শিক্ষা

ভূমিকম্প কি? ভূমিকম্প কেন হয় ও করণীয়

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আমাদের ওয়েবসাইটের উক্ত পোস্টে আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা — 

👉ভূমিকম্প কি

👉ভূমিকম্পের কারণ কী?

👉ভূমিকম্পের সময় করণীয়

👉ভূমিকম্প মাপার যন্ত্রের নাম কি,,, ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য ও প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে। তবে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাবাসী জানা থাকলে বা জানা গেলেও ভূমিকম্প সম্পর্কে পূর্বাবাস  জানা যায় না। এজন্য ভূমিকম্প প্রতিরোধে এবং ভূমিকম্পের সময় যে যে কাজগুলো করা প্রয়োজন এবং ভূমিকম্প কাকে বলে ইত্যাদি ভূমিকম্প সম্পর্কে যথাযথভাবে সকলের অবগত হওয়া প্রয়োজন। 

ভূমিকম্প কি

ভূমিকম্প,, যা হলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এটির কারণে সাধারণত প্রাকৃতিক ভূমির কম্পন হয়ে থাকে। বউ অভ্যন্তরে যখন বিভিন্ন ধরনের শিলা একটি সঙ্গে ও অন্যটি উপরে উঠে আসতে থাকে তখন ভূমিকম্প হয়। 

এছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু অংশ যদি হঠাৎ করে পরিবর্তন শুরু হয় অথবা কম্পন কিংবা আন্দোলন শুরু হয় তাহলে তা হল ভূমিকম্প। 

সারা পৃথিবীতে বছরে বিভিন্ন সময়ে ঘরে প্রায় ৬ হাজার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। এই ভূমিকম্প গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃদু হয়ে থাকে তাই অনেকের টের পায় না। তবে তিন ধরনের ভূমিকম্পর মধ্যে যখন প্রচন্ড, মাঝারি এবং মৃদু এই তিন আকারের ভূমিকম্প হয় তখন অগভীর, মধ্যবর্তী এবং গভীর ভূমিকম্প নামে পরিচিতি লাভ করে। 

 ভূমিকম্পের কারণ কী

সাধারণত ভূমিকম্পের কারণসমূহের মধ্যে উৎপত্তি অনুযায়ী তিনটি কারণ উল্লেখযোগ্য। সেগুলো যথাক্রমে :- 

১. ভূপৃষ্ঠজনিতসম্পাদনা,,,সাধারণত ভূ-অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে তখন ভূমিকম্প হয়ে থাকে। এছাড়াও পৃথিবীপৃষ্ঠের একটি নির্দিষ্ট অংশবিশেষের হঠাৎ যদি আন্দোলন শুরু হয় অথবা অবস্থার পরিবর্তন হয় তাহলে তা হলো ভূমিকম্প। 

সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭০ কিলোমিটারের মধ্যেই অগভীর, এছাড়াও ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে যদি ভূমিকম্প হয় তাহলে তা মধ্যবর্তী এবং যদি ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হয় তাহলে তাকে গভীর ভূমিকম্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 

২. আগ্নেয়গিরিজনিতসম্পাদনা,,,,,কখনো এমন হয় যে ও মেয়েগিরির গলিত লাভা উৎখিপ্ত হয় অথবা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প তৈরি হয়। 

৩.  শিলাচ্যুতি বা শিলাতে ভাজের সৃষ্টিসম্পাদনা,,সাধারণত পৃথিবীর অধিকাংশ স্থানে শিলা বা শিলাচ্য হওয়ার কারণে ভূত্বকের কোন একটি অংশে নিচে বসে যায় অথবা উপরে উঠে আসে তখন সমতলী প্রবল ঘর ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়ে এক ধরনের ভূমিকম্প তৈরি হয়। 

  • ভূপাতসম্পাদনা:-কখনো কখনো পাহাড় কিংবা পর্বতের উপরে থাকা বৃহৎ আকার শিলাখণ্ড সমূহ ভূ-ত্বকের উপর থেকে নিচে ক্রমান্বয়ে পড়তে থাকে এবং ভূমিকম্প হয়। সে ক্ষেত্রে সাধারণ যে সকল পর্বত রয়েছে কিংবা যে সকল পর্বতে ভূমিকম্প হয় তা খুব দূরে না হলেও পর্বতের নিকট অংশে হয়ে থাকে।
  • তাপ বিকিরণসম্পাদনা:-ভূত্বকে ক্রমান্বয়ে তাপ বিকিরণ করার ফলে সংকুচিত হয়ে বাঁচ বা ফাটলের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।
  • ভূগর্ভস্থ বাষ্পসম্পাদনা:-বিভিন্ন কারণে ভূগর্ভে বাস পেয়ে সৃষ্টি হয়ে থাকে। তখন উক্ত বাসবো ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার মাধ্যমে বোতলের নিম্নভাগে এক ধরনের ধাক্কা সৃষ্টি করে। তখন প্রচন্ড ভূকম্পন অনুভূত হয় এবং ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
  • হিমবাহের প্রভাবেসম্পাদনা:-অনেক সময় প্রকাণ্ড হিমবাহ সমূহ পর্বত গাত্র হতে ক্রমান্বয়ে নিচে পড়ে। সেই সময় ভূতো কেঁপে উঠে এবং ভূমিকম্পের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।

 ভূমিকম্পের সময় করণীয়

ভূমিকম্পের সময় যে কাজগুলো করণীয় সেগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো :-

১. ভূমিকম্পের সময় যদি কোন উঁচু ভবন নিয়ে থাকা হয় তাহলে সেখান থেকে দ্রুত নামতে হবে কিন্তু লিফট ব্যবহার করা যাবে না। 

২. বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সংযোগ এবং গ্যাস থেকে দূরে অবস্থান নিতে হবে। 

৩. দ্রুত নাম আর সময় কোন ভবন থেকে কখনো লাফ দেওয়া যাবে না। 

৪. ভূমিকম্প হচ্ছে এরকম টের পাওয়ার সাথে সাথে বা খবর পর সঙ্গে সঙ্গেই খোলা উন্মুক্ত বা পাকস্থানে আশ্রয় নিন।

৫. দরকারি মোবাইল নম্বর সমূহে আগাম বার্তা হিসেবে এবং মুঠোফোনে ফায়ার সার্ভিস এর প্রয়োজনীয় আগাম সর্তকতা হিসেবে রেখে দিতে হবে। কেননা বিপদের সময় সেগুলো কাজে লাগে। 

৬. একবার যদি ভূমিকম্প হয় তাহলে তারপর পরে আরেকবার ছোট আকারের ভূমিকম্প হতে পারে, তাকে ”আফটার শক” বলা হয়।  নিজেকে বিপদমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে অন্তত এক ঘণ্টা সময় নিতে হবে। 

৭. ভূমিকম্প হওয়ার সময় যদি গাড়িতে থাকেন তাহলে অবশ্যই খোলা জায়গায় গাড়িটি থামিয়ে রাখুন এবং গাড়িতেই থাকুন। 

৮ . ধৈর্য ধরে হতবিহ্বল না করে পরিস্থিতি অনুযায়ী মোকাবেলা করুন।  

৯. বহুতল ভবনে থাকলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সকলে একসঙ্গে না থেকে ভাগবাক হয়ে আলাদাভাবে আশ্রয় নিন। 

১০. যদি কোন উঁচু ভবনে থাকেন এবং বের হতে না পারেন তাহলে জানালা অথবা দেয়ালের পাশে কিংবা সব তো কোনদিন বা টেবিলের নিচে অবস্থান নিয়ে থাকুন।

ভূমিকম্প কি
ভূমিকম্প কি

ভূমিকম্প মাপার যন্ত্রের নাম কি

ভূমিকম্পের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ অথবা ভূমিকম্পের মাত্রা সম্পর্কে জানার জন্য ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র রয়েছে। পুরনো যুগের ভূমিকম্প মাপার জন্য যে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয় হয় সেটি ইংরেজিতে হলো : সিসমোগ্রাফ”””

এছাড়াও অপরদিকে “”সিসমোমিটার “” নামে বর্তমান সময়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিমাপ এবং বিশ্লেষণের সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ভূমিকম্প মাপক যন্ত্র রয়েছে। 

 উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা ভূমিকম্প সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং প্রশ্নের উত্তর আলোচনা করার মাধ্যমে আপনাদেরকে জানিয়েছি। 

আশা করি,,  ভূমিকম্প রিলেটের যে সকল প্রশ্নের উত্তর বা তথ্য সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তা যথাযথভাবে জানার মাধ্যমে উপকৃত হতে পেরেছেন। 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button