পরিমাপের একক সমূহ

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, শিক্ষা রিলেটেড গাণিতিক যুক্তিভিত্তিক পরিমাপ সম্পর্কিত উক্ত পুষ্টি আপনাদেরকে স্বাগতম। আমাদের উক্ত পোস্টে আমরা আপনাদেরকে— 

👉পরিমাপের একক সমূহ

👉 দৈর্ঘ্য পরিমাপের পদ্ধতি ও একক

👉বস্ত্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপের দেশীয় পদ্ধতি

👉তরলের আয়তন পরিমাপ পদ্ধতি

👉ক্ষেত্রফল পরিমাপের সূত্র সমূহ,,, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার মাধ্যমে জানাচ্ছি। 

জ্যামিতি সহ পদার্থবিজ্ঞানের বাসায় বিভিন্ন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বা অন্যান্য যেকোনো আয়তন বৃদ্ধির পরিমাপ করার ক্ষেত্রে পরিমাপের একক ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা কোন ক্ষেত্রে কি কি পরিমাপ করার জন্য কোন একক গুলো ব্যবহার করবে তা সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

এজন্য উক্ত পোষ্টের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিমাপক তথ্য এবং পরিমাপের একক সম্পর্কে জানার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতে পারবে। 

পরিমাপের একক সমূহ

পরিমাপের একক সাধারণত এসআই এককে প্রকাশ করা হয়।  দৈর্ঘ্য পরিমাপের আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড একক হলো মিটার। এজন্য দৈর্ঘ্য কে মিটার এককে প্রকাশ করা হয়। 

তবে পরিমাপের অন্যান্য একক সমূহ হলো:-

১. দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক → মিটার,,,

২. ভর পরিমাপের একক → কিলোগ্রাম। 

৩. সময় পরিমাপের একক হলো→ সেকেন্ড। 

৪. তাপমাত্রা পরিমাপের একক হলো →  কেলভিন। 

৫. ওজন পরিমাপের একক হলো →  গ্রাম। 

৬. তরল পদার্থ বা আয়তন পরিমাপের একক হলো →  লিটার। 

দৈর্ঘ্য পরিমাপের পদ্ধতি ও একক

দৈর্ঘ্য পরিমাপের আদর্শ পদ্ধতি হলো মিটার একক পদ্ধতি। সাধারণভাবে পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দ্রাঘিমা বরাবর অনুযায়ী বিষুবরেখা পর্যন্ত যে দৈর্ঘ্যে রয়েছে তা হলো দৈর্ঘ্যের কোটি ভাগের এক ভাগকে  ১ মিটার হিসেবে গণ্য করা হয়। 

কিন্তু এক্ষেত্রে দৈর্ঘ্য মাপ সুবিধাজনক না থাকার কারণে পরবর্তী সময়ে পেজের মিউজিয়ামে রক্ষিত ১ খন্ড প্লাটিনাম রডের দৈর্ঘ্যকে ১ মিটার হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তার স্বীকৃত পায়। এভাবে দৈর্ঘ্য কি একক হিসেবে রয়েছে ক্ষেত্রে মাপক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 

তবে দৈর্ঘ্যের একক মিটার থেকে শুরু করে মেট্রিক পদ্ধতির নামকরণ পরবর্তীতে করা হয়েছে। এছাড়াও দৈর্ঘ্যকে পরিমাপের জন্য অর্থাৎ পরিমাপ যদি কম হয় সে ক্ষেত্রে সেন্টিমিটার আকারে প্রকাশ করা যায়। তবে দৈর্ঘ্যের পরিমাপ বেশি যদি হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে কিলোমিটার আকারে প্রকাশ করা যায়। 

দৈর্ঘ্যের একক মিটার থেকে মেট্রিক পদ্ধতির নামকরণ করা হয়। দৈর্ঘ্যের পরিমাণ কম হলে সেন্টিমিটারের প্রকাশ করা হয় এবং দৈর্ঘ্যের পরিমাণ বেশি হলে কিলোমিটারে প্রকাশ করা হয়। যেমন,

নিম্নে দৈর্ঘ্য পরিমাপের পদ্ধতি গুলো তুলে ধরা হলো :-

১. ১০ মিটার = ১ ডেকামিটার,,,,

২. ১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার,,,,

৩. ১০ হেক্টোমিটার = ১ কিলোমিটার,,,,

৪. ১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার,,,,

৫. ১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার,,,,

৬. ১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার,,,,

৭. ১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার,,,,

৮. ১০০ সেন্টিমিটার = ১ মিটার,,,,,,

৯. ১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি (প্রায়),,,,

১৯. ১ কিলোমিটার = ০.৬২ মাইল (প্রায়),,,,

২০. ১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি.,,,,

২১. ১ মাইল = ১.৬০ কিলোমিটার,,,,

২২. ১ নটিক্যাল মাইল = ১৮৫৩.১৮ মিটার বা  ১.৮৫৩ কিলোমিটার,,,,

২৩. ২০০ নটিক্যাল মাইল = ৩৭০ কিলোমিটার (প্রায়),,,,

বস্ত্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপের দেশীয় পদ্ধতি

বস্ত্রের দৈর্ঘ্য পরিমাপের ক্ষেত্রে দেশীয় পদ্ধতি গুলো নিয়ম নিয়ে তুলে ধরা হলো :- 

১. ৩ যবোদার = ১ আঙ্গুলী,,,,

২. ৩ আঙ্গুলী  = ১ গিরা,,,,

৩. ৩ গিরা = ১ হাত,,,,

৪. ১৬ গিরা = ১ গজ,,,,

৫. ১৮ ইঞ্চি = ১ হাত,,,,

৬. ৩৬ ইঞ্চি = ১ গজ,,,,

৭. ২ হাত = ১ গজ,,,,

৮. ২০ গজ = ১ থান,,,,

তরলের আয়তন পরিমাপ পদ্ধতি

তরলের আয়তন পরিমাপের পদ্ধতি নিম্নে তুলে ধরা হলো :-

সাধারণভাবে তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একটি একক হল লিটার। এছাড়াও এটা মেট্রিক পদ্ধতির একক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেকোনো তরল পদার্থ যতটুকু পরিমাণ জায়গা দখল করে আছে তা হল ওই পদার্থের আয়তন।

এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আয়তনের যে সকল ঘনবস্তু রয়েছে সেগুলোর আকৃতি মাপার বা পরিমাপ করার জন্য তরল পদার্থের মাপক হিসেবে লেটার পদ্ধতিতে তা মাপা হয়।

সাধারণভাবে কম আয়তনের যে সকল তরল পদার্থ রয়েছে সেগুলো মাপার ক্ষেত্রে লিটার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ওদের পরিমাণ বা বেশি আয়তনের যে সকল তরল পদার্থ রয়েছে সেগুলো পরিমাপের জন্য কিলোমিটার একক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

তরল পদার্থ মাপনের আরো কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলো যথাক্রমে :-

→  ১০ মিলিলিটার = ১ সেন্টিলিটার,,,,,

→ ১০ সেন্টিলিটার = ১ ডেসিলিটার,,,,

→ ১০ ডেসিলিটার  = ১ লিটার,,,,

→ ১০০০ লিটার = ১ কিলোলিটার,,

→ ১ ঘনফুট = ২৮৬৭ লিটার (প্রায়),,,

→ ১ গ্যালন = ৪.৫৫ লিটার,,,

→ ১ কিউসেক = ২৮.৩১৭ লিটার,,,

→ ১০০ সেন্টিলিটার = ১ লিটার,,,,

→ ১০ লিটার = ১ ডেকালিটার,,,

→ ১০ ডেকালিটার = ১ হেক্টোলিটার,,,,,

→ ১০ হেক্টোলিটার = ১ কিলোলিটার,,,,

→ ১ ব্যারেল = ১৫৯ লিটার,,,,

পরিমাপের একক সমূহ
পরিমাপের একক সমূহ

ক্ষেত্রফল পরিমাপের সূত্র সমূহ

ক্ষেত্রফল পরিমাপের সূত্র সমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলো :-

১. একটি আয়তাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো :→ (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ) বর্গ একক,,,, 

২. একটি বর্গাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্নয়ের  সূত্র হলো :-→ (বাহু)² বর্গ একক,,,,

৩. একটি ত্রিভূজকারক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো:-   → 1/2 (ভূমি x উচ্চতা) একক,,,,

৪. একটি সামন্তরিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো :-→  (ভূমি x উচ্চতা) বর্গ একক

৫. একটি আয়তকার ক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হলো :-→ ২ (দৈর্ঘ্য + প্রস্থ) একক

৫. একটি ঘনকের সমগ্র তলের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো:-→  ৬ x (দৈর্ঘ্য)² বর্গ একক

৬. একটি আয়তকার ঘনবস্তুর আয়তন নির্ণয়ের সূত্র হলো :-→  (দৈর্ঘ্য x প্রস্থ xউচ্চতা) ঘন একক

৭. একটি ঘনকের আয়তন নির্ণয়ের সূত্র হলো :-→ (দৈর্ঘ্য)³ ঘন একক

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে দৈর্ঘ্য পরিমাপের এককসহ অন্যান্য যেকোন পরিমাপের একক সমূহের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করার মাধ্যমে জানিয়েছি। 

আশা করি,,  আমাদের পোস্টে পড়ার মাধ্যমে আপনারা পরিমাপ সম্পর্কে অথবা পরিমাপের রিলেটেড যে কোন তথ্য এবং দৈর্ঘ্য পরিমাপ সম্পর্কে যে সকল একক সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তা যথা ভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হতে পারবেন। 

Leave a Comment