বিশ্বআন্তর্জাতিকরাজনীতি

ইরানের নিশানায় কেন ইসরায়েলের হাইফা শহর: কী আছে এই শহরের গুরুত্বে?

ইসরায়েলের হাইফায় ইরানের পাল্টা হামলা: কেন এই শহর ছিল লক্ষ্যবস্তু?

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান বৈরিতা এখন সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রূপ নিয়েছে। গতকাল শনিবার ইরান বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়ে আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দরনগরী হাইফায়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, হামলার সময় শহরজুড়ে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, দেখা গেছে বড় ধরনের আগুনের লেলিহান শিখা।

কী ঘটেছিল হাইফায়?

ওয়াশিংটন পোস্ট, টাইমস অব ইসরায়েল, চ্যানেল ১২ এই সব সংবাদমাধ্যম জানায়, হাইফাসহ আশপাশের অঞ্চলে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা ১০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল হাইফা ও তেল আবিব।

হামলার সময় হাইফার আকাশে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা “আয়রন ডোম” সক্রিয় হলেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁয়ার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শহরের কিছু এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে। তবে হতাহতের বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। বিবিসি প্রথমে পাঁচজন আহত হওয়ার খবর দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়।

হাইফাকে লক্ষ্য করা হয়েছিল কেন?

হাইফা শুধু একটি সাধারণ শহর নয় এটি ইসরায়েলের অন্যতম কৌশলগত ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

এই শহরে রয়েছে:

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর,সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার,গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি,এবং বিভিন্ন রাসায়নিক ও গ্যাস কারখানা।নিউইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলের মোট বাণিজ্যের প্রায় অর্ধেক হাইফা বন্দর থেকেই পরিচালিত হয়। এ ছাড়া এখানে গ্যাস ও জ্বালানি অবকাঠামোর ঘনত্ব ইরানের লক্ষ্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে।

ইরানের বার্তা কী?

বিশ্লেষকরা বলছেন, হাইফার মতো স্পর্শকাতর স্থানে হামলা চালিয়ে ইরান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে তারা কথার জবাব কাজে দিচ্ছে।

তেহরান আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, ইসরায়েল যদি ইরানের বেসামরিক স্থাপনা বা জ্বালানি খাতে হামলা চালায়, তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। আল–জাজিরার মতে, হাইফায় হামলা সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নেরই অংশ।

উত্তেজনা কতদূর গড়াবে?

এই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সরাসরি আঘাত মানে পরিস্থিতি দ্রুত যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। এখন দৃষ্টি ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার দিকে তারা কীভাবে এর জবাব দেয়, তার ওপরই নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্যের আগামী দিনের চিত্র।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button