
ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের বিস্ফোরণ ও হামলা
গত শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের একাধিক পারমাণবিক এবং সামরিক স্থাপনায় তীব্র হামলা চালিয়েছে। হামলার ফলে তেহরানসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ এবং আগুন লেগেছে, যা দেশজুড়ে দুঃসংবাদ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানেছে, যার মধ্যে ছিল পারমাণবিক স্থাপনাসহ সামরিক ঘাঁটিসমূহ। ইরানের রাজধানী তেহরানের পূর্বাঞ্চলে রেভল্যুশনারি গার্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন দেখা গেছে এবং মধ্যাঞ্চলের ইস্পাহানের নাতানজ শহরে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। নাতানজ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়।
হামলার ফলে তেহরানের আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেসামরিক মানুষেরও মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে যে এই হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কয়েকজন উচ্চপদস্থ পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। তবে ইরানি মিডিয়া বলছে, রেভল্যুশনারি গার্ডসের প্রধান হোসেন সালামিও হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই হামলাকে ‘আগাম প্রতিরোধমূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গত বছরও ইসরায়েল ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, এবং এবারও ইরানকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ইরান বারবার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে বাধ্যবাধকতা না মানার অভিযোগ এনেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে।
হামলার ঠিক আগেই ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ রাউন্ড ওমানে হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যেই এমন একটি শক্তিশালী হামলা চালানো আন্তর্জাতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এভাবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে টানাপোড়েন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও এখন সতর্ক দৃষ্টিতে এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।