুজ বলে।
২. অবতল চতুর্ভুজ:-যে সকল চতুর্ভুজের মধ্যে একটি অন্তস্থ কোণের মান ১৮০° তুলনায় ভরা থাকে এবং ৩৬০ ° এর তুলনায় ছোট থাকে এবং কর্ণ দুইটি তুলনামূলকভাবে একটি চতুর্ভূজের বাইরের দিকে অবস্থিত থাকে তাকে অবতল চতুর্ভুজ বলা হয়।
খ) জটিল চতুর্ভুজ:- যে সকল চতুর্ভুজের একটি বাহু, অপর একটি বাহুল শীর্ষবিন্দুর সাথে ছেদ না করে অন্যান্য বাহু একে অপরের সাথে ছেদ করে তাদেরকে জটিল চতুর্ভুজ বলা হয়।
সাধারণত জটিল চতুর্ভুজের ক্ষেত্রে চতুর্ভুজের দুইটি শুকন এবং দুটি প্রবৃদ্ধ কোণ বিদ্যমান থাকে। তবে সেখানে জটিল চতুর্ভুজের চারটি অন্তঃস্থ কোণের সমষ্টি থাকে ৭২০ ডিগ্রি।
- এছাড়াও চতুর্ভুজকে অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো যথাক্রমে :- ১. আয়তক্ষেত্র,,,,,২. বর্গক্ষেত্র,,,,৩. সামান্তরিক,,,,৪. রম্বস,,,,৫. ট্রাপিজিয়াম,,,,৬. ঘুড়ি,,,,
১. আয়তক্ষেত্র:-যে চতুর্ভুজের বিপরীত দুটি বাহুদ্বয় পরস্পর সমান্তরাল অবস্থান করে এবং সমান থাকে এবং যে চতুর্ভুজের কোণগুলো সমকোণী অবস্থান করে সে চতুর্ভুজকে আয়তক্ষেত্র বলা হয়।
২. বর্গক্ষেত্র:-যে চতুর্ভুজের প্রতিটি বাহুর পরস্পর সমান থাকে এবং সমান্তরাল থাকে কিন্তু চতুর্ভুজের কোনগুলো সমকোণী অবস্থান করে তাকে বর্গক্ষেত্র বলা হয়।
৩. সামান্তরিক:-যে সকল চতুর্ভুজের বিপরীত দুটি বাহু পরস্পর সমান থাকে এবং সমান্তরাল থাকে এবং কোনগুলো সমকোণী অবস্থান করে না অর্থাৎ সমকোণ নয় তাকে সামন্তরিক বলা হয়।
৪. রম্বস:-যে সকল চতুর্ভুজের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান থাকে, তবে চতুর্ভুজের কোনগুলো সমকোণী হিসেবে অবস্থান করে না সেই চতুর্ভুজকে রম্বস বলা হয়।
৫. ট্রাপিজিয়াম চতুর্ভুজের ক্ষেত্রে একজোড়া বিপরীত বাহু সমান্তরালে অবস্থান করে চতুর্ভুজকে ট্রাপিজিয়াম বলা হয়
৬. ঘুড়ি:-যে চতুর্ভুজের মধ্যে ২ জোড়া সন্নিহিত বাহু পরস্পর পাশাপাশিভাবে সমান থাকে তাকে ঘুড়ি বলা হয়।
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জ্যামিতির অন্যতম একটি বিষয় চতুর্ভুজ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জ্যামিতির সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেমন: চতুর্ভুজ কাকে বলে, চতুর্ভুজের বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ সম্পর্কে যে সকল তথ্য বা প্রশ্ন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন।