ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী সমরাস্ত্রের মজুত কমছে ইসরায়েলের, উদ্বেগ বাড়ছে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংকটের মুখে। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন মাত্রা নিয়েছে। সম্প্রতি ইরান থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘অ্যারো’–এর মজুত কমে আসার খবর সামনে আসলেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তা কড়া অস্বীকার করা হয়েছে।
গত কয়েক দিনে ইরানের সামরিক বাহিনী ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একাধিক দফা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে এসব আক্রমণের বেশির ভাগই ইসরায়েলের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আকাশেই ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ইরান তাদের দিকে চার শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বহু ড্রোন ছুড়েছে, যার প্রায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
‘অ্যারো-থ্রি’ নামে পরিচিত ইসরায়েলের দূরপাল্লার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ২৩০০ কিলোমিটার দূরের ক্ষেপণাস্ত্রও আকাশে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। তবে এই সিস্টেমের মজুত দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় ইসরায়েলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে যদি এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইসরায়েলের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। পেন্টাগন এই সংকট সম্পর্কে সচেতন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল শুধু ‘অ্যারো’ নয়, ‘ডেভিডস স্লিং’, ‘আয়রন ডোম’সহ বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড’ ও ‘প্যাট্রিয়ট প্যাক-২’ সিস্টেমের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারও আকাশে হামলা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল আগ থেকেই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র, মজুত ও লঞ্চার স্থাপনাগুলোকে ধ্বংস করার জন্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নিয়েছে। সাম্প্রতিককালে ইরানের বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার খবর পাওয়া গেছে।
মোটের উপর, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই দু’দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা, সরবরাহ ও সঠিক পরিকল্পনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষকে এই সংঘাত থেকে রক্ষা করতে উভয় পক্ষের সজাগ থাকা প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।