বিশ্বআন্তর্জাতিক

ইরাকের সেই সাজানো গল্প এবার ইরানেও । মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক দ্বৈরথের নতুন অধ্যায়

মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক দ্বৈরথ: ইরান ও ইসরায়েল নিয়ে যে বাস্তবতা আমরা মিস করছি

বিশ্ব আজকাল মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে নতুন করে চিন্তায় নিমজ্জিত। ইরান ও ইসরায়েলের পারমাণবিক ক্ষমতা নিয়ে চলমান আলোচনা অনেক সময় একটা দ্বৈত মানদণ্ডের চিত্র ফুটিয়ে তোলে, যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না।

ইরান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নিয়ন্ত্রণে থাকা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সদস্য। তারা নিয়মিত এই সংস্থাকে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের অনুমতি দেয় এবং তাদের কর্মসূচি নজরদারির মধ্যে থাকে। তবু ইরানের বিরুদ্ধে নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, কারণ তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিধর দেশ ইসরায়েল এই চুক্তির সদস্য নয়। তারা কখনো আইএইএকে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের সুযোগ দেয়নি। বিশ্ববাসীর ধারণা, ইসরায়েলের হাতে রয়েছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র, কিন্তু তার জন্য তাদের কোনো জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয় না।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার উপেক্ষা করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে গাজা ও পশ্চিম তীরে, বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অভিযান চালিয়ে আসছে। এই অবস্থা ও দ্বৈত মানদণ্ডের কারণে বিশ্বে ন্যায্যতার প্রশ্ন উঠেছে।

এখন সময় এসেছে সত্যিকারের বাস্তবতাগুলো মুখোমুখি হওয়ার। ইসরায়েলকে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের জন্যও আন্তর্জাতিক নিয়মের আওতায় আনা উচিত, ঠিক যেমনটি ইরানের ক্ষেত্রেই হয়। যদি না করা হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকট আরও জটিল হয়ে উঠবে এবং নতুন সংকটের জন্ম হবে।

বিশ্বের নৈতিক দায়িত্বশীল সবাইকে এই দ্বৈরথের বিরূপ প্রভাব বুঝে সমাধানের পথে এগিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র একপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরোপ করে অন্য পক্ষকে মাফ করে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলাদেশিসহ সাধারণ মানুষ যেন এ ধরনের তথ্য বুঝতে পারে এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিতে পারে, সেটাই আমাদের সময়ের দাবি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button