মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে :-আসসালামু আলাইকুম। আমাদের ওয়েবসাইটের উক্ত পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা  —

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজন কে আবিষ্কার করেন, মিয়োসিস কোষ বিভাজন এর গুরুত্ব, মিয়োসিস কোষ বিভাজনের বৈশিষ্ট্য কোনটি, মিয়োসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতি, মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া,,, ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

বংশপরম্পরায় বা কোষের বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোষ দুটি পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়। মিয়োসিস এবং মাইটোসিস এই দুইটি  প্রক্রিয়ায়  বিভাজনের মধ্যে মিয়োসিস একটি অন্যতম প্রক্রিয়া। 

এজন্য কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়া বা বিভাজন সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে মাইটোসিস ও মিয়োসিস এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া এবং এ সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য। 

তবে মাইটোসিস এর তুলনায় মিয়োসিস হচ্ছে অন্যতম প্রক্রিয়া কারণ এ প্রক্রিয়ায় একটি কোষ বিভাজনে একটি কোষ  থেকে  অর্থাৎ একটি জনন মাতৃকোষ থেকে চারটি অবোত্য কোষের উৎপন্ন হয়। 

অতএব কোষ বিভাজনের ক্ষেত্রে মাইটোসিসের তুলনায় মিয়োসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম প্রক্রিয়া। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে

যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস পরপর দুইবার এবং ক্রোমোজোম মাত্র একবার বিভাজিত হয়ে মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের অর্ধেক সংখ্যক ক্রমশুম যুক্ত চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলা হয়। 

যে কোষ বিভাজনে একটি চক্রে নিউক্লিয়াস দুইবার বিভাজিত হয় সে কুষ্ চক্র বা সে বিভাজনকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলা হয়। 

অর্থাৎ যে বিভাজনে মাতৃভূষির যে দুইটি নিউক্লিয়াস পাওয়া যায়,  সেক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারে তার প্রতিটি আবার দুইটি গুটি বিভাজিত হয় সে কোষ বিভাজন কে মিয়োসিস কোচ বিভাজন বলা হয়। সাধারণত মিয়োসিস কোষ বিভাজনে একটি মাতৃভুজ থেকে চারটি অপত্য কোষ উৎপন্ন হয়। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কে আবিষ্কার করেন

বেনেডিন ( E.V.  Beneden) এবং হাউসার ( Houser) কৃমির গ্যামেটে হ্যাপ্লয়েড সংখ্যক ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন  → ১৮৮৩ সালে।

স্ট্রাসবুর্গার ( Strasburger)  ১৮৮৮ সনে পুষ্পক উদ্ভিদের জনন মাতৃকোষের ক্রোমোজমূলক বিভাজন লক্ষ্য করেন। ১৯০৫ সনে ফার্মার ( J.B. Farmer)  ও মুর ( J.E. Moore) 

সর্বপ্রথম হ্রাসমূলক  বিভাজন কে Meiosis (মিয়োসিস বা মিওসিস) বলেন।Boveri (বোভেরী) সর্বপ্রথম গোল কৃমির  ( Round Worm) জননাঙ্গে মিয়োসিস কোষ বিভাজন অধ্যক্ষ করেন। 

এজন্য উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মিউসিকে উপস্থাপন করেন তাই সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি অর্থাৎ বেনেডিন ( E.V.  Beneden)

এবং হাউসার ( Houser) সর্বপ্রথম মিয়োসিস কোষ বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা বা গবেষণা করেন তাই তাদেরকে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের আবিষ্কারক বলা হয়। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন এর গুরুত্ব

ক্রোমোজোম বা জেনেটিক বস্তুরসমতা রক্ষা করা ছাড়াও জিনগত বৈচিত্র বজায় রাখা মিয়োসিসের একই রকম গুরুত্বপূর্ণ একটি অবদান। 

যৌন জনন কোরে এমন সকল জীবে মিয়োসিসের মাধ্যমে জিনের পূর্ণবিন্যাস হয়ে জ্বীনগত বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে থাকে। যে কোন প্রজাতির টিকে থাকা বা না থাকা মূলত নির্ভর করে তার সদস্য জীবদের মধ্যে কতটা বৈচিত্র্য আছে, তার উপর। 

পরিবেশ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। সেই সব প্রজাতি ঠিকই টিকে থাকে। যাদের অন্তত কিছু সদস্যের মধ্যে সেই পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। 

যদি কোন প্রজাতির জীবদের মধ্যে বৈচিত্র কম থাকে তাহলে নতুন কোনো পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর মতো বৈশিষ্ট্য কারোর মধ্যে থাকার সম্ভাবনাও হবে কম। 

ফলে হয়তো পুরো প্রজাতিটাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।  আর যদিও কোন প্রজাতির জীবদের মধ্যে বৈচিত্র বেশি থাকে তাহলে নতুন কোনো পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর মতো বৈশিষ্ট্য কারো না কারো মধ্যে থাকার সম্ভাবনাও হবে বেশি। 

তখন যদি বড় কোন বিপদ আসে তবুও তার অন্তত কিছু সদস্য বেঁচে যাবে। এজন্য মিয়োসিস কোন জীবের জিনগত বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে প্রজাতির টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। 

এজন্য জীব  টিকে থাকার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেয় বলে মিয়োসিস বিভাজন বিভর্তিত হয়ে জীবজগতে নিজের স্থান দখল করে নিয়েছে। তাই কোষ বিভাজনের মিউজিক এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে
মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের বৈশিষ্ট্য কোনটি

১. ডিপ্লয়েড জীবে মায়োসিস সাধারণত জনন মাতৃভূষি হয়ে থাকে। 

২. এ ধরনের কোষ বিভাজনের নিউক্লিয়াস দুইবার বিভক্ত হয় কিন্তু ক্রোমোজোম মাত্র একবার বিভক্ত হয়।  ফলে নতুন সুইচড ও কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক সংখ্যক হয়। 

৩. একটি মাতৃকোষ (2n) হতে ৪টি হ্যাপ্লয়েড  (n) অপত্য কোষের সৃষ্টি হয়। 

৪. কাজ না সৃষ্টি ও ক্রসিং হবার হয় বলে হোমোলোগাস ক্রোমোজোমের  মধ্যে জিন বিনিময় ঘটে। 

৫. হোমোলোগাস ক্রোমোজোম জোড়া বেদে বাইভেলেন্ট  সৃষ্টি করে। 

৬. প্রোফেজ-১  দীর্ঘস্থায়ী বিদায় এটি পাঁচটি উপ পর্যায় বিভক্ত করা চলে। 

৭. ক্রোমোজোমের স্বতন্ত্র বিন্যাস ঘটে। 

৮. ক্রসিং ওভার ও ক্রোমোজোমের স্বতন্ত্র বিন্যাস ঘটে বলে এ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন কোষ গুলো কখনো মাতৃকোষের সমকোণ সম্পন্ন হয় না। 

৯. মিয়োসিস শেষে দৃষ্ট নতুন কোষে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব ঘটে। বংশগতির  বিশেষত প্রকরণ সৃষ্টিতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিয়োসিস হলো জীব  সমূহের মধ্যে বৈচিত্র সৃষ্টির একটি প্রধান উপায়। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতি

মিয়োসিস প্রধানত জীবের জনন কোষ বা গ্যামেটের সৃষ্টির সময় জনন মাতৃ কোষে ঘটে। সপুষ্পক উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকের মধ্যে

এবং উন্নত প্রাণীদের শুক্রাশ হয়ে ও ডিম্বাশয়ের মধ্যে মিয়োসিস ঘটে। ছত্রাক, শৈবাল ও মস জাতীয় হ্যাভলয়েড উদ্ভিদের ডিপ্লয়েড মাতৃকোষ থেকে উৎপন্ন হয়, তখন যায় ঘটে এ ধরনের বিভাজন ঘটে। 

মিয়োচেস বিভাজনের সময় একটি কোষ পরপর দুইবার বিবাজিত হয়।  প্রথম বিভাজনকে প্রথম মিউটিক বিভাজন বা মিয়োসিস -1 এবং দ্বিতীয় বিভাজনকে দ্বিতীয় মিউটিক বিভাজন বা মিয়োসিস -2 বলা হয়। 

প্রথম বিভাজনের সময় অপত্য খুশির ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেকের পরিণত হয়।। দ্বিতীয় বিভাজন টি মাইটোসিসের অনুরূপ, অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না। 

যেমন : ব্যাঙের একটি প্রজাতি  Xenopus tropicalis – এর সম্পূর্ণ ক্রোমোজোম সেট দ্বিগুণ হয়ে  Xenopus laevis প্রজাতির উৎপত্তি ঘটেছে। প্লান্টটি রাজ্যের বিভিন্ন সদস্য যেমন আলু দেহা খুশি অর্থাৎ জনন কোষের নয়, এই প্রক্রিয়া একই স্বাভাবিক ঘটনা। 

অনেক সময় আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করার জন্য উদ্ভিদের এই জাত বেছে নেই, এমন কি সে রকম যাক পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করি, কারণ তা আকারে তুলনামূলকভাবে বড় হয়। এসব জাত তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে অধিকতর সহায়ক। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া

মিয়োসিস একটি অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় একটি কোষ  পর পর দুইবার বিভক্ত হয়। কোষ, নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম এর বিভক্তির উপর ভিত্তি করে মায়োসিস প্রক্রিয়াকে দুইটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করা হয়। 

যথা :-

ক) মায়োসিস -১

খ) মায়োসিস -২

মায়োসিস -১- এ ক্রমোসোম সংখ্যা অর্ধেকে আনীত হয়, এজন্য একে রিডাকশনাল বা হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয়।  মায়োসিস ২ এ ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে। 

কেননা এ বিভাজন মূলত একটি মাইটোটিক বিভাজন প্রক্রিয়া। এজন্য একে ইকুয়েশনাল বা সমীকরণিক বিভাজন ও বলা হয়। 

প্রত্যেক পর্বকে প্রোফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ, টেলোফেজ – এ চারটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়। মায়োসিস প্রক্রিয়ায় -DNA  – এর দিত্ব হয় প্রোফেজ -১ এর পূর্বে। 

পলিপ্লয়েড উদ্ভিদে মায়োসিস অত্যন্ত জটিল বলে এখানে ডিপ্লয়েড ( 2n = 2x) উদ্ভিদের মায়োসিস প্রক্রিয়ার গঠন বর্ণনা করা হলো :-

মিয়োসিস প্রধানত ৪ প্রকার। সেগুলো হলো:-

→ ইন্টারফেজ,,

→ মিয়োসিস-১

→ ইন্টারকাইনেসিস

→মিয়োসিস – ২

✦ মিয়োসিস-১ আবার ৪ প্রকার।

সেগুলো হলো:-

প্রোফেজ-১,,

→ মেটাফেজ-১,,

→ অ্যানাফেজ -১,,

→ টেলোফেজ- ১,,

মিয়োসিস-২  আবার ৪ প্রকার।

সেগুলো হলো:-

→ প্রোফেজ-২,,

→ মেটাফেজ-২,,

→ অ্যানাফেজ -২,,

→ টেলোফেজ- ২,, 

প্রোফেজ-১,,  আবার ৫ প্রকার। সেগুলো হলো:-

১. লেপ্টোটিন,,,

২. জাইগোটিন,,,

৩. প্যাকাইটিন,,,

৪. ডিপ্লোটিন,,,

৫. ডায়াকাইনেসিস,,,

আমাদের উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে মিউসিক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং মিয়োসিস কাকে বলে, মিয়োসিসের প্রক্রিয়া, মিয়োসিসের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করার মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি। 

আশা করি মিয়োসিস সম্পর্কিত যে সকল তথ্য জানতে চান অথবা জানতে চেয়েছেন তা আমাদের উক্ত পুত্রের মাধ্যমে যথাযথভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Leave a Comment